ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

বাগেরহাটে মা ও শিশু কেন্দ্রে ঈদের দীর্ঘ ছুটিতেও মিলেছে সেবা

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট।

প্রকাশিত: ০০:২০, ১৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ০০:২১, ১৮ জুন ২০২৫

বাগেরহাটে মা ও শিশু কেন্দ্রে ঈদের দীর্ঘ ছুটিতেও মিলেছে সেবা

পবিত্র ঈদুল আযহার দীর্ঘ ছুটিতেও বাগেরহাট জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন মা ও শিশু কল্যাণ সেবা কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক জরুরী স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত ছিল। ঈদের দিনেও হয়েছে নরমাল ডেলিভারি। গর্ভবতী মায়েদের সকল প্রকার স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। ছুটিকালীন সময়ে চিকিৎক সংকটসহ নানা কারণে যখন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেবা কার্যক্রম শিথিল ছিল, এমনকি বেসরকারি ক্লিনিক গুলোও যথাযথ কার্যক্রম চালু ছিল না, তখনও মা ও শিশু কল্যাণ সেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনামূল্যে গর্ভকালীন সেবা, প্রসব সেবা, প্রসব পরবর্তী সেবা, শিশু সেবা, কৈশোর কালীন কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য সেবাসহ জরুরী স্বাস্থ্য সেবা গ্রহনের ক্ষেত্রে বিনামূল্যে সেবা গ্রহীতাদের ভরসার স্থল হয়ে ওঠে এ কেন্দ্রটি। 

সংকটকালে এমন জরুরী সেবা পেয়ে সেবা গ্রহীতারা সন্তোষ প্রকাশ করছেন। বাগেরহাট মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের কর্মকর্তা (অতি: দায়িত্বে) এমও ব্রতা মুখার্জী জানান, পবিত্র ঈদুল আযহার দীর্ঘ ছুটিতে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ২৪ রঘন্টা জরুরী সেবা অব্যাহত রাখা হয়। এ সময়ে ১২ জন মায়ের নরমাল ডেলিভারিসহ অর্ধ-শতাধিক মা ও শিশুকে সেবা প্রদান করা হয়েছে। এমনকি পবিত্র ঈদের দিনেও ডেলিভারি করা হয়।


বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কচুবুনিয়া গ্রামের রেশমা বেগমের (২৬) নরমাল ডেলিভারি হয় ঈদের ছুটিতে। তার সম্বামী মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের বাড়ি খুব দুর্গম এলাকায়। ঈদের ছুটির সময়ে যখন আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিলেন, তখন স্থানীয় একাধিক ক্লিনিকে তাকে নিয়ে যাই। কিন্তু সেখানে সেবা মেলেনি। অবশেষে তাকে বাগেরহাট মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে নিয়ে আসি। এখানে সকল স্টাফ আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদান করেন। নরমাল ডেলিভারি হয়। এখন মা ও শিশু উভয়ে সুস্থ আছে।

বিনামূল্যে আন্তরিক সেবা পেয়ে রেশমা-মিজান দম্পতি সেবাদাতাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অনুরূপ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, এসময়ে সেবা পাওয়া রাজু হাওলাদার ও তার স্ত্রী হালিমা বেগম(৩০), হানিফ শরিফ ও তার স্ত্রী রুমি আক্তার (২৩) সহ সেবা গ্রহীতারা।


বাগেরহাট মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের সেবাদাতাদের মধ্য পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মাহামুদা সুলতানা, ফাতিমা খানম, রাবেয়া সুলতানা, সহকারী নার্সিং এ্যাটেনডেট জান্নাতুল ফেরদৌস, মিনা রানী দাস জানান, ঈদের ছুটির সময়ে দিন-রাত সার্বক্ষণ নরমাল ডেলিভেরি, গর্ভবতী মায়েদের প্রসবপূর্ব ও প্রসব পরবর্তী, স্বল্প মেয়াদী পরিবার পরিকল্পনা সেবা ও শিশুসেবা সহ সাধারণ রোগীদের বিনামূল্যে আন্তরিকতার সাথে আমরা সেবা প্রদানে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।


বাগেরহাট পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শামসুদ্দীন মোল্লা বলেন, এ জেলায় একটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং ৭৫ টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের মত এবারও পবিত্র ঈদুল আযহার দীর্ঘ ছুটিতে আমাদের সেবা কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। সেবা প্রার্থী কোন মানুষের যাতে কোন প্রকার ভোগান্তি না হয়, সেজন্য উর্দ্ধতন স্যারদের সার্ব্বিক দিক-নির্দেশনায় আমাদের সকল কেন্দ্র গুলি সার্ব্বক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা অব্যাহত রাখা হয়। এজন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হয়।

বাগেরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, এই কেন্দ্র থেকে সকল সেবা বিনামুল্যে দেওয়া হয়।পাশাপাশি পরিবার পরিকল্পনার সকল ও স্থায়ী পদ্ধতির সেবা গ্রহনে ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত হারে,ক্ষেত্রমত যাতায়াত/ ক্ষতিপূরণ ও ফলোআপ ভাতা দেওয়া হয়ে থাকে, এই কেন্দ্র থেকে দিনে রাতে সবসময়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেবা পাওয়া যায় বলে কেন্দ্রটি সাধারন জনগণের ভরসার স্থান হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে জনকল্যাণে এই সেবামুলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সূত্র মতে, এসময়ে প্রায় দেড়’শ জন গর্ভবতী নারীকে গর্ভকালীন (এএনসি) সেবা, ১৯ জনকে স্বাভাবিক প্রসব সেবা (এনভিডি), ৬৭ জনকে প্রসব পরবর্তী সেবা (পিএনসি) প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া শতাধিক শিশু-কিশোর-কিশোরীসহ ৪ শতাধিক সাধারণ রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।

রিফাত

আরো পড়ুন  

×