ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিভিন্ন সংস্থার কাছে ॥ চসিক পাবে ৩শ’ কোটি

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৩ মে ২০১৫

বিভিন্ন সংস্থার কাছে ॥ চসিক পাবে ৩শ’ কোটি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা ও সফলতা আনতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) রাজস্ব সার্কেল চারটি থেকে বাড়িয়ে আটটিতে উন্নীত করার পরও কাক্সিক্ষত ফল আসেনি। সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থার কাছে বকেয়া পড়ে আছে অন্তত ৩শ’ কোটি টাকার রাজস্ব। ঠিকমতো রাজস্ব আদায় হলে তা দিয়েই কাক্সিক্ষত উন্নয়ন সম্ভব বলে মনে করেন কর্পোরেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অদক্ষতা রয়েছে বলেই প্রতীয়মান। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী মালিকানাধীন সংস্থা ও খাতের কাছে চসিকের পাওনা রয়েছে প্রায় ৩০৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) কাছে পাওনা ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এ সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, যদিও তিনি এখনও দায়িত্বভার গ্রহণ করেননি। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিলে এ ব্যাপারে তিনি উদ্যোগী হবেন এমনই ধারণা সংশ্লিষ্ট বিভাগের। সূত্র জানায়, কর্পোরেশনের মোট পাওনার মধ্যে প্রায় ১৯৬ কোটি টাকা রয়েছে বিভিন্ন সরকারী সংস্থার কাছে। আর বেসরকারী সংস্থার কাছে বকেয়া ১০৭ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সার্কেলগুলোর অদক্ষতা এবং নানা অনিয়মের কারণে প্রত্যাশিত রাজস্ব আদায় সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। চসিক সূত্রে জানা যায়, অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২৫ শতাংশ। যে দেড়মাস সময় বাকি এরমধ্যে অবশিষ্ট রাজস্ব আদায়ে টার্গেট পূরণ সম্ভব নয়। কর্পোরেশনের তৎপরতা রয়েছে দফায় দফায় বৈঠকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। প্রসঙ্গত, রাজস্ব আদায়ে অদক্ষতা ও ধীরগতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিগত চসিক মেয়র এম মনজুর আলম সার্কেলের সংখ্যা চারটি থেকে বাড়িয়ে আটটিতে উন্নীত করেন। শুধু তাই নয়, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে অদক্ষতা ও অনিয়মের অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সতর্কও করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। চলছে সেই ঢিমেতালেই। চসিকের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, ঠিকমতো রাজস্ব আদায় হলে তা দিয়েই উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনা সম্ভব। কিন্তু এ কাজটি সঠিকভাবে পালন করাই যেন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। চলতি অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে নগর উন্নয়নে বরাদ্দ ছিল ৫৭২ কোটি টাকা। এর বিপরীতে তিন ধরনের কর বাবদ আয় ধরা হয় ৪৩৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে রয়েছে বকেয়া কর ও অভিকর বাবদ ২২৯ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার টাকা, হাল কর ১২৩ কোটি ২৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা এবং অন্যান্য কর বাবদ ৮৫ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু কাক্সিক্ষত কর আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চসিকের বকেয়া পাওনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওনা রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে। রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থাটির কাছে বকেয়া রাজস্ব ৬৯ কোটি ২০ লাখ ৯৯ হাজার ৬৬৫ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) কাছে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৭৩ হাজার ২৫৬ টাকা, স্টিল মিলের কাছে ১৭ কোটি ৯২ লাখ ২৩ হাজার ১৭৫ টাকা পাওনা রয়েছে। এসব পাওনা পরিশোধের জন্য প্রতিবছরের শুরুতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়ে থাকে। এবারও তাই হয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করার মতো কোন সাড়া নেই।
×