ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব থাকলেও বাংলাদেশের অবস্থান প্রশংসনীয়

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ১৭ অক্টোবর ২০১৯

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব থাকলেও বাংলাদেশের অবস্থান প্রশংসনীয়

ওয়াজেদ হীরা ॥ টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে রেকর্ড হয়েছে। গত দশ বছরের এই অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিশ্বকে শুধু বিস্মিতই করছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন আলোচনার বিষয়। সারাবিশে^ই যেখানে অর্থনীতিতে মন্দাভাব সেখানে ভাল করছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সেটি মনে করছে। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। এর আগে বিশ^ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন ইতিবাচকভাবেই দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে প্রবৃদ্ধি অর্জনে করণীয়ও জানিয়েছে অর্থনীতিবিদরা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তথ্য মতে, চীন-মার্কিন বাণিজ্য বিরোধের প্রভাব পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতেই পড়ছে। বর্তমান সময়ে বিশ্ব সবচেয়ে ধীর গতিতে এগোচ্ছে। বাণিজ্যবিরোধ বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে বিশ্বব্যাপী নতুন বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশে^র অর্থনীতিতে মন্দাভাব সেখানে বাংলাদেশের অবস্থানকে প্রশংসনীয়ভাবে দেখছে অর্থনীতিবিদরা। তবে এই প্রাক্কলন প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পরামর্শও দিয়েছেন। সেন্টার ফর পলিসি (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার গত কয়েক বছর ধরেই ভাল। বিভিন্ন সেক্টরেও ভাল করছে। যদিও বৈশি^ক প্রবৃদ্ধি কিছুটা শ্লথ। এখানে রফতানি খাতে আমাদের ওপর কি প্রভাব পড়ে সেটিও দেখতে হবে। এছাড়াও এই প্রাক্কলন প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিনিয়োগে গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেন তিনি। এই অর্থনীতিবিদ বলেন, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ দেখতে হবে। আমাদের প্রবৃদ্ধি অর্জনে যা করণীয় তা যেন সঠিক হয় সেটি করতে হবে। স্থানীয় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, অর্থনৈতিক জোনের কাজগুলো দ্রুত হলে বিদেশী বিনোয়োগ বাড়বে। তবে বৈশি^ক পরিস্থিতি যেহেতু ইতিবাচক নয় তাই রফতানি খাতে যেন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখার কথা বলেন তিনি। ওয়াশিংটনে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আইএমএফ প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ জানান, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে। সঙ্কট মোকাবেলায় ভারত বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে শক্তিশালী মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নের আহ্বান জানান। আইএমএফের এ পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের চেয়ে বেশি। বিশ্বব্যাংক মনে করে, বাংলাদেশে এবার জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) তাদের সম্প্রতি প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ হবে বলে প্রাক্কলন করেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে গত অর্থবছরে (২০১৮-১৯) জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ৮ দশমিক ২ শতাংশ। কোন দেশের জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা জিডিপির হিসাব করে। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান জনকণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশ ভাল করছে। প্রতিবেশী অনেক দেশের চেয়ে অনেক ভাল করছে। আর বাংলাদেশ যে ভাল করছে বিশে^র বিভিন্ন দেশ সেটির স্বীকৃতি দিচ্ছে। এতে আমাদের আন্তর্জাতিক ম-লে সুনাম বাড়ছে। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, আমাদের সামনে আরও ভাল করতে হবে। আমি মনে করি বাংলাদেশ যে প্রাক্কলন আটের ওপরে সেটি অর্জন সম্ভব এর জন্য যা করণীয় সেটি নির্বাচনী ইশতেহারেই বলা আছে। ইশতেহারে বলা আছে, গ্রামে শহরের সুবিধা, তরুণদের কাজে সম্পৃক্ত বেকারত্ব কমানো, দুর্নীতি ইত্যাদি। যদিও দুর্নীতির বিরুদ্ধে নানা অভিযান শুরু হয়েছে। তবে এটি শেষ পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে হবে। তবেই অর্থনীতিতে আরও ভাল করবে দেশ। বর্তমানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আমেরিকা অবস্থান করছেন। গত মাসে অর্থমন্ত্রী প্রবৃদ্ধি নিয়ে মন্ত্রিসভায় অবহিত করে বলেন, গত দশ বছরে জিডিপিতে (মোট দেশজ উৎপাদন) কারেন্ট প্রাইস মেথডে (চলতি বাজার মূল্য) বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সারাবিশ্বে সবার উপরে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম পরে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। মন্ত্রিসভার সেই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ২০১৯ পর্যন্ত এই দশ বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সারাবিশ্বে সবার উপরে। গত ২৯ আগস্ট ‘দ্য স্পেক্টেটর ইনডেক্স’ প্রকাশিত বিশ্বের ২৬টি শীর্ষ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের তথ্যের ভিত্তেতে এ বিষয়টি তুলে ধরেন। এদিকে সদ্য প্রকাশিত আইএমএফ আউটলুক প্রতিবেদন অনুষ্ঠানে সংস্থার প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ জানান, সামনের দিনগুলোতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। চলতি বছরের তুলনায় ২০২০ সালে প্রবৃদ্ধি কমতে পারে দশমিক ৫ শতাংশ। যে কোন দেশেই প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধ অর্জনে শক্তিশালী মুদ্রানীতি একটা বড় ভূমিকা রাখে। দুঃখজনক হলেও সত্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সফলতা দেখাতে পারছে না। এখানকার আর্থিক খাতের নীতিমালাগুলো ঘন ঘন পরিবর্তন হয়। স্বাভাবিক ভাবে প্রবৃদ্ধি কিছু কমছে ঠিকই, কিন্তু শেষ হয়ে যাওয়ার মতো সময় হয়নি। সুতরাং এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে সবাইকে। যদিও প্রতিবেদনে খুশি হওয়ার মতো উপলক্ষ রয়েছে বাংলাদেশের জন্য। আইএমএফ বলছে, চলমান প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে ২০২৪ সাল নাগাদ। যদিও এক্ষেত্রে শক্তিশালী মুদ্রানীতি আর আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার আহ্বান আইএমএফের। গীতা গোপীনাথ বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা ও অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় বাড়ানো খুব জরুরী। কারণ কাউকে পেছনে ফেলে অর্জিত উন্নয়ন টেকসই হয় না। বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় ও অর্থনীতির দেশগুলো এক ধরনের আধিপত্য দেখাচ্ছে, এটা ঝুঁকিও তৈরি করছে। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতির আশঙ্কা করে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী বছর কয়েক দফায় বাড়বে তেল, স্বর্ণ, হীরা আর প্লাটিনামের দাম। আইএমএফ বলছে, চলতি বছর (২০১৯) শেষে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হতে পারে মাত্র ৩ শতাংশ। ২০০৯ সালের পর এটাই হবে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি। অর্থনীতিতে নানা আশঙ্কা সত্ত্বেও উদীয়মান দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রফতানি বাড়বে বলে আশা করছে আইএমএফ। পূর্বাভাস অনুযায়ী এ বছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। আগামী বছর এই হার কমে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে। আইএমএফের প্রতিবেদনের বিশ্লেষণে দেখা যায়, উদীয়মান এবং উন্নয়নশীল এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে প্রবৃদ্ধি হবে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের পরেই থাকবে নেপাল ৭ দশমিক ১ শতাংশ। পূর্বাভাস অনুযায়ী ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ১ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ২ দশমিক ৭ শতাংশ, ভিয়েতনাম সাড়ে ৬ শতাংশ। প্রতিবেদনে বিশ্ব অর্থনীতির গতি কমে যাওয়ার পেছনে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য কমে যাওয়াকে অন্যতম কারণ বলা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের রফতানি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণেই থাকবে বলে আশা করছে আইএমএফ। একাধিক অর্থনীতিবিদ জাানান, পরিকল্পনামাফিক কাজ হচ্ছে। তবে কাজের গতি আরও বাড়ানো পক্ষে মত দিয়েছেন। বাংলাদেশের সময় এখন আরও এগিয়ে যাওয়ার মনে করছেন অর্থনীতি সংশ্লিষ্টরা। আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে এর সদস্য ১৮৮টি দেশের অর্থনীতি কেমন যাবে, তা নিয়ে প্রক্ষেপণ রয়েছে। ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভাকে সামনে রেখে আইএমএফ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। আইএমএফ বলছে, ২০০৭-২০০৮ সালে শুরু হওয়া বিশ্বমন্দার পর এটি সবচেয়ে কম অগ্রগিত। ২০১৭ সালে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল এবার ২০১৯ সালে ৩ শতাংশে নেমে আসবে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি। সংস্থাটি বলছে, বাণিজ্য শুল্ক এবং ভূ-রাজনীতির কারণে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। তবে ২০২০ সাল নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার আশা করছে আইএমএফ। ৩.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে ২০২০ সালে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, উন্নত বিশ্বের প্রবৃদ্ধি এ বছর ১ দশমিক ৭ শতাংশ হতে পারে। উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ৯ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে যা ২০২০ সাল নাগাদ ৪ দশমিক ৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। গত বছরের তুলনায় তুরস্ক, আর্জেন্টিনা এবং ইরানের অর্থনীতির গতি কমেছে। তুলনামূলক ভালো করেছে ব্রাজিল, মেক্সিকো, ভারত, রাশিয়া ও সৌদি আরব। উচ্চ শুল্ক এবং বাণিজ্যনীতি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তা বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকে বাধাগ্রস্ত করছে। চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাবে ২০২০ সাল নাগাদ বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে গত ১০ অক্টোবর জিডিপির পূর্বাভাস দিয়ে বিশ^ব্যাংক জানায় ৭ দশমিক ২ শতাংশের কথা। একই সঙ্গে নাজুক ব্যাংকিং খাতসহ দেশের অর্থনীতিতে ৪ ধরনের ঝুঁকি রয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি। এসব ঝুঁকি উত্তরণে আর্থিক খাতে বিভিন্ন সংস্কারসহ ৫ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার কথাও উল্লেখ করেন। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধির এই পূর্বাভাস দিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ বার্নাড হ্যাভেন। বার্নাড হ্যাভেন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ধারাবাহিক ৭ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন, শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনীতি, সরকারী বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রফতানি আয় ও রেমিটেন্স বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকা, আমদানি ব্যয় ও বাজেট ঘাটতি প্রত্যাশার মধ্যে থাকা। কিন্তু এই সম্ভাবনার সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে কয়েকটি ঝুঁকিও। অর্থনৈতিক ঝুঁকিকে দু’ভাগে ভাগ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জন্য কিছু বৈশি^ক ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে মন্দার কারণে বিশ^ রফতানি বাজার সম্প্রসারণ কম হওয়া, চীনের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ, ব্রেক্সিট ইস্যু ও সৌদি-ইরানের ¯œায়ুযুদ্ধ অন্যতম। তবে যদি জ্বালানি তেলের দাম না বাড়ে বৈশি^ক মূল্যস্ফীতি না বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিশ^ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়। দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে ৪ ধরনের ঝুঁকি রয়েছে উল্লেখ করে বিশ^ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, আর্থিক খাতের সুশাসনের অভাব, রাজস্ব আহরণে দুর্বলতা, প্রকৃত মুদ্রা বিনিময় হার বৃদ্ধি পাওয়া এবং প্রতিযোগিতার সক্ষমতায় পিছিয়ে পড়া অন্যতম ঝুঁকি। বিশ^ব্যাংক জানায়, সরকারের ঘোষিত পূর্বাভাস ৮ শতাংশ হবে না। এটা হতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৭ দশমিক ৩ শতাংশে। বিশ^ব্যাংকের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন বলেন, বাংলাদেশের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অনেক প্রশংসার। এক্ষেত্রে সংখ্যা কোন বিষয় নয়। ইতিবাচক উন্নতি যে হচ্ছে এটিই অনেক বড় ব্যাপার। তাছাড়া দারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশের অর্জন অনেক রয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতি বদলে গেছে। এসময় তিনি বাংলাদেশের প্রতিযোগিতার সক্ষতা বাড়াতে ডুয়িং বিজেনেস পরিবেশ উন্নত করা কথা বলেন। এছাড়াও বিশ^ব্যাংকের প্রাক্কলনের আগে চলতি অর্থবছরের জন্য সরকার মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে হবে বলে পূর্বাভাস দেয় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ম্যানিলাভিত্তিক ঋণদাতা সংস্থাটি ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০১৯ আপডেট’ প্রতিবেদন এই পূর্বাভাস দেয়। এডিবিরি জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সুন চ্যান হং প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশের শিল্প, কৃষি ও প্রবাসী আয়ে চাঙ্গা থাকলেও জিডিপির প্রবৃদ্ধি আট শতাংশের বেশি হবে না। তারপরও এ প্রবৃদ্ধি অর্জনে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।
×