
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে ইনশাআল্লাহ বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাবে। তারেক জিয়ার নেতৃত্বে সরকার গঠন করা হবে। এজন্য আমাদের সাধারন মানুষের কাছে যেতে হবে। আগামীতে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার (৪ জুন) শেষ বিকেলে কুয়াকাটা পর্যটন হলিডে হোমস মাঠে অনুষ্ঠিত এক যুব সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে এসব বলেন।
তিনি বলেন, আগামী স্থানীয় নির্বাচনে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভায় কোন দলীয় প্রতীক থাকবে না। আওয়ামী লীগ সরকার নৌকা প্রতীক দিয়ে নির্বাচনের নামে জনগণের সাথে তামাশা করেছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শেখ হাসিনার সরকার সন্ত্রাসী লালন করে এই কুয়াকাটাকে সন্ত্রাসীর স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। সেই সন্ত্রাসীরা যুবদল নেতা মিরনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা করেছিল। মিরনকে এমনভাবে কোপানো হয়েছে যে, সে মরে গেছে- না বেচে আছে বুঝতে পারি নাই। তিনি জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তিনি আরও বলেন, জনগণের প্রতিনিধি ছাড়া কিংবা নির্বাচিত সরকার ছাড়া একটি দেশ চলতে পারে না। তাই আমার দল যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দাবি করেছেন। তিনি বলেন, কুয়াকাটার যত উন্নয়ন বিএনপির নেতৃত্বে খালেদা জিয়ার হাত ধরে হয়েছে। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের তিনটি সেতু তার সরকারের সময় করা হয়েছে। হাসিনা সরকার এসে শুধু নামকরণ করেছিল। কিন্তু তা প্রকৃতির নিয়মেই আবার পাল্টে গেছে। বিএনপি সরকারের উন্নয়নের হাত ধরেই এই দেশের উন্নয়ন চলে আসছে। তাই এই উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে জনগণকে বিএনপির কাতারে শামিল করে আগামি নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে দলকে বিজয়ী করতে হবে।
কুয়াকাটা পৌর যুবদল সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম মিরণকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ঢাকায় দীর্ঘ চার মাসের চিকিৎসা শেষে ফিরলে তাকে দেয়া সংবর্ধনা ও যুব সমাবেশে জনাব মোশাররফ হোসেন এসব বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুয়াকাটা পৌর যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোঃ ফারুক।
প্রধান বক্তা ছিলেন পটুয়াখালী জেলা যুবদল সভাপতি মোঃ মনিরুল ইসলাম লিটন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী হুমায়ুন সিকদার, সিনিয়র সহসভাপতি জাফরুজ্জামান খোকন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান চুন্নু, কলাপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি গাজী মোঃ ফারুক, কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আঃ আজিজ মুসল্লী, পুলিশি থানা মহিপুর বিএনপির সভাপতি আঃ জলিল হাওলাদার, কলাপাড়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুসা তাওহীদ নান্নু মুন্সী, মহিপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহজাহান পারভেজ, কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান হাওলাদার, পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) শিবলু খান প্রমূখ।
কুয়াকাটা যুবদল সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমকর্মী জহিরুল ইসলাম মিরণের ওপর গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে তার বাসার সামনে সশস্ত্র একদল সন্ত্রাসী খুনের উদ্দেশে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করে। মুমূর্ষু অবস্থায় মৃত্যুশঙ্কা নিয়ে তিনি ঢাকায় চিকিৎসা নেন। দীর্ঘ চার মাস চিকিৎসা শেষে এই যুবনেতা কুয়াকাটায় আগমনকে ঘিরে তাকে সংবর্ধনা উপলক্ষ্যে এই যুব সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে আগত যুবদলের শত শত নেতাকর্মীসহ স্থানীয় মানুষ এবং দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মিরনকে হত্যাচেষ্টাকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
মিরন তার ওপর হামলার কথা বর্ননা করতে গিয়ে কান্না জুড়ে দেন। তিনি বক্তব্য দেওয়ার সময় আগতরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। পিনপতন নিরবতা বিরাজ করে সমাবেশস্থলে। অনেকে চোখের পানি মুছতে থাকেন। হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণ ঘটে। মিরণ প্রশ্ন করেন, কী অন্যায় করেছিলেন যে, তাকে মেরে ফেলতে হবে? তিনি এর বিচার জনগণের উপর ছেড়ে দেন।
রিফাত