ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তীব্র গরমে ডাবের চাহিদা বেড়েছে, স্বস্তি খুঁজছে মানুষ

ইমামুল মিল্লাত, শেরপুর (বগুড়া)।

প্রকাশিত: ২১:১৫, ৪ জুন ২০২৫

তীব্র গরমে ডাবের চাহিদা বেড়েছে, স্বস্তি খুঁজছে মানুষ

বগুড়ার শেরপুরে প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। একটানা কয়েকদিনের তীব্র তাপদাহে বাইরে বের হলেই শরীর ঘেমে একাকার। এই অসহনীয় গরমে খানিকটা স্বস্তির খোঁজে ছুটছেন শহরবাসী। আর সেই খোঁজের শেষ আশ্রয় এখন ডাবের পানি।

শহরের বাসস্ট্যান্ড, কলেজ রোড, হাসপাতাল গেইট, ধুনটমোড়সহ নানা এলাকায় দেখা গেছে, ডাবের দোকানগুলোতে ভিড় লেগেই আছে। গরমের তীব্রতায় একগ্লাস ঠাণ্ডা ডাবের পানিই যেন অনেকের জন্য মুহূর্তের পরম আরাম। বিক্রেতাদের ব্যস্ততা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ক্রেতারাও।

ডাব বিক্রেতা তরিকুল ইসলাম জানান, “সাধারণত গরমকালে বিক্রি একটু বাড়ে, কিন্তু এবার তা রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আগে দিনে যেখানে ৩০ থেকে ৪০টা ডাব বিক্রি হতো, এখন প্রতিদিন ৬০-৭০টির বেশি বিক্রি করছি।”

তিনি আরও বলেন, “চাহিদা বাড়লেও বাজারে ডাবের সরবরাহ একটু কম। ফলে পাইকারি দামে কিছুটা উঠানামা আছে। আগে যে ডাব ৭০-৮০ টাকায় কিনতাম, এখন সেটাই ৯০-১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।” ফলে খুচরা পর্যায়ে বড় আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়, মাঝারি ডাব ১২০-১৪০ টাকায় এবং ছোট আকারের ৯০-১১০ টাকায়।

তবে ক্রেতারা এই স্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিকে অনেকটাই মেনে নিয়েছেন। কলেজছাত্র ফারাবী বলেন, “গরমে শরীরটা একেবারে দুর্বল হয়ে পড়ছিল। একগ্লাস ঠাণ্ডা ডাবের পানি খেয়ে একেবারে প্রাণ ফিরে পেলাম। দাম একটু বেশি হলেও এখনকার সময়ে এইটুকু খরচ করাই যায়।”

স্বাস্থ্য সচেতন ক্রেতারাও ডাবের পানিকেই রাখছেন প্রথম পছন্দে। শেরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. সাজিদ হাসান বলেন, “ডাবের পানি এই প্রচণ্ড গরমে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি শুধু তৃষ্ণা মেটায় না, শরীরের ভেতরের ঘাটতিও পূরণ করে। তবে রাস্তার ধারে খোলা শরবত বা পানীয় খাওয়া উচিত নয়, এতে পানিবাহিত নানা রোগের ঝুঁকি থাকে।”

ডাব বিক্রেতারা জানান, চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় অনেক সময় ক্রেতাকে ফিরিয়েও দিতে হচ্ছে। তারা চান, দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ডাব পরিবহনে যেন আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এতে সরবরাহ বাড়বে এবং দামও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

তীব্র গরমে যখন মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে, তখন ডাবের পানিই হয়ে উঠেছে অনেকের জন্য একমাত্র ভরসা। শুধু তৃষ্ণাই নয়, ক্লান্ত শরীরের জন্য এটি যেন প্রাকৃতিক টনিক। শহরজুড়ে তাই এখন প্রতিটি ডাবের দোকান যেন একেকটি স্বস্তির ঠিকানা।

শিহাব

×