
গাজায় চলমান গণহত্যা ও মুসলিম বিশ্বের নীরবতা নিয়ে গাজীপুরের টঙ্গীতে তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় এক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২৯ জুন) বিকেল ৩টায় শহীদ আবদুল মালিক অডিটোরিয়ামে “গাজায় চলমান গণহত্যা : মুসলিম বিশ্বের নীরবতা” শীর্ষক এই লেকচার সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ হিফজুর রহমান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. আব্দুল আজিজ মাহমুদ আবু ইলিয়ান, তুরস্কভিত্তিক মানবাধিকার ও আইনি সংগঠনের সদস্য এবং আন্তর্জাতিকভাবে ফিলিস্তিনি অধিকার রক্ষায় সক্রিয় কর্মী। তিনি আরবি ভাষায় বক্তব্য রাখেন, যার অনুবাদ করেন তা'মীরুল মিল্লাতের সহকারী অধ্যাপক ড. সালমান ফারসি।
ড. আব্দুল আজিজ মাহমুদ আবু ইলিয়ান বলেন, “গাজায় প্রতিদিন মানুষ মরছে। গতকাল একদিনেই ১৫টি পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি হত্যা করা হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধদের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, শিল্পকারখানা—সব ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। উদ্দেশ্য, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা।” তিনি প্রশ্ন রাখেন, “এই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ দেখে মুসলিম বিশ্ব নীরব কেন? মুসলিম নেতারা কোথায়? কেন বিশ্ব বিবেক জাগে না?”
আলোচনায় অংশ নেন মোহাম্মদ ইকবাল কবীর, সহ-সভাপতি, তা'মীরুল মিল্লাত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (TACSU); ড. মোজ্জাম হোসেন আল-আজহারি, মুহাদ্দিস, তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা; শাইখ মিজানুর রহমান, সহ-প্রধান শিক্ষক; ইঞ্জিনিয়ার আদনান আলহাজ্জ শাকের, পরিচালক, আল-রাওয়াদ একাডেমি, তুরস্ক এবং মোহাম্মদ জাকির হোসেন, সম্পাদক, ডেইলি সাবাহ, তুরস্ক।
বক্তারা বলেন, “ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজা এক ভয়াবহ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। নারী-শিশুদের লক্ষ্য করে পরিকল্পিতভাবে চালানো এই নিধনযজ্ঞ আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। অথচ মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব এ বিষয়ে আশ্চর্যজনকভাবে নিশ্চুপ।”
তাঁরা আরও বলেন, “এই মুহূর্তে মুসলিম উম্মাহর উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো। গাজায় দ্রুত মানবিক সহায়তা পাঠাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক আদালতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনতে হবে।”
সেমিনারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মানবাধিকারকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সজিব