
ছবিঃ সংগৃহীত
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে দুই পক্ষের মারামারিতে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৪ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে ইউএনও এবং ওসির উপস্থিতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। উভয় পক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরের দিকে উপজেলার পৌর সদরের ছোলনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌর সদরের ছোলনা গ্রামের জব্দুল মোল্যার ছেলে মো. বাবুল মোল্যার কাছে ১৩ মাসের বিদ্যুৎ বিল বাবদ ১৪ হাজার ৬১০ টাকা পাওনা ছিল ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির। বুধবার দুপুরে স্থানীয় নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক বাবুল মোল্যার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বোয়ালমারী জোনাল অফিসের কর্মচারীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। এতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শাহেদ, জুয়েল, রাসেল, হাবিব এবং বাবুল মোল্যা ও তার ভাই শাহজাহান আহত হন। আহতদের মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দুইজন ও বাবুল এবং শাহজাহানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অপর দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বাবুল মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, “আমি ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ শোরগোল শুনে বাইরে গিয়ে পল্লী বিদ্যুৎের লোকজনকে দেখতে পাই। তারা আমার ভাইকে মারছিল। তাকে ঠেকাতে এগিয়ে গেলে আমাকেও ঘিরে ধরে মারতে থাকে। বড় রেঞ্জ দিয়ে বাড়ি মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়। গ্রামের লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে এসে আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আমরা একটু সুস্থ হলেই মামলা করবো।”
এ বিষয়ে বোয়ালমারী নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল সেখ বলেন, “বাবুল মোল্যার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল কয়েক মাস বাকি ছিল। আজ পল্লী বিদ্যুৎের অন্তত ৩০ জন লোক নিয়ে তার বাড়িতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে বাবুল মোল্যা সময় চেয়ে বাঁধা দেন। একপর্যায়ে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন তার ওপর হামলা চালায়। এতে বাবুলের মাথায় গুরুতর জখম হয়। গ্রামবাসীরা এগিয়ে এসে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের প্রতিহত করে।”
বোয়ালমারী জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. সাইদুর রহমান বলেন, “১৩ মাসের সাড়ে ১৪ হাজার টাকা বিল বাকি। বিলও দেয় না, আবার লাইন কাটতেও দেয় না। জুন মাসে আমাদের প্রচুর চাপ থাকে। তাই বিল আদায়ে না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের লোকজনকে মারধর করে আহত করেছে। আহত চারজনের মধ্যে দুইজন হাসপাতালে ভর্তি। পরে ইউএনও ও ওসিকে সাথে নিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ ঘটনায় সমিতির পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।”
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, “অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, “সময়মতো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করা অন্যায়। আমি গিয়েছিলাম যেন এ নিয়ে আর কোনো ঝামেলা না হয় এবং জনগণকে সচেতন করতে। যাতে ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা না ঘটে। অভিযোগ পেলে পুলিশ দোষীদের শনাক্ত করবে।”
মারিয়া