
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে। শনিবার টাঙ্গাইলে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা নবীন প্রজন্মকে দক্ষ করে তুলতেই এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, "এসএসসি পাস করার পর ছেলেমেয়েরা সাধারণত ৩ থেকে ৬ মাস ফাঁকা সময় পায়। এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে তাদেরকে আমরা কম্পিউটার, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন ইত্যাদি বিষয়ে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেব।"
এই প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরেই ৬ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। আগামীতে এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদেরও এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, "আমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিদেশে কর্মসংস্থানের নতুন বাজার খোলার জন্য চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে সার্বিয়া, রোমানিয়া, সৌদি আরব, জর্ডান, মালয়েশিয়া, বাহরাইন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসারিত হয়েছে। জাপান থেকেও এক লক্ষ শ্রমিক নেওয়ার আশ্বাস পেয়েছি।"
তিনি জানান, প্রবাসীদের ভোগান্তি কমাতে বিএমইটি ছাড়পত্র প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পদ্ধতিও অনেক সহজতর করা হয়েছে। এছাড়া, প্রবাসে মৃত্যুবরণকারী কর্মীদের মরদেহ পরিবহনে বিশেষ সহায়তা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
এসময় মন্ত্রী প্রবাসীদের জন্য একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের স্বপ্নের কথা জানান। তিনি বলেন, "এই হাসপাতালের মালিক হবেন প্রবাসীরাই। এটা আমার স্বপ্নের প্রজেক্ট। বাস্তবায়ন করতে পারলে আত্মতৃপ্তি পাব।"
প্রাথমিক স্তরে স্কিল ডেভেলপমেন্টের অংশ হিসেবে চালু হওয়া এই কর্মসূচিকে ভবিষ্যৎ শ্রমবাজারের জন্য প্রস্তুতির প্রথম ধাপ হিসেবে দেখছেন তিনি। "আন্তর্জাতিক শ্রমবাজার এখন আর আনস্কিল বা সেমি-স্কিল শ্রমিক নিতে চায় না। তাই আমাদের স্কিল ওয়ার্কার তৈরি করতেই হবে," বলেন তিনি।
এ প্রকল্প সফল হলে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে বাস্তবায়ন করা হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। পাশাপাশি, ভালো পারফর্ম করা শিক্ষার্থীদের প্রতি নজর রাখা হবে এবং প্রয়োজনে ট্রেনিং শেষ হওয়ার পরও সপ্তাহে একদিন করে অনুশীলনের সুযোগ রাখা হবে।
তিনি টাঙ্গাইলের স্থানীয় জনগণকে এই উদ্যোগের ব্যাপক প্রচারের আহ্বান জানান এবং সবার কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, "আমরা চাই, সত্যি সত্যি ভালো কিছু করতে।"
আঁখি