
প্রায় একযুগ আগের ছাত্রদল নেতা তাজুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে আলোচিত নতুন মোড়! ২০১৩ সালের ঘটনায় এবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ ৪৯০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) দুপুরে চাঁদপুর সদর আমলী আদালতে নিহত তাজুল ইসলামের বড় ভাই মো. ফারুকুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি গ্রহণ করে বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়াসিন আরাফাত আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ১৪০ জনের এবং অজ্ঞাতনামা ৩০০ থেকে ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ডা. দীপু মনির বড় ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, চাঁদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৮ দলীয় জোটের একটি অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল বের হয় চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে। সেসময় আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে হামলা ও গুলিবর্ষণ করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এই হামলায় ছাত্রদল নেতা তাজুল ইসলাম (২০) বুকের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। একই ঘটনায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের আরও প্রায় ৩০০ নেতাকর্মী আহত হন। নিহত তাজুল ইসলাম ও মামলার বাদী ফারুকুল ইসলাম চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২ নম্বর চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
বাদী পক্ষের দাবি, ঘটনার পর আসামিদের হুমকি, রাজনৈতিক বৈরিতা এবং প্রশাসনিক প্রতিবেদন না পাওয়ায় মামলা করা সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতির পরিবর্তন এবং বাকস্বাধীনতা ফিরে আসায় এখন ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা।
মামলার বাদী ফারুকুল ইসলাম বলেন, “পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় এতদিন মামলা করা যায়নি। এখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলেছে, তাই বিলম্বে হলেও ন্যায়বিচারের আশায় মামলা করেছি।”
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের জিলানী মিল্টন বলেন, “প্রমাণ ও সাক্ষ্য-নথির ভিত্তিতে আমরা আদালতে ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করি।”
চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি ইতিমধ্যেই চাঁদপুরজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক অঙ্গনেও চলছে নানামুখী আলোচনা।
মিমিয়া