
বন্দি জীবন মানেই কি সব আনন্দ-বিচ্ছিন্নতা? নীলফামারী জেলা কারাগার যেন এ ধারণাকে পাল্টে দিতে চায়। মৌসুমী ফলের স্বাদ থেকে যাতে বন্দিরা বঞ্চিত না হন সে লক্ষ্যেই ব্যতিক্রমধর্মী এক আয়োজন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (৪ জুন) নীলফামারী জেলা কারাগারের নিজস্ব উদ্যোগে আয়োজিত হয় ‘মৌসুমি ফল উৎসব’। এদিন কারাগারে থাকা ৩১৯ জন কারাবন্দিকে প্রত্যেককে চারটি করে লিচু বিতরণ করা হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে বন্দিরা লিচু গ্রহণ করেন এবং দীর্ঘ সময় পর প্রিয় ফল পেয়ে মুখে ফুটে ওঠে আনন্দের হাসি।
কারা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাজশাহী থেকে আনা আম বিতরণ করা হবে। প্রতিটি বন্দি পাবেন দুটি করে আম। শুধু ফলেই থেমে থাকেনি আয়োজন আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে পুরুষ বন্দিদের জন্য লুঙ্গি এবং নারী বন্দিদের জন্য শাড়ি উপহার হিসেবে দেওয়া হবে।
এছাড়া কারাগারে থাকা ১৬ জন অসহায় বন্দির পরিবারের জন্য রয়েছে বিশেষ সহায়তা। দিন আনে দিন খায় এমন পরিবারগুলোকে দেওয়া হবে ঈদ উপহার হিসেবে শাড়ি, কাপড়, আতব চাল, সেমাই, চিনি, দুধ, সয়াবিন তেলসহ প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. রফিকুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত জেলার ফারুক আহমেদ এবং কারারক্ষী কর্মকর্তারা। তারা জানান, এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ বন্দিদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে সহায়ক এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়াকে আরও মজবুত করে।
জেল সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, “বন্দিদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবেই এমন আয়োজন। সুস্থ থাকতে ফল খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। মৌসুমি ফল পেয়ে তারা ভীষণ খুশি।”
তিনি আরও জানান, “যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বন্দিদের জন্য মানবিক সহায়তা দিতে চান, তাহলে কারাগার কর্তৃপক্ষ তা আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করবে।”
উল্লেখ্য, নীলফামারী জেলা কারাগার ইতিপূর্বেও বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমে বন্দিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। গত ঈদেও প্রত্যেক বন্দিকে নতুন পোশাক প্রদান করা হয়।
মিমিয়া