
পিরোজপুর শহর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা শহর। এটি বরিশাল বিভাগের বরিশাল ও পটুয়াখালী শহরের পর তৃতীয় বৃহত্তম একটি শহর।
নদী ও খাল বিধৌত এ শহরের কোনায় কোনায় রয়েছে নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গল্প। কালের পরিক্রমায় অনেক ঐতিহ্যই আজ দখলদারদের দখলে।
তেমনি এক ঐতিহ্যের নাম পিরোজপুরের ভাড়ানি খাল।
পিরোজপুর পৌরসভার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ভাড়ানি খাল। শহরের মধ্য থেকে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২২ ফুট প্রস্থের এ খালের দুই পাশজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। ফলে খালের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। বিগত কয়েক বছর ধরে দখল হয়ে আসছিল শহরের প্রাণ এই খালটি, মানুষের অত্যাচারে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিল এটি।
অবৈধ দখলদার এবং মাটি ও আর্বজনায় শত বছরের পুরোনো খালটি বর্তমানে প্রায় মুমূর্ষু হয়ে পড়েছিল।
তবে আনন্দের সংবাদ এই যে, পিরোজপুর এর বর্তমান জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান এর নেতৃত্বে ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সহায়তায় অবশেষে এ খালের পুনঃখনন শুরু হয়েছে, যা এখনো বর্তমানে চলমান রয়েছে।পাশাপাশি অবৈধ দখলদারদের থেকে খাল পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, উচ্ছেদ করা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা।
খালের দু'পাশজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। ফলে খালের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত ও এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছিল। এখন এসব স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে খালটির আগের রূপ ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে খালের দুপাশের অবৈধ স্থাপনা ও ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত কালভার্ট ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু পাকা স্থাপনাও রয়েছে। পলিথিন ও ময়লা আবর্জনার কারণে খালটি ভরাট ছিল, পানি প্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
যার ফলে, হাল্কা বৃষ্টি হলেই পিরোজপুর শহর পানিতে তলিয়ে যায়,পানি ও পয়োনিষ্কাশন চরম ভাবে ব্যাহত হয়ে আসছিল।
ভাড়ানি খাল পুনঃখনন এর ফলে খালটি ফিরে পেয়েছে তার জীবন ও আদি ঐতিহ্য।
পিরোজপুর শহরে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দা ও সচেতন নাগরিক সমাজ জানান, 'এই খাল পুনর্খননের উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এটি কোনো বড় প্রকল্প না হলেও গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। এই উদ্যোগকে একটি সামগ্রিক পরিকল্পনার আওতায় নিয়ে অন্যান্য খালও খনন করা উচিত।
তারা আরও বলেন, খালটি শুধু পানি নিষ্কাশনের পথ নয়, বরং শহরের পরিবেশ রক্ষার দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। তারা খালের পাড় দখলমুক্ত রেখে সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনের দাবি জানান।'
খালটি পুনঃখনন এর ফলে বেজায় খুশি স্থানীয় সিটিজেন এবং নেটিজেনরা। প্রশাসনের সঙ্গে খাল পুনঃখনন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে সচেতন নাগরিক, সাংবাদিক স্বেচ্ছাসেবী সহ অনেকেই ।
আশা করা হচ্ছে খাল পুনঃখনন এর ফলে খালের দুপাশের বাসিন্দাসহ পিরোজপুর শহরে বসবাসরত মানুষেরা এ কাজের সুফল পাবেন, আসছে বর্ষায় শহরের জলাবদ্ধতা কিছুটা হলেও লাঘব হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
মুমু