ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

পাঁচ হাজার বছরের ঐতিহ্য বয়ে চলা রাজা বিরাটের মেলা এখন উৎসবমুখর

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ১৮:০১, ২০ এপ্রিল ২০২৫

পাঁচ হাজার বছরের ঐতিহ্য বয়ে চলা রাজা বিরাটের মেলা এখন উৎসবমুখর

ছবি: জনকণ্ঠ

গোবিন্দগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রাজা বিরাটের যাত্রী মেলা শুরু হয়েছে। প্রতিবছর বৈশাখ মাসজুড়ে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। বৈশাখ মাসের প্রথম রবিবার থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে পুরো মাসজুড়ে।

স্থানীয়রা জানান, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসজুড়ে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। বৈশাখ মাসজুড়ে চলে যাত্রী মেলা, আর জ্যৈষ্ঠ মাসে হয় শুধু কাঠের মেলা। ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা সারা বছর ধরে তৈরি করা কাঠের দরজা, খাট, জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র বিক্রি করেন এ মেলায়। এই মেলা থেকেই আসবাবপত্র কিনে বড় বড় মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে নববধূ ও জামাইয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার রীতি আদিকাল থেকে প্রচলিত রয়েছে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাট বাজারে বসে এই মেলা। প্রাচীনকাল থেকে শুরু হওয়া রাজা বিরাট মেলা হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে একটি পবিত্র তীর্থক্ষেত্র হিসেবে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবছর দেশ-বিদেশ থেকে ধর্মপ্রাণ হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এই মেলায় অংশ নেন। প্রথা অনুযায়ী, দূর-দূরান্ত থেকে আসা তীর্থযাত্রীরা নতুন মাটির হাঁড়িতে ভাতের সঙ্গে করলা ও আলু সিদ্ধ করে সবাই একসাথে শতবর্ষী বটগাছের নিচে বসে সেই অন্ন গ্রহণ করেন এবং পরে হাঁড়িটি ভেঙে ফেলেন।

বৈশাখের প্রতি রবিবারে মেলার দিনে শত শত হাঁড়ি-পাতিল ভাঙা হলেও পরদিন সকালে সেগুলোর কোনো চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যায় না। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বিশ্বাস, আলু-করলার সিদ্ধ ভাত খেলে বাবা-মাসহ সকল প্রয়াত আত্মীয়-স্বজনের আত্মার কল্যাণ হয়।

মন্দির প্রাঙ্গণের শতবর্ষী বটগাছের নিচে রাজা বিরাট, তাঁর স্ত্রী সুদেষ্ণা ও পঞ্চপাণ্ডবের মূর্তি রয়েছে। এছাড়া রয়েছে শরশয্যায় শায়িত ভীষ্মের মূর্তি। প্রতিদিন সেখানে নিয়মিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

পৌরাণিক কাহিনির বরাতে রাজা বিরাট মদনমোহন জিউ বিগ্রহ মন্দিরের উপদেষ্টা বলাই চন্দ্র বর্মণ জানান, প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে পঞ্চপাণ্ডব অজ্ঞাতবাসে থাকাকালে বিরাট রাজার রাজ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তখন রাজ্যের বহু মানুষ অনাহারে মারা যায়। এমতাবস্থায় প্রজারা রাজাকে দেশত্যাগের অনুমতি চাইলে তিনি রাজজ্যোতিষীর পরামর্শ নেন। জ্যোতিষী গণনার মাধ্যমে জানান, যদি প্রজারা মন্দিরের সামনে আতপ চালের ভাতে আলু-করলা সিদ্ধ দিয়ে হবিষ্যান্ন গ্রহণ করেন, তবে দুর্ভিক্ষ কেটে যাবে।

রাজার নির্দেশে প্রজারা সেইভাবেই অন্ন গ্রহণ শুরু করলে ধীরে ধীরে দুর্ভিক্ষ কেটে যায়। সেই থেকে প্রতিবছর বৈশাখের প্রতি রবিবার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এই রীতিতে অংশ নিয়ে থাকেন।

গত রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে শুরু হয়েছে চলতি বছরের যাত্রী মেলা। মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য রথিকান্ত বর্মণ জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার মেলায় জনসমাগম আশানুরূপ হয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও সন্তোষজনক। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী রবিবার থেকে মেলা আরও জমজমাট হবে।

শহীদ

×

শীর্ষ সংবাদ:

যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু
জামায়াত নেতারা রাজাকার হলে পাকিস্তানে গাড়ি বাড়ি থাকতো : শামীম সাঈদী
এনসিপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই- উমামা ফাতেমা
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটকদের অধিকাংশই ভারতীয় মুসলমান
ইয়েমেনে হামলা চালিয়েই সাগরে ডুবে গেল মার্কিন সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান
জামিন পেলেননা তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন
লন্ডনে আজ আর্সেনাল পিএসজি মহারণ
১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা, তালিকায় আছেন নুসরাত ফারিয়া-অপু বিশ্বাস-ভাবনাসহ অনেকেই
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতা থেকে পতনের পথে
কুমিল্লায় পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরির নামে প্রতারণা: দালালসহ ১৩ জন গ্রেফতার
১২ বছর বয়সী ছেলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার