ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

মৌলভীবাজার-৩

আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি বিএনপিতেও একাধিক

সৈয়দ হুমায়েদ শাহীন, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: ২৩:৪৬, ২৫ জুলাই ২০২৩

আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি বিএনপিতেও একাধিক

প্রবাসী ও পর্যটন জেলা হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজার জেলা

পীর আউলিয়ার পূণ্য ভূমি পাহাড়, টিলা, হাওড় ও সমতলভূমির অপরূপ সমন্বয় ও দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ, প্রবাসী ও পর্যটন জেলা হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজার জেলা। হযরত শাহজালাল (র.) অন্যতম সহচর উপমহাদেশের অন্যতম সাধক মৌলভীবাজার শহরের বেরীর পাড়ে অবস্থিত হযরত শাহ মোস্তফা বোগদাদী (র.) মাজার শরিফ, সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নে গয়ঘর গ্রামে প্রায় তিন শত বছরের ঐতিজ্যবাহী শাহ সুজার মসজিদ  (খোজার মসজিদ), শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, চাঁদনীঘাট এবং মোস্তফাপুর ইউনিয়ন মিলে বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক শহরের পূর্বপাশে বর্ষিজোড় মৌজায় অবস্থিত সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের বিরাইমাবাদে অজ্ঞান ঠাকুরের মন্দির। 

রাজনগর সদর ইউনিয়নের কমলারানীর দীঘি (সাগর দীঘি), সেই সাগর দীঘির পশ্চিম পারে কুতুব উদ্দিন (র.) মাজার। এরই পাশে অবস্থান বালি দীঘি, টেংরা বাজারের পাশে দেওয়ান দীঘি। জলের গ্রাম অন্তেহরি রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। টেংরা ইউনিয়নে মাথিউড়া চা বাগান লেক মাথিউড়া। রাজনগরের পঁাঁচ গাঁয়ে ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী নিলা নাগের বাড়ি, পাঁচগাঁও মন্দির রয়েছে। 
মৌলভীবাজার পৌরসভা রাজনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়ন নিয়ে মৌলভীবাজার-৩ আসন। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯১ হাজার ২৬৮ জন। এরই মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৭ হাজার ১২২ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ১৪৬ জন। 
১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে আজিজুর রহমান আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন বর্জন করে। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম নির্বাচনে আজিজুর রহমান আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ১১ দিন মেয়াদি ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে এম সাইফুর রহমান বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম নির্বাচনে এম সাইফুর রহমান বিএনপি থেকে পরবর্তীতে উপনির্বাচনে এ আসনে তার পুত্র এম নাসের রহমান বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন।

২০০১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত অষ্টম সংসদ নির্বাচনে এম নাসের রহমান বিএনপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনে সৈয়দ মহসীন আলী আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুতে উপনির্বাচনে তার স্ত্রী সৈয়দা সায়রা মহসীন নির্বাচিত হন। সবশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে নেছার আহমদ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হন।
স্বাধীনতা পরবর্তী  প্রায় সকল নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভালো ফল করলেও পরবর্তীতে আস্তে আস্তে দৃশ্যপট বদলে যায়। আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত এ আসনে স্বাধীনতা পরবর্তী প্রায় সকল নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বারাবরই ভালো করেছেন। ১৯৯৬ সালের পরে আবার দৃশ্যপট বদলে যেতে থাকে। সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের উন্নয়নের কারণে প্রায় সকল নির্বাচনে বিএনপি এই আসনে ভালো ফল করে। আবার দৃশ্যপট বদলে ২০০৮ সালের পর হতে সকল নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়। এ আসনে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দীর্ঘদিন থেকে। ওই রকম বিএনপির তেমন কোনো কোন্দল নেই এবং প্রার্থী নির্বাচনেও সমস্যা নেই। আগামী নির্বাচনে বিএনপি চাইবে তার হারানো আসন আবার পুনরুদ্ধার করতে। আর আওয়ামী লীগ চাইবে তার আসনটি ধরে রাখতে।

মৌলভীবাজার-৩ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসীন, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ রহিম সিআইপি, মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র  মো. ফজলুর রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভিপি আব্দুল মালিক তরফদার শোয়েব প্রমুখ।
অন্যদিকে, বিএনপি থেকে শক্তিশালী প্রার্থী সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের পুত্র সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান। এ ছাড়া বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- জেলা বিএনপির সহসভাপতি রেজিনা নাসের, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও মৌলভীবাজার পৌরসভার সাবেক দুই বারের মেয়র মো. ফয়জুল করিম ময়ূন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রামান মিজান। আর জাতীয় পার্টি থেকে সৈয়দ শাহাব উদ্দিন।
বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৎ ও সজ্জন হিসেবে পরিচিত নেছার আহমদ জনকণ্ঠের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানান, মনু নদী খনন ও দুই পারে বাঁধ নির্মাণসহ ৯৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মনু নদী প্রকল্পের কাজ চলছে। মৌলভীবাজারের বিদ্যুতের উন্নয়নের জন্য মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কে তালতলায় গ্রিড স্টেশন স্থাপনের কাজ চলছে। মৌলভীবাজার সদর উপজেলা ভবন ও রাজনগর উপজেলা ভবন নির্মাণ, রাজনগরে ফায়ার স্টেশন, াজনগর হাসপাতালকে ৩০ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ এবং ভবন নির্মাণসহ স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্টসহ এলাকার ব্যাপক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, মৌলভীবাজারের উন্নয়নে আমি অনেক কাজ করেছি। আরও অনেক বাকি রয়েছে। 
তিনি বলেন, আগামীতে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দেন এবং আমাকে আমার সম্মানীত ভোটার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন আশা করি আর মৌলভীবাজারের আর কোনো সমস্যা থাকবে না ইনশাআল্লাহ। স্বচ্ছতার জন্য টিআর কাবিখার কাজ আমি মৌলভীবাজার ও রাজনগরের দুই উপজেলার নেতৃবৃন্দকে ডেকে উন্মুক্তভাবে সবসময় বুঝিয়ে দেই। 
অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন জানান, আমি মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে সংসদ সদস্য থাকায় আমার নামে যে বরাদ্ধ আসে সেই বরাদ্ধ অত্যন্ত অপ্রতুল। তারপরও সেই বরাদ্ধ দিয়ে দুই জেলাবাসীকে আমি খুশি রেখেছি। আমি মহিলা সংস্থার ৬তলা ভবন নির্মাণ করেছি। আমার বাড়ি যেহেতু মৌলভীবাজার সদর সেহেতু আমি আগামীতে নির্বাচিত হলে সর্বপ্রথম আমার কাজ হবে মৌলভীবাজারে একটি সরকারী মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করা। মৌলভীবাজার সরকারি কলেজকে আধুনিকীকরণ করা। মৌলভীবাজার টেকনিক্যালকে ইনজিনিয়ারিং বিশ^বিদ্যালয় করা। 
সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসীন বলেন,  সাধারণ মানুয়ের কাছে আমার স্বামীর একটি রাজনৈতিক ইমেজ রয়েছে। তিনি মন্ত্রী থাকাকালীন এলাকার এবং সাধারণ মানুয়ের অনেক কাজ করেছেন। এ হিসাবে একটি পপুলার ভোট আমাদের পরিবারের প্রতি রয়েছে। এ পপুলার ভোটকে কাজে লাগিয়ে আমরা নির্বাচনে একটা ভালো ফল করতে পারব। এ ছাড়া আমি তিন বছর সংসদ সদস্য থাকাকালীন অবস্থায় এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছি। আমার স্বামীর স্বপ্ন ছিল মৌলভীবাজারে একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হবে, সেই লক্ষ্যে তিনি কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন। এই সময় তিনি ইন্তেকাল করায় সবকিছু আবার পিছিয়ে যায়। মৌলভীবাজারে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা থাকার পরও কেউ এটাকে কাজে লাগায়নি। পর্যটন শিল্প, স্কুল-কলেজের ভবন নির্মাণ, রাস্তাঘাট মেরামত, মসজিদ-মন্দির নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করেছি। 
বিশিষ্ট সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ রহিম সিআইপি বলেন, জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্টে পরিণত করতে হবে। প্রতিটি গ্রাম হবে শহর। এই গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করতে যা যা করা প্রয়োজন আমি তাই করব। বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এই মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। বর্তমানে মৌলভীবাজার দেশের অন্যান্য জেলার উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হলে সেই উন্নয়ন থেকে যেন মৌলভীবাজারবাসী বঞ্চিত না হয়। শিক্ষাই জাতীর মেরুদ- এই লক্ষে আমি আমার নিজে গ্রামে একটি স্কুল, মাদ্রাসা ও একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুফল ইতোমধ্যেই এলাকাবাসী পাচ্ছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশী মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র  মো. ফজলুর রহমান বলেন, আমি মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর মৌলভীবাজার পৌরসভার পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করেছি। মৌলভীবাজার পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে কোদালী ছড়া খনন করে পৌরসভার স্থায়ী জলাবদ্ধতার সমাধান করি। এ ছাড়া পরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে শহরের ধরকাপন, বড়কাপন, বড়হাট, গবিন্দশ্রী, মুসলিম  কোয়াটার, সৈয়ারপুর, সাইফুর রহমান সড়ক, সৈয়দ মুজতবা আলী সড়ক, সৈয়দ কুদরত উল্লা সড়কসহ বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান করেছি। 
মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন বলেন, আমি উপজেলা হিসেবে সরকারের নির্ধারিত উন্নয়নমূলক যে সব কাজ আছে যেমন রাস্তা-ঘাট পাকাকরণ, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, টিউবওয়েল স্থাপনসহ আমাদের আওতায় ১৮ অর্গানের নানা কাজ আমি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেছি। সরকারের প্রতিটি উন্নয়ন কাজে কোনো না কোনোভাবে উপজেলা পরিষদ জড়িত। আমি চেষ্টা করেছি ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের নিয়ে সুষ্ঠুভাবে দুর্নীতিমুক্তভাবে সকল প্রকল্প পরিচালিত করতে। আমার সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মানসিকভাবে খুবই ভালো। আমি নির্বাচিত হলে মৌলভীবাজারবাসীর কিছু প্রাণের দাবি যেমন একটি সরকারি মেডিক্যাল হাসপাতাল, বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় এই বেসিক দুটি কাজকে আমি অগ্রাধিকার দেব। 
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভিপি আব্দুল মালিক তরফদার শোয়েব বলেন, আমি স্কুল জীবন থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমি ১৯৮৬ সালে জেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক, ১৯৮৭ সালে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের ভিপি, ১৯৯০ সালে যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, ২০০০ সালে যুক্তরাজ্যর সাউদাম্পটন আওয়ামী লীগের সভাপতি, ২০০৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলাম। আমি যদি মনোনয়ন পাই এবং বিজয়ী হলে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য সর্বপ্রথম মৌলভীবাজার-৩ আসনে যে কাজগুলো বাকি রয়েছে সেই কাজকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরিকল্পিতভাবে কাজ করব। 
এদিকে, বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের পুত্র সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান। নির্বাচনী আলাপ চারিতায় জনকন্ঠকে তিনি বলেন, যদি নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেই নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি অংশগ্রহণ করব। মৌলভীবাজারে দৃশ্যমান যা উন্নয়ন হয়েছে সবই সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের সময় এবং আমার সময়ে হয়েছে। মৌলভীবাজারের জগন্নাথপুরে প্রচুর খালি জায়গা রয়েছে। এই ধানী জমির খালি জায়গায় একটি বিমানবন্দর স্থাপন করা যায়। এই বিমানবন্দর সিলেট-মৌলভীবাজার-ঢাকা আবার সিলেট-মৌলভীবাজার-চট্রগ্রাম ডমেস্টিক ফ্লাইট চালু করা সম্ভব। এই ব্যবস্থা বার্মা ও ভারতে চালু রয়েছে। পর্যটন, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া এবং শিক্ষার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলেন তিনি। 
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, মৌলভীবাজার সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি মো. মিজানুর রামান মিজান (ভিপি মিজান) বলেন, গত বছরও আমি মনোনয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। এবছরও আমি মনোনয়ন চাইব এবং দলের সিন্ধান্ত মোতাবেক নির্বাচন করব। আমাদের মৌলভীবাজারে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা খুবই মজবুত, জনগণ বিএনপি পক্ষে আছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। 
জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও মৌলভীবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. ফয়জুল করিম ময়ূন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের কাছে থেকে মৌলভীবাজারের অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। মৌলভীবাজার পৌরসভার একাধিকবার পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় মরহুম সাইফুর রহমানকে দিয়ে মৌলভীবাজারের অনেক উন্নয়ন করিয়েছি, যা আজ পর্যন্ত মৌলভীবাজারবাসী মনে রেখেছে। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় এবং আমি নির্বাচিত হলে প্রথমে মৌলভীবাজার হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে রূপান্তিত করব। সাইফুর রহমানের সময়ে নির্মিত রাস্তাগুলো সংস্কারের অভাবে ভেঙে গেছে। এই ভেঙে যাওয়া সড়কগুলো মেরামত করে আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনব।

×