
ছবিঃ সংগৃহীত
মাদারীপুরে ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের দরপত্রে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের মাদারীপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক সুত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে মাদারীপুরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের ঔষধপত্র, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, লিলেন, গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা, কেমিক্যাল রিজেন্ট সামগ্রী ও আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য ৬টি প্যাকেজে দরপত্র আহবান করে স্বাস্থ্য বিভাগ। সেখানে পাঁচ বছর কাজের অভিজ্ঞতা চাওয়া হলেও অভিজ্ঞতাহীন ও বাজার মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্য দাখিলকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দরপত্রের ৫টি প্যাকেজের কাজই ঢাকার তোপখানা রোড এলাকার আবু ইউসুফের মালিকানাধীন ‘এমপেক্স ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দিতে মন্ত্রনালয়ে কাগজপত্র পাঠায় মাদারীপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এতে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠলে মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালায় দুদক। অভিযান চলাকালে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বেশকিছু নথিপত্র যাছাই-বাছাই করেন দুদকের কর্মকর্তারা। তারা তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠানোর পরে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানায় দুদক।
দুদক আরো জানায়, মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ের দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে টেন্ডার সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, মাদারীপুর সদর হাসপাতাল ও রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ের দরপত্র আহবান করা হয়। ৬ টি লটে ট্রেন্ডার আহবান করা হয়। রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে দরদাতাদের মধ্য থেকে মাত্র একজনকে রেসপন্সিভ করে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। এতে সরকারি মালামাল ক্রয়ের দরপত্র প্রক্রিয়ায় অসংগতি রয়েছে মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়। মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে ই-জিপিতে ৬ টি লটে টেন্ডার আহবান করা হয় এবং রেকর্ডপত্র মোতাবেক সকল লটে একজন ঠিকাদার কাজ পেয়েছেন।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সদর হাসপাতাল ও রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে কেবল একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ায় টেন্ডার সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দরপত্র প্রক্রিয়ায় ত্রুটি আছে কিনা তা বিশ্লেষণ করা হবে। সকল অভিযানকালে উদ্ঘাটিত ও সংগৃহীত তথ্য ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক মাদারীপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, মাদারীপুর সদর হাসপাতালের দরপত্র আহবান ও ঢাকার তোপখানা রোড এলাকার আবু ইউসুফের মালিকানাধীন ‘এমপেক্স ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার সুপারিশ নিয়ে দুদকের জরুরি সেবা ১০৬-এ কল করেন অভিযোগ দেয় এক গ্রাহক। এরই প্রেক্ষিতে তদন্তে নামে দুদক। এ ব্যাপারে অনিয়ম পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিবে সংস্থাটি।’
আসিফ