ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধুতে কাতারের মুখোমুখি আজ বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:০৩, ১০ অক্টোবর ২০১৯

বঙ্গবন্ধুতে কাতারের মুখোমুখি আজ বাংলাদেশ

জাহিদুল আলম জয় ॥ বিশ্বজুড়ে চলছে ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্ব। বাংলাদেশও এই ডামাডোলে শরিক হতে পেরেছে। প্রথম রাউন্ডের গ-ি পেরিয়ে লাল-সবুজের দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডে। বর্তমানে এশিয়ান অঞ্চলের বাছাইপর্বে বাংলাদেশ খেলছে ‘ই’ গ্রুপে। ইতোমধ্যে মিশন শুরু করা বাংলাদেশ আজ দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামতে যাচ্ছে। ঘরের মাঠ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জামাল, রবিউল, সাদদের প্রতিপক্ষ এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন ও ২০২২ বিশ্বকাপের স্বাগতিক কাতার। ম্যাচটি শুরু হবে আজ সন্ধ্যা ৭টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলা টিভি। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, পরের বিশ্বকাপের স্বাগতিক হওয়ার পরও বাছাইপর্ব কেন খেলতে হচ্ছে কাতারকে? কারণটা হচ্ছেÑ এটি একই সঙ্গে এএফসি এশিয়ান কাপেরও বাছাইপর্ব। ২০২৩ এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার টিকেট কাটার জন্য কাতারকেও এই মঞ্চে খেলতে হচ্ছে। শক্তিমত্তার দিক দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের চেয়ে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। শুধু পরিসংখ্যান নয়, ফিফা র‌্যাঙ্কিংও এ সাক্ষ্য দিচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের র‌্যাঙ্কিং যেখানে ১৮৭, সেখানে কাতারের অবস্থান ৬২তম। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও কাতার তিনবার মুখোমুখি হয়েছে। দু’দলের প্রথম সাক্ষাতে দক্ষতার সঙ্গেই খেলেছিলেন বাংলার ফুটবলাররা। আজ থেকে দীর্ঘ ৪০ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৭৯ সালের ৩০ এপ্রিল এএফসি এশিয়ান কাপে প্রথমবার সাক্ষাত হয়েছিল দু’দেশের। ওই ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। ২৭ বছর পর ২০০৬ সালের ১৬ আগস্ট একই আসরে দ্বিতীয়বার দেখা হয়। ম্যাচটিতে কাতার জিতেছিল ৪-১ গোলে। ওই বছরেরই ৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে ফিরতি ম্যাচে সফরকারী কাতারের কাছে ৩-০ গোলে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। এই হিসেবে দীর্ঘ ১৩ বছর পর আবারও দেখা হচ্ছে বাংলাদেশ ও কাতারের। চতুর্থ এই সাক্ষাতের আগে দু’দেশের ফুটবলে অনেক পটপরিবর্তন হয়েছে। এক্ষেত্রে কাতার নিজেদের বিশ্বমানে নিয়ে গেলেও তলানি থেকে উঠার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। সিনিয়র পর্যায়ে কাতারের বিরুদ্ধে জয়ের রেকর্ড না থাকলেও অনুর্ধ পর্যায়ে এই স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। গত বছর এশিয়ান গেমস ফুটবলে (অনুর্ধ-২৩) কাতারকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা জয় পায় লাল-সবুজের দেশ। ওই ম্যাচে জয়সূচক গোলটি করেছিলেন বর্তমান বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। আবার সেই প্রতিপক্ষকে পেয়ে ভাল কিছু করার প্রত্যয়ের কথা শুনিয়েছেন ডেনমার্কের লীগে খেলা তারকা এই মিডফিল্ডার। বুধবার বাফুফে ভবনে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আত্মবিশ্বাসী জামাল ভুঁইয়া বলেন, ‘কাতার অনেক শক্তিশালী দল। এ কারণে ম্যাচটি অনেক কঠিন। কিন্তু ভারত যদি কাতারের সঙ্গে ড্র করতে পারে তাহলে আমরাও পারব। এমনকি জিতেও যেতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘কাতার এশিয়ার এক নম্বর দল। আমরা খুব বেশি সুযোগ হয়তো পাব না। কিন্তু যা পাব সেগুলো কাজে লাগাতে হবে। তা না হলে আমাদের শাস্তি পেতে হবে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা সুযোগ পেয়েছিলাম, কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি।’ বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে’ও আত্মবিশ্বাসী ভাল কিছু করতে। আগেই হাল ছেড়ে দিতে নারাজ এই কোচ বলেন, ‘আমরা জানি ম্যাচটি কঠিন হতে যাচ্ছে। এরপরও সবার মতো আমরাও জিততে চায়। ভুটানের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচ জিতে আমরা বেশ আত্মবিশ্বাসী। এই ম্যাচে আমাদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে। কাতারকে আটকানোর জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। তাদের দুর্বলতা কাজে লাগাতে হবে।’ জেমি আরও বলেন, ‘মনে রাখতে হবে কাতার এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন। তদের দলটি অসাধারণ। কিন্তু ফুটবলে সবসময় চমক থাকে। সেরাটা দিতে পারলে ভাল ফলাফল সম্ভব।’ র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক পিছিয়ে থাকলেও কাতারের স্প্যানিশ কোচ ফেলিক্স সানচেজ বাংলাদেশকে খাটো করে দেখছেন না। র‌্যাঙ্কিংকে একটা সংখ্যা হিসেবে অভিহিত করে কাতার কোচ বলেন, ‘প্রতিপক্ষ প্রতিপক্ষই। আমরা কোন দলকেই হাল্কাভাবে নিচ্ছি না। ভাল ফলাফল নিয়ে ফেরাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’ বাছাইপর্বে এখন পর্যন্ত দু’টি ম্যাচ খেলেছে কাতার। দু’টিই ঘরের মাঠে। গত ৫ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে মিশন শুরু করলেও ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে হতাশ হতে হয় আলী, হাসানদের। এরপরও গ্রুপে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে কাতার। অন্যদিকে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত খেলেছে একটি ম্যাচ। ১০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ওই ম্যাচটি খেলতে হয়েছে নিরপেক্ষ ভেন্যু তাজিকিস্তানের দুশানবেতে। ভাল খেলেও ম্যাচটিতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১-০ গোলে হারতে হয় জামাল, রবিউলদের। এ কারণে আজ নিজেদের চেনা মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা বাংলাদেশের।
×