ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিএনপির আসল উদ্দেশ্য বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যমূল্য বাড়ানো

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশিত: ০০:২৭, ২৪ মার্চ ২০২৪

বিএনপির আসল উদ্দেশ্য বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যমূল্য বাড়ানো

ড. হাছান মাহমুদ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে অনেক পণ্যই ভারত থেকে আসে। ভারতের সঙ্গে আমাদের হাজার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত এবং কিছু সীমান্ত বাণিজ্যও হয় বৈধভাবে। আসলে ভারতীয় পণ্যবর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির মূল উদ্দেশ্য।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম জেলায় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সমন্বয় সভা শেষে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ভারতীয় পণ্যবর্জনের ডাক সম্পর্কে সাংবাদিকরা সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা ভারত থেকে আসা পেঁয়াজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন, ভারত থেকে আসা গরুর মাংস দিয়ে ইফতার ও সেহরি খাবেন। ভারতে তাদের নেতা চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। আর ভারতীয় পণ্যবর্জনের ডাক দিবেন- এগুলো হিপোক্রেসি ছাড়া অন্য কোনোকিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যের মূল্য বাড়ানো।

এতে দেশে যাতে জনগণের ভোগান্তি হয় এবং পণ্যের মূল্য বাড়ে। ভারতীয় পণ্যবর্জনের যারা ডাক দিয়েছে, তাদের সঙ্গে শামিল হয়ে রিজভী সাহেব নিজের পরনের শালটিও জ্বালিয়ে দিয়েছে। আসলে শালটি ভারত থেকে কিনেছিল, নাকি বঙ্গবাজার থেকে কিনেছে আমি জানি না।

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে সরকারের পক্ষ থেকে কি ধরনের ভূমিকা রাখা হচ্ছে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গতবার যখন এমভি জাহান মনি হাইজ্যাক হয়েছিল তাদের মুক্ত করতে ১শ’ দিন সময় লেগেছিল। এখন যতদ্রুত সম্ভব তাদের মুক্ত করার চেষ্টাই আমরা করছি। অবস্থানকারী নাবিক এবং জাহাজের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেভাবেই আমরা উদ্ধার করার চেষ্টা করছি। জাহাজের মধ্যে কয়লা আছে, কয়লা একটি দাহ্য পদার্থ।

সুতরাং এমন কিছু করা যাবে না যাতে করে দাহ্য পদার্থ হুমকির সম্মুখীন হয়, জাহাজের ক্ষতি হয়। সেভাবেই আমরা এগুচ্ছি এবং যারা জাহাজটি হাইজ্যাক করেছে, তারা ইতোমধ্যে মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা করছে এবং আপনারা নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বললেও জানতে পারবেন তারাও অনেকটা আশ^স্ত। আশা করছি, আমরা সহসা নাবিকদের উদ্ধার করতে পারব। 
সভায় জলাবদ্ধতা প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং প্রকল্পের সমন্বয়ের ওপর আমরা গুরুত্ব দিয়েছি জানিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, প্রকল্প শেষ হতে আরও আড়াই বছর বাকি আছে। এই আড়াই বছরে জনগণের যাতে কোনো ভোগান্তি না হয় সেটির ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। 
একইসঙ্গে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার পর যাতে নিয়মিতভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় সেটিকেও গুরুত্ব দিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
আজকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বে-টার্মিনালের জন্য ইতিমধ্যে পাঁচশ’ একর জায়গা প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আরও তিনশ’ একরের বেশি জায়গা তারা পাবে, সেটির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে। ইতিমধ্যেই ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটির সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর এমওইউ স্বাক্ষর করেছে। 
তিনি আরও বলেন, এখানে তিনটি ভাগে কাজ হবে। একটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি ডিপি ওয়ার্ল্ড করবে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানও সেখানে যুক্ত হচ্ছে। এটা একটি বড় অগ্রগতি। 
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বে-টার্মিনাল হলে সেটি চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে আরও বড় একটি নতুন বন্দর হবে। যেটি সমগ্র বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সম্পদ হবে এবং একইসঙ্গে এই বে-টার্মিনাল দিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহের পণ্য সরবরাহ আমরা করতে পারব। এ ছাড়া চট্টগ্রামে পাহাড়কাটা বন্ধ ও যানজট নিরসনসহ সার্বিক অনেক বিষয় নিয়ে সমন্বয় সভায় আমরা আলোচনা করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, প্রতি তিনমাস পরপর আমরা এরকম সমন্বয় সভা করব।

×