ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রাম গ্রামে জনপ্রিয় হচ্ছে গোশত সমিতি, প্রতি কেজি ৬২০ টাকা 

সংবাদদাতা, নালিতাবাড়ী, শেরপুর 

প্রকাশিত: ২০:০৯, ৯ এপ্রিল ২০২৪; আপডেট: ২০:৩১, ৯ এপ্রিল ২০২৪

গ্রাম গ্রামে জনপ্রিয় হচ্ছে গোশত সমিতি, প্রতি কেজি ৬২০ টাকা 

মাংস বিপণন। ছবি: জনকণ্ঠ

গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা মেটাতে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পাড়া মহল্লায় গঠন করা হচ্ছে গোশত সমিতি। এই ব্যতিক্রমী গোশত সমিতি নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের মাঝে ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

প্রথমদিকে এই সমিতির কথা শুনে অনেকেই অবাক হলেও লোকজন উপকৃত হওয়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাড়া মহল্লায় এর প্রচলন বেড়ে যাচ্ছে। এখন গ্রাম গঞ্জে জনপ্রিয় হচ্ছে গোশত সমিতি। সরেজমিনে জানা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নালিতাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাট বাজারগুলোতে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। যা গরীব মানুষের হাতের নাগালের বাইরে। তাই মাংসের চাহিদা মেটাতে গ্রাম, পাড়া বা মহল্লায় ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে মাংস বা গোশত সমিতি গঠন করা হচ্ছে। এসব সমিতি মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) থেকে গরু জবাই করে সমিতির সদস্যদের মাঝে বন্টন করতে শুরু করেছেন। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত তাদের এ কাজ চলমান থাকবে বলে সমিতির সদস্যরা জানান। 

মাংস সমিতির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি মাংস সমিতির সদস্য সংখ্যা ৩০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত হয়ে থাকে। সমিতির অন্তর্ভুক্ত প্রতিজন সদস্য মাসে সমিতিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখেন। বছর শেষে ঈদুল ফিতরের ঈদের আগে জমাকৃত অর্থ দিয়ে জবাই করার জন্য পশু ক্রয় করা হয়। ঈদের আগের দিন ওই পশু জবাই করে গোশত সমিতির প্রত্যেক সদস্যকে ভাগ করে দেওয়া হয়। এতে গোশত ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লুটতে পারে না। গরীব মানুষ কম খরচে গরুর মাংস ক্রয় করে তাদের চাহিদা মেটাতে পারেন। 

ঈদ উদযাপনের ক্ষেত্রে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের উপর আর্থিক চাপ কমে। ঈদের মধ্যে সবাই বাড়তি আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। স্থানীয়দের ভাষায় এই সমিতির নাম ‘গোশত বা মাংস সমিতি’। অনেকের কাছে এটি ‘গরু সমিতি’ নামেও বেশ পরিচিত।

উপজেলার মরিচপুরান গ্রামের বাসিন্দা মোতালেব মিয়া জানান, তাদের সমিতিতে এবার ৬৩ জন সদস্য। প্রতিমাসে সদস্য প্রতি ২০০ টাকা করে অর্থ জমা রাখেন। বছর শেষে রোজার ঈদের পূর্বে জমানো টাকা দিয়ে গরু কিনে জাবাই করে সমিতির সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। প্রতি কেজি মাংসের দাম পড়ে ৬২০ টাকা থেকে ৬৮০ টাকা। তুলনামূলক বাজার দরের চেয়ে কম দামে মাংস পাওয়া যায়। এভাবেই দিন দিন এই উপজেলায় গোশত সমিতির সংখ্যা বেড়েছেই চলছে।

এ বিষয়ে উপজেলার পলাশীকুড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ও বিশিষ্ট সমাজসেবক নুরুল হক বলেন, গ্রাম গঞ্জে বেশিরভাগ গরীব শ্রেণির মানুষ বসবাস করে। এসব মানুষ নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের। তাদের পক্ষে চড়া মুল্যে গরুর গোশত কেনা কষ্টকর। তাই সমিতির মাধ্যমে গরু জবাই করে গোশত বন্টন করে নেওয়ায় সদস্যরা সাশ্রয়ী মুল্যে গরুর গোশত পাচ্ছে। গরীব মানুষের জন্য এটি একটি ভালো উদ্যোগ। 

এসআর

×