স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর কাফরুলে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। পুলিশের দাবি সে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণসহ ৩০টি মামলার রয়েছে। এদিকে মোটরসাইকেল ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে এক পুলিশ সদস্যকে চাপা দিয়ে ওই পুলিশে সদস্যের পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে দেয়। এ সময় পুলিশ গুলি চালিয়ে পাঁচ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে। পুরনো ঢাকার জুরাইনে গ্যাসের আগুনে একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ হয়েছে। অন্যদিকে চেতনানাশক ওষুধসহ মলম পার্টির ৬ সদস্যকে কারাদ- দিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া যাত্রাবাড়ীতে ২২ হাজার ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। সোমবার পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, রবিবার মধ্যরাতে মিরপুর ১৩ নম্বর সেকশনের কাছে আলী হোসেন রোডের বাইশটেক এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আব্দুস সালাম (২৬) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এ সময় তার স্ত্রী রুবিকে আটক করা হয়েছে। নিহত আব্দুস সালামের বাবার নাম ইসমাইল শেখ। গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে। তিনি ভাসানটেক বস্তিতে সপরিবারের থাকতেন। কাফরুল জোনের পুলিশের সহকারী কমিশনার জাকির হোসেন জানান, সালাম একটি ডাকাত দলের সর্দার। সোমবার রাত ১টার দিকে কাফরুল থানাধীন বাইশটেক এলাকায় আব্দুস সালাম দলের ক্যাডারদের নিয়ে ডাকাতি পরিকল্পনা করছিলেন। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তখন তারা পুলিশ লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে যায়। পরে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে আব্দুল সালামের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখে। তার লাশের পাশ থেকে দুটি পিস্তল ও কিছু গুলিও উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে সালামের স্ত্রী রুবিকে। সহকারী কমিশনার জাকির হোসেন জানান, আব্দুস সালাম কাফরুল ও ভাসানটেক এলাকার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি ও ধর্ষণসহ ৩০টি মামলা রয়েছে।
ছিনতাইকারীদের গাড়িচাপায় পুলিশ কনস্টেবল আহত, পাঁচ ছিনতাইকারী গ্রেফতার ॥ রাজধানীর ধানম-ি থেকে মোটরসাইকেল ছিনতাই করে উত্তরার দিকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বনানী থানা পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। এ সময় ছিনতাইকারীদের বেপরোয়া চালানো পিকআপের চাপায় বনানী থানার কনস্টেবল মোহাম্মদ আব্বাসের (৪০) পাঁজরের হাড় ভেঙে যায়। সোমবার গভীর রাতে পুলিশ সদস্যকে আহত করে পালিয়ে যাবার সময় পুলিশ ছিনতাইকারীদের ধাওয়া করে। পরে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় এক ছিনতাইকারীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে পুলিশ একই চক্রের আরও চার সদস্যকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত চাপাতি। গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, রবিবার রাত আড়াইটার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ধানম-ি থেকে ছিনতাইকারীরা উত্তরার দিকে যাচ্ছে, এ তথ্যের ভিত্তিতে রাত সোয়া তিনটায় মোটরসাইকেলটি বনানী নেভি সদর দফতরের সামনের সড়কে এলে পুলিশ সেখানে ব্যারিকেড দিয়ে দুর্বৃত্তদের বাঁধা দেয়। পরে ছিনতাইকারীরা ছিনতাইকৃত মোটরসাইকেল ও তার সহযোগীদের বহনকারী পিকআপ ভ্যানটি পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে পুলিশ কনস্টেবল আব্বাসকে চাপা দেয়।
একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ ॥ রবিবার রাত দেড়টার দিকে জুরাইনে গ্যাসের আগুনে একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এরা হচ্ছে, দম্পতি খোরশেদ আলম (৪০), জহুরা বেগম (৩০) এবং তাদের ছয় বছরের ছেলে রিফাত হোসেন। বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানান, শিশুটির শরীরের ছয় শতাংশ, তার বাবার ২৮ শতাংশ পুড়ে গেছে।
চেতনানাশক ওষুধসহ মলম পার্টির ৬ সদস্যকে কারাদ- ॥ সোমবার রাতভর মগবাজার মোড়ে অভিযান চালিয়ে মলম পার্টির ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাদের কারাদ- ডিবি ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর মধ্যে আসামি রহুল ও রাজিব ২ বছর, জুয়েল, লিটন ও সাগরকে ১ বছর এবং হালিমের ৬ মাসের কারাদ- হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২০টি এটিভান (২ এমজি), ৫টি ইপিট্রা (২ এমজি), ৩টি ডরমিকাম (৭.৫ এমজি), ১০টি মেলাম (৭ এমজি) উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ভোরে রাজধানীর মগবাজার মোড় থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মহরম আলী জানান, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ জনগণকে চেতনানাশক ওষুধ খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে তাদের অজ্ঞান করে নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে থাকে। পরে তারা বিভিন্ন জিনিসপত্র ছিনিয়ে পালিয়ে যায়। মহানগর পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন।
যাত্রাবাড়ীতে ২২ হাজার পিস ইয়াবাসহ দুইজন গ্রেফতার ॥ রবিবার গভীর রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ২২ হাজার ইয়াবাসহ মোঃ শাহ আপেল ইসলাম ও তার সহযোগী মোঃ শাহাদাত হোসেন নামে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত আপেলের বাড়ি রংপুর জেলার পীরগঞ্জে।