ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুন্দর ঢাকা উপহার দেয়ার আশ্বাস আতিক ও তাপসের

প্রকাশিত: ১০:৪২, ২০ জানুয়ারি ২০২০

  সুন্দর ঢাকা উপহার দেয়ার আশ্বাস আতিক ও  তাপসের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচিত হলে নগরবাসীকে সুন্দর মেট্রোপলিটন শহর উপহার দেয়ার আশ্বাস আওয়ামী লীগের দুই মেয়র প্রার্থীর। গড়ে তোলা হবে নারীবান্ধব ঢাকা শহর। নারীবান্ধব শহর গড়তে সিসি ক্যামেরা লাগাব। এছাড়া মেয়র ও কাউন্সিলরদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলে জনগণের কাছে জবাবদিহিতার জন্য প্রত্যেক মাসে বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে জবাবদিহিতামূলক টাউন হল মিটিং করা হবে। রবিবার দশম দিনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মোঃ আতিকুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নিজেদের প্রচারে এসব কথা বলেন। একইসঙ্গে গণসংযোগ চালাতে গিয়ে যানজট বা কোন দুর্ভোগ যেন না হয় নিজ নেতাকর্মীদের সে বিষয়ে সজাগ থাকার কথা বলেছেন তারা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যেখানেই যাচ্ছি নগরবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পাচ্ছি। রবিবার রাজধানীর মতিঝিল নটরডেম কলেজ উত্তর পাশে থেকে ১০ম দিনের মতো নির্বাচনী প্রচার শুরু করে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। সিটি নির্বাচন পেছানো প্রসঙ্গে ডিএসসিসির মেয়র প্রার্থী বলেন, নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আমরা সাধুবাদ জানাই। শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, এসএসসি পরীক্ষার সূচী যদি পরিবর্তন করতেই হয় তাহলে আরও আগে করলে সেটা আরও ভাল হতো। এখন সূচী পেছানোয় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় একটু ব্যাঘাত ঘটবে। এছাড়া আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যে প্রচারণা চালাচ্ছি এতেও শিক্ষার্থীদের একটু সমস্যা হচ্ছে। নির্বাচনের তারিখ না পিছিয়ে যদি এগিয়ে আনা হতো তাহলে শিক্ষার্থীদের এই সমস্যায় পড়তে হতো না। নগরবাসীর উদ্দেশে তাপস বলেন, নৌকার পক্ষে ভোটের প্রচারে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমি বলব আমাকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেন আমি আগামী ৫ বছর সময় দেব আপনাদের। তিনি বলেন, আমরা অনেক বেশি ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হতে চাই। এজন্য সব নেতাকর্মীকেঢাকাবাসীর ঘরে ঘরে যেতে হবে এবং ভোট প্রার্থনা করতে হবে। এভাবে আমরা প্রচার চালাতে পারলে আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি নৌকা বিপুল ভোটে জয় যুক্ত হবে। বিএনপির প্রার্থীদের উদ্দেশে তাপস বলেন, কেউ গণসংযোগ না করে, জনগণের কাছে না গিয়ে যদি ঘরে বসে থাকে তাহলে তো সেটার বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই। তিনি বলেন, সিটি নির্বাচন নিয়ে কোন ধরনের আশঙ্কা নেই। আমি কোন শঙ্কা দেখছি না। প্রতিটি এলাকায় তাদের (বিএনপি) যথেষ্ট পোস্টার রয়েছে। নির্বাচনী প্রচার চালানোর জন্য সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে যা বোঝায় তা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই এই ঢাকাবাসী আর যেন অবহেলিত-বঞ্চিত না থাকেন। আমাদের ঢাকাবাসী যেন তাদের সেবা দোরগোড়ায় পান, সেই লক্ষ্যেই আমাদের এই নব সূচনা, নবযাত্রা। নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ঢাকা-১০ আসনের সাবেক এই এমপি বলেন, আমরা ঢাকাবাসীর ঘরে ঘরে যাব। দিনব্যাপী, রাত অবধি আমাদের গণসংযোগ চলবে। আপনারা অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে গণসংযোগ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়। রাস্তা ছেড়ে দেবেন। কোন পথচারী বা মানুষের বিঘ্ন ঘটে এমন কাজ করবেন না। আমরা যত বেশি মানুষের দোরগোড়ায় যেতে পারব ভোটের ব্যবধান তত বৃদ্ধি পাবে। নির্বাচিত হলে নগরবাসীকে সুন্দর মেট্রোপলিটন শহর উপহার দেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করি পহেলা ফেব্রুয়ারি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং নগরবাসী মেয়র হিসেবে যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেবে। এ সময় তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মোজাম্মেল হক এবং মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী মিলু রহমানকে পরিচয় করিয়ে দেন। তাদের ভোট দেয়ার জন্যও তিনি এলাকাবাসীর কাছে আহ্বান জানান। সংক্ষিপ্ত পথসভা শেষে আরামবাগ মতিঝিল, ফকিরাপুল, গুলিস্তান ও পল্টন এলাকায় গণসংযোগ কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। দশম দিনের মতো নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে রাজধানীর আরামবাগে ৯২ নম্বর বাড়িতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে যান ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস। কারণ ওই বাড়িতেই শিশুকালে থেকেছেন, খেলেছেন তিনি। এজন্য প্রচার চালানোর এক পর্যায়ে ওই বাড়ির সামনে গিয়ে থমকে দাঁড়ান তাপস। কিছুক্ষণের জন্য যেন ফিরে যান তার সেই শৈশবে, খুঁজে ফিরেন সেই দিনগুলোর স্মৃতি। বাড়ির লোকজনকে জড়িয়ে ধরেন, কথা বলেন। কেমন আছেন তারা সেই খোঁজ নিয়েছেন। বাড়ির মুরব্বীরাও তাকে কাছে পেয়ে আবেগে জড়িয়ে ধরেন। মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করেন, দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন। আর আবেগাপ্লুত তাপস যেন কিছুক্ষণের জন্য ফিরে গেলেন শৈশবে! নেতাকর্মী দেখলেন সেই দৃশ্য। তারাও আবেগাপ্লুুত হয়ে পড়লেন দৃশ্য দেখে। শেখ ফজলে নূর তাপসের মিডিয়া সমন্বয়ক তারেক শিকদার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর পরিবারের সঙ্গে ওই বাড়িতে শৈশবের দিনগুলো কেটেছে ওনার (শেখ ফজলে নূর তাপস)। ওনার দাদা, বাবা শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে দীর্ঘদিন ওই বাড়িতে থেকেছেন তিনি। বসবাসের জন্য ধানম-িতে স্থানান্তর হওয়ার আগে ওই বাড়িতেই তার দিনগুলো কেটেছে। পরবর্তীতে নিজে ফুটপাত, দোকান ও অফিসে ঢুকে লিফলেট ধরিয়ে দিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার অনুরোধ করেন ব্যারিস্টার তাপস। প্রচারণায় অংশ নেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি, সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ কামালসহ প্রমুখ।
×