ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁ পৌরসভার অর্ধেক সড়কবাতিই জ্বলে না

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৪ মার্চ ২০১৭

নওগাঁ পৌরসভার অর্ধেক সড়কবাতিই জ্বলে না

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ নওগাঁ শহরের অধিকাংশ এলাকায় পর্যাপ্ত সড়কবাতি নেই। যেটুকু আছে, তাও মেরামতের অভাবে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে সন্ধ্যা নামলেই শহরের অধিকাংশ রাস্তায় ঘুটঘুটে অন্ধকার। এতে চুরি, ছিনতাই, মাতাল আর লম্পটদের ভয়ে সমস্যায় পড়ছেন রাস্তায় চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে নারীরা। কর্তৃপক্ষের দেখভালের অভাবে এ পরিস্থিতি বলে অভিযোগ পৌরবাসীর। নওগাঁ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় কাগজে-কলমে ৪ হাজার ২শ’টি সড়কবাতি থাকলেও প্রধান সড়ক ও পাড়া-মহল্লার অনেক রাস্তায় রাতের আঁধারে সড়কবাতি জ্বলে না। পৌর কর্তৃপক্ষ ঠিক কতগুলো সড়কবাতি বর্তমানে বিকল হয়ে আছে এর সংখ্যা জানাতে পারলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অর্ধেকেরও বেশি সড়কবাতি অনেকদিন ধরেই অকেজো হয়ে আছে। প্রধান সব সড়কে আশপাশের দোকানের বাতি আর নিয়ন সাইনবোর্ডের আলোতে যতটুকু আলোকিত হয়, তা দিয়েই পথচারী ও যানবাহনের চলাচল করতে হয়। তবে দোকানগুলো বন্ধ হয়ে গেলে সড়কে অন্ধকার নেমে আসে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পাড়া-মহল্লার ছোট রাস্তাগুলোর। প্রধান রাস্তাগুলোতে কিছু সড়কবাতি এখনও সচল থাকলেও ছোট রাস্তাগুলোতে প্রায় সব সড়কবাতিই অচল হয়ে পড়েছে। ফলে সন্ধ্যা নামলেই এসব রাস্তায় ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে। রাতে এসব ছোট রাস্তায় আতঙ্ক নিয়ে পথচারীরা চলাচল করেন। অন্ধকারের সুযোগে এসব রাস্তায় প্রায় চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। অনেক রিক্সাচালক রাতে এসব পথে যাত্রী পরিবহন করতে চান না। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটি বাতি নষ্ট হলে নতুন করে লাগাতে অনেক সময় লেগে যায়। এলাকার কাউন্সিলরদের বারবার জানালেও কোন কাজ হয় না। কাউন্সিলররা মেয়রের কাছে যেতে বলেন আর মেয়র বলেন কাউন্সিলরদের বলতে। পৌর কর্তৃপক্ষের এহেন টালবাহানা আর যথাযথ দেখভালের অভাবে সড়কবাতিগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে থাকছে। গত দুদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রধান সড়কগুলোর (বালুডাঙ্গা-ব্রিজেরমোড়, তাজের মোড়-ঢাকা রোড, ব্রিজের মোড়-ডিগ্রীর মোড়, কেডির মোড়-মুক্তির মোড়, হাসপাতাল রোড, কাছারি রোড, কালীতলা রোড, কাঁঠালতলী-পিরোজপুর সড়ক, আলুপট্টি- লস্করপুর সড়ক) বেশিরভাগ সড়কবাতিই জ্বলছে না। ছোট বা গলি রাস্তাগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। বিজিবি রোডের নামাজগড় মাদ্রাসা থেকে তাজের মোড় পর্যন্ত ১৫টি সড়কবাতির মধ্যে জ্বলছে মাত্র চারটি। সরিষাহাটির মোড় থেকে জনকল্যাণ মোড় পর্যন্ত সাতটি সড়কবাতির মধ্যে শুধু একটি সড়কবাতি জ্বলতে দেখা গেছে। গোস্তহাটির মোড় থেকে নাপিতপাড়া পর্যন্ত ১৭টি সড়কবাতির মধ্যে মাত্র ৮টি সড়কবাতি জ্বলছে। পাড়া-মহল্লার গলিপথগুলোর ৮০-৯০ শতাংশ সড়কবাতিই জ্বলে না। পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কিংবা শর্টসার্কিট বা ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ ঘটলে অনেক বাতি নষ্ট হয়ে যায়। আবার অনেক সময় দুষ্টু ছেলেরা সড়কবাতিগুলো ইট ছুড়ে নষ্ট করে দেয়। আবার অনেক সময় সড়কবাতিগুলো চোরের দল চুরি করে নিয়ে যায়। পৌরসভায় ৪ হাজার ২শ’ লাইটপোস্টের মধ্যে ২ হাজারের মতো লাইটপোস্টে বাতি নেই। তবে আগামী দুই-এক মাসের মধ্যে সবখানেই বাতি লাগানো হবে। তবে এমন সমস্যার কথা মানছে পৌর কর্তৃপক্ষও। পৌরসভার মেয়র নজমুল হক বলেন, অধিকাংশ সড়কবাতি নষ্ট হয়েছে। আর্থিক সঙ্কটের কারণে গত দুই মাস ধরে সড়কবাতির সংযোগগুলো মেরামত কিংবা নষ্ট হয়ে যাওয়া বাতি নতুন করে না লাগানোয় এ সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে। তবে আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে সড়কবাতিগুলো ঠিক করা হবে বলে জানান তিনি।
×