ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কবিতার বরপুত্র শামসুর রাহমানের জন্মদিন আজ

প্রকাশিত: ১১:১১, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

কবিতার বরপুত্র শামসুর রাহমানের জন্মদিন আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আধুনিক বাংলা কবিতার এক অনন্য প্রতিভাদৃপ্ত কবি শামসুর রাহমান। কাব্য রচনায় সৃজনশীলতা ও মননের দ্যুতিময় উপস্থাপনা তাকে দিয়েছে কবিতার বরপুত্রের উপাধি। ছন্দোময় ও শিল্পিত শব্দের বুননে গড়া কাব্যভাষ্যে বলেছেন দেশ, মাটি ও মানুষের কথা। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে বাঙালীর স্বাধীনতার উচ্চারণ করেছেন কবিতার পঙ্ক্তিমালায়। সাহিত্যচর্চায় স্বদেশ ও শিকড়ের প্রতি আমৃত্যু দায়বদ্ধ ছিলেন এই কবি। সমকালীনতাকে ধারণ করে সারাটি জীবন অসাম্প্রদায়িকতা, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত সমাজের কামনা করেছেন কাব্যের ছন্দে। ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনসহ জাতীয় জীবনের চলমান ঘটনাবলীর পাশাপাশি শহুরে মধ্যবিত্ত জীবনাচরণ, প্রেম, ভালবাসা, সাধারণ মানুষের জীবন সংগ্রামÑসবই ঠাঁই পেয়েছে তার কবিতার শরীরে। আজ ২৩ অক্টোবর বুধবার বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান এই কবির ৯১তম জন্মদিন ও ৯০তম জন্মবার্ষিকী। জন্মদিনে নাগরিক কবি শামসুর রাহমানকে স্মরণ করা হবে শ্রদ্ধা-ভালবাসায়। আজ বিকেল পাঁচটায় বাংলা একাডেমির সবুজ ঘাসে আবৃত রবীন্দ্র চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে কবিকে নিবেদিত আলোচনা, কবিতা পাঠ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। যৌথভাবে এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ ও শামসুর রাহমান স্মৃতি পরিষদ। ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর শহর ঢাকার মাহুতটুলিতে জন্মেছিলেন শামসুর রাহমান। ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। জন্ম ও মৃত্যুর মধ্যবর্তী ৭৭ বছরের বর্ণময় জীবনের বড় অংশজুড়েই নিমগ্ন থেকেছেন কবিতা সৃজনের মোহ ও অনুরাগে। পুরনো ঢাকায় বেড়ে ওঠায় নগর জীবনের নানা অনুষঙ্গ ও প্রকরণ উদ্ভাসিত হয়েছে এই নাগরিক কবির কবিতায়। জীবনানন্দ পরবর্তী বাংলা কবিতাকে আধুনিকতার পথে ধাবিত করায় তাঁর ভূমিকাটি একেবারেই স্বতন্ত্র। বিশ শতকের তিরিশের দশকের পাঁচ মহান কবির পর তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার প্রধান পুরুষ হিসেবে প্রসিদ্ধ। ষাটের দশকের গোড়ার দিকেই কবি প্রতিভার বিচ্ছুরণে আলোকিত করেন সাহিত্যের ভুবন। সূচনাটা অস্তিত্ববাদী ইউরোপীয় আধুনিকতায় ধাবিত হলেও একটা সময়ে দেশজ সুর ও ঐতিহ্যকে কবিতায় ধারণ করেছেন নিবিড় মমতায়। সমকালীন ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে চিরকালীনতার অনুভূতির প্রকাশ ঘটিয়েছেন কবিতার বুননে। সাম্প্রদায়িকতা ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যেমন কবিতার ভাষায় প্রতিবাদ করেছেন তেমনি মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীনতার আকাক্সক্ষায় উজ্জীবিত মানুষকে প্রেরণা দিয়েছেন কবিতার সৃষ্টিশীলতায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তাঁর দুটি কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’ একই সঙ্গে অনুপ্রেরণাদায়ী এবং পাঠক ও বোদ্ধার কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
×