
সেতু সংলগ্ন রেলের জমিতে প্রায় দু’যুগ ধরে উত্তোলনকৃত বালুর স্তূপ
ক্ষমতাসীন দলের কয়েক নেতা ঈশ্বরদীর পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ সেতু সংলগ্ন রেলের জমিতে প্রায় দু’যুগ ধরে উত্তোলনকৃত বালুর রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃষি কাজের জন্য লিজ নেওয়া হলেও বালু ব্যবসায় সেই জমি ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে বিশালাকৃতির বালুর পাহাড়ে ঢাকা পড়েছে হার্ডিঞ্জ সেতু ও লালন শাহ সেতু। বালু পরিবহনের জন্য সেতু রক্ষাবাঁধ কেটে রাস্তা তৈরি করে ট্রাক, ড্রামট্রাক, ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের ফলে হার্ডিঞ্জ সেতু ও সেতু রক্ষাবাঁধ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা এতই ক্ষমতাধর যে, রেলের জমিতে অবৈধভাবে বালুর স্তূপ করে নানা অসুবিধার সৃষ্টি করে ব্যবসা চালানো হলেও রেল কর্মকর্তারা ব্যবসা বন্ধ করতে পারেনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ মতে, পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস শুরু থেকেই বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন। পরে ক্ষমতাসীন দলের আরও অনেকে এ ব্যবসায় জড়িত হয়েছেন।
অভিযুক্ত এনামুল হক বিশ্বাস বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এক সময় বালুর ব্যবসা করতাম। এখন আর করি না। আমার কোন বালু মহাল বা বালুর স্তূপ নেই। এখানে যারা বালু ব্যবসা করে তারা রেলের নিকট থেকে জমি লিজ নিয়েছে।
পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল ইসলাম বলেন, বালু ব্যবসার সঙ্গে কোনোদিনই জড়িত ছিলাম না। এখনো নেই। তবে বিভিন্ন ঘাটে ঘাটে বালু ব্যবসায়ীদের চাঁদা দিতে হয় বলে শুনেছি। বালু ব্যবসায়ী ও যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা মাসুম বলেন, বালু অপসারণের জন্য মাইকিং করা হয়েছে শুনেছি। বেঁধে দেওয়া স্বল্প সময়ের মধ্যে বালু সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না।
পাকশী রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিইএন-২) বীরবল ম-ল বলেন, বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গাইডব্যাংক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিরাপত্তার স্বার্থে বালু মহাল এখান থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখান থেকে সরানোর পর ব্রিজের নিরাপত্তার জন্য আশপাশের এলাকা কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে।
রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা আলহাজ নুরুজ্জামান জানান, মাইকিং করে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বালু ব্যবসায়ীরা রেলের জমি থেকে বালু সরিয়ে না নিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।