ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডায়াবেটিক সমিতির আলোচনা

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান

প্রকাশিত: ১২:৩৫, ১৫ নভেম্বর ২০১৯

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য রোগ। ইচ্ছে থাকলেই তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। সচেতনভাবে সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করতে হবে। একবার আক্রান্ত হলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া খুবই কঠিন। তাই আক্রান্ত হওয়ার আগেই এই রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতন থাকা দরকার। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ডায়াবেটিক সমিতিরি সহসভাপতি এ আর খান, মহাসচিব মোঃ সাইফউদ্দিন, বারডেমের মহাপরিচালক নাজমুন নাহার প্রমুখ। দিবসটি উপলক্ষে পালিত কর্মসূচীগুলোর মধ্যে ছিল র‌্যালি, সচেতনতামূলক পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ, আলোচনা সভা ও বিনামূল্যে ডায়াবেটিস নির্ণয়। আলোচনা সভায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে জীবন-যাপন পদ্ধতি ও খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে ডায়াবেটিস মহামারী আকার ধারণ করছে। ডায়াবেটিস যে হারে বাড়ছে তাতে আমাদের এখনই এ রোগ প্রতিরোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। আর যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের সচেতন করে তুলতে হবে, যাতে তারা ডায়াবেটিসকে সুনিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ, স্বাভাবিক ও কর্মঠ জীবন নিশ্চিত করতে পারেন। ডায়াবেটিস এমন এক রোগ, স্বাস্থ্যশিক্ষাই যার প্রধান চিকিৎসা। যথাযথ স্বাস্থ্যশিক্ষা পেলে একজন ডায়াবেটিক রোগী চিকিৎসকের ওপর নির্ভর না হয়ে এ রোগ ভালভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান বলেন, বর্তমানে যেসব রোগের প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তার মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ডায়াবেটিস একটি ভয়াবহ রোগ। কায়িক পরিশ্রমের অভাব, মুটিয়ে যাওয়া, ফাস্টফুড জাতীয় খাদ্যের অভ্যাস ইত্যাদি কারণে দেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডায়াবেটিসের কারণগুলো মানুষকে জানাতে হবে, সচেতন করতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস ও শ্রম অভ্যাস সম্পর্কে ব্যাপক সচেতন থাকতে হবে। সমিতির মহাসচিব মোঃ সাইফউদ্দিন ডায়াবেটিস সম্পর্কে পাঠ্যপুস্তকে একটি অধ্যায় সংযোজনের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এতে ছাত্রছাত্রীরা সুস্থ জীবনধারা সম্পর্কে জানতে পারবে। ডায়াবেটিসের ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। কোন রোগীর ডায়াবেটিস থাকলে তার চিকিৎসা ডায়াবেটিসমুক্ত রোগীর তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। শতকরা ৭০ ভাগ ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য। ইচ্ছে থাকলেই তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বারডেমের মহাপরিচালক নাজমুন নাহার বলেন, ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস এবং শহরাঞ্চলে খেলাধুলার সুযোগ কমে যাওয়ায় শিশু-কিশোররাও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি ডায়াবেটিস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার প্রক্রিয়ায় তরুণদের সম্পৃক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। এদিকে, রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘ডায়াবেটিস কেয়ার বাডাস গাইডলাইন-২০১৯’ নামে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস) এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম যৌথভাবে এই গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এবং চিকিৎসকদের সুবিধার্থে প্রয়োজনভিত্তিক ডায়াবেটিস চিকিৎসা সহায়িকা ‘ডায়াবেটিস জার্নি’ চালু করা হয়েছে। নতুন গাইডলাইনের ওপর ভিত্তি করে এ্যাপটি তৈরি করেছে নভো নরডিস্ক ও বাডাস। এই বিষয়ে বাডাস’র সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এ কে আজাদ খান বলেন, এই গাইডলাইটি ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসা রূপরেখার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। এই এ্যাপটি রোগের ধরন ও রোগীর প্রয়োজন বুঝে সঠিক চিকিৎসা পরামর্শ দিতে চিকিৎসকদের জন্য সহায়ক হবে।
×