
ইতিহাস-ঐতিহ্যের সংমিশ্রণে শতবর্ষী সাহেব বাজার বড় মসজিদ। রাজশাহীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় ঐতিহ্যবাহী মসজিদটির অবস্থান। তাই নগরবাসীর কাছে এ মসজিদের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
বর্তমানে বহুতল বিশিষ্ট সাহেব বাজার বড়ো মসজিদের ইতিহাস বেশ পুরাতন। ২০০৪ সালের পূর্বেও এই মসজিদটি ছিল তিনতলা বিশিষ্ট। ২০০৪ সালে মসজিদটি ভেঙে ফেলে নতুন করে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং আধনিক বহুতল ইমারতে রূপান্তরিত করা হয়। ১৯২৭ সালে সাহেব বাজারের প্রাণকেন্দ্রে তিনতলা মসজিদের ভিত্তি স্থাপিত হয় এবং রাজশাহী শহর ও পল্লির বিত্তবান লোকদের সহায়তায় ১৯৫৪ সালের এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
চারটি মিনার ও এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই তিনতলা মসজিদটি বেশ আকর্ষণীয় ছিল। তারও পূর্বে এখানে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট একটি মসজিদের অস্তিত্ব ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। ১৮৪৯ সনের এক সার্ভে নকশায় ১৫১ নং দাগে আট বিঘা জমির উপর নির্মিত এই মসজিদের নকশা পরিলক্ষিত হয়। তবে ১৯১৮-১৯ সনের নকশাতে এই মসজিদের উল্লেখ না থাকলেও তদানীন্তন রাজশাহী থেকে প্রকাশিত স্থানীয় 'হিন্দু রঞ্জিকা' পত্রিকায় এই মসজিদ সম্পর্কে আলোচনা ও স্বীকৃতি রয়েছে।
খুবসম্ভব অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে নির্মিত তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি ১৮৫৭ সনের সিপাহি বিদ্রোহের পর ইংরেজ আমলে ধ্বংস করা হয়েছিল। রাজশাহী শহরের রামচন্দ্রপুরের অধিবাসী মহম্মদ খোয়াজ আহমেদ ১৯২১ সনে ধ্বংসাবশেষ হতে একটি মিহরাবের চিহ্ন আবিষ্কার করে উক্ত স্থানে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় হিন্দু প্রধান, মিউনিসিপ্যালিটি ও জেলা বোর্ড কৃর্তপক্ষ তাতে আপত্তি জানালে এ নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎ বাদ-প্রতিবাদ চলতে থাকে। এমনকি খোয়াজ আহমেদকে ফৌজাদারি মামলায় জড়িত করে তাকে দুই মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
অবশেষে ১৯২৩ সনে রাজশাহীর সদর মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ঘটনার সত্যতা উপলব্ধি করে মসজিদ নির্মাণের পক্ষে রায় দেন। এই রায়ে পূর্বে যে এখানে তিন গম্বুজ মসজিদের অস্তিত্ব ছিল তা প্রমাণিত হয় এবং পরবর্তীতে তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদ নির্মিত হয় যা সাহেব বাজার বড়ো মসজিদ নামে পরিচিত। রাজশাহী শহরের এটিই সবচেয়ে বড়ো মসজিদ। বর্তমানে মসজিদটি চারতলায় বৃহৎ পরিসরে নির্মিত।
রাজু