ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রতিরোধে দুদকের ২০ সুপারিশ

গণপূর্তের অবকাঠামো নির্মাণে ১০ দুর্নীতি

প্রকাশিত: ১১:০২, ১০ অক্টোবর ২০১৯

গণপূর্তের অবকাঠামো নির্মাণে ১০ দুর্নীতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদফতরের অবকাঠামো নির্মাণে ১০ দুর্নীতির উৎস খুঁজে পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে এসব উৎস বন্ধ করে দুর্নীতি প্রতিরোধে ২০ দফা সুপারিশও করেছে সংস্থাটি। বুধবার সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের কাছে দুদকের কমিশনার মোজাম্মেল হক খান এ সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন তুলে ধরেন। রিপোর্টে অবকাঠামো নির্মাণে ঠিকাদাররা সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায় ও কোন কোন কারণে এসব দুর্নীতি হয় তাও উল্লেখ করেছে। দুর্নীতিবিরোধী রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি প্রশাসনিক মোট ২৫টি মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির খুঁজে মাঠে নেমেছে। এরই অংশ হিসেবে এ রিপোর্ট জমা দেয় দুদক। প্রতিবেদনে বলা হয়, দরপত্র প্রক্রিয়াতেই দুর্নীতি সবচেয়ে বেশি হয় বলে দুদকের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। যথাযথভাবে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করা, অপছন্দের ঠিকাদারকে কাজ না দেয়া, অস্বাভাবিক মূল্যে প্রাক্কলন তৈরি, ছোট ছোট প্যাকেজে প্রকল্প প্রণয়ন, দরপত্রের শর্ত উপেক্ষা করা, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা, প্রকল্প প্রণয়ন করা, তদারকি, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কাজে ধীরগতি, প্রয়োজনের তুলনায় কম বরাদ্দ, প্রকল্পের অনাবশ্যক ব্যয় বৃদ্ধি, স্থাপত্য ও কাঠামোগত নক্সা চূড়ান্তে বিলম্ব করা, প্রত্যাশী সংস্থার প্রয়োজনমতো জরুরী ভিত্তিতে কাজ শেষ না করা, সেবা প্রদানের বিভিন্ন স্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসহযোগিতা, সময়মতো ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ না করা এবং বরাদ্দ থাকার পরও ঠিকাদারদের আংশিক বিল পরিশোধ করার কথা বলা হয়। সচিবালয়ে দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের সামনে গণপূর্ত অধিদফতরের দুর্নীতির উৎসগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। দরপত্র প্রক্রিয়া : দরপত্র প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি খুঁজে পেয়েছে দুদক। যেমন : অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রাক্কলন, দরপত্রের তথ্য ফাঁস, সমঝোতার নামে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এজেন্ট ঠিকাদার নিয়োগ, বার বার নির্মাণকাজের নক্সা পরিবর্তন, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার, টেন্ডারের শর্তানুসারে কাজ বুঝে না নেয়া, কোন কোন ক্ষেত্রে মেরামত বা সংস্কার কাজের নামে ভুয়া বিল ভাউচার করে অর্থ আত্মসাত, উর্ধতন কর্মকর্তা বা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বেনামে বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে ঠিকাদারি কাজ পরিচালনা, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ এবং ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর অনৈতিক সুবিধালাভ। গণপূর্ত অধিদফতরের বৃহৎ পরিসরের কাজ ছাড়াও মেরামত, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ রয়েছে। এ বরাদ্দের বিপরীতে কাজগুলো ছোট ছোট লটে ভাগ করা হয়। এ সব কাজ তাদের পছন্দের ঠিকাদারদের দেয়ার জন্য ই-জিপিতে না গিয়ে গোপন দরপত্রের মাধ্যমে কাজ দেয়া হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে তা উঠে আসে। রিপোর্টে বলা হয়, অনেক ক্ষেত্রে অপছন্দের ঠিকাদারকে ‘নন রেসপনসিভ’ করা হয় এবং কৌশলগত হিসাবের মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারকে রেসপনসিভ করা হয়। যেমন : বর্তমানে ই-জিপির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হলেও আগেই গোপন সমঝোতার মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারকে রেট জানিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া পছন্দের ঠিকাদারের যেসব অভিজ্ঞতা রয়েছে সেসব অভিজ্ঞতার শর্ত জুড়ে দেয়া হয়, যাতে করে অন্য কোন ঠিকাদার ওই দরপত্রে অংশ নিতে না পারেন। অস্বাভাবিক মূল্যে প্রাক্কলন তৈরি ॥ সরকারী বাজেটের একটি অংশ ঠিকাদারের যোগসাজশে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে শিডিউল রেটের বাইরে গিয়েও অনেক ক্ষেত্রে প্রাক্কলন তৈরি করা হয়। ছোট ছোট প্যাকেজে প্রকল্প প্রণয়ন, বড় বড় প্রকল্প বিশেষ করে ৩০ কোটি টাকার উর্ধে প্রকল্প প্রণয়নের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। অনেক সময় অসৎ উদ্দেশ্যে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের দায় এড়ানোর জন্য ছোট ছোট প্যাকেজ করে প্রাক্কলন প্রণয়ন, অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। যেমন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ডেলিগেটেড ওয়ার্ক হিসেবে গণপূর্ত অধিদফতরের নির্মাণাধীন ছয়টি ভবনে আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজের জন্য দাফতরিক প্রাক্কলন প্রণয়ন করে ছয়টি প্যাকেজে ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। শর্তানুসারে বাস্তবায়ন না করা ॥ বর্তমানে গণপূর্ত অধিদফতরের অধিকাংশ ক্ষেত্রে ই-জিপি টেন্ডারিং প্রক্রিয়া অনুসরণ করলেও তার শর্তানুসারে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন না করে কোন কোন ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ঠিকাদারের চাপে বা একশ্রেণির প্রকৌশলী/কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাত করা হয়ে থাকে। ঠিকাদার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রচলিত প্রথায় পরিণত হয়েছে। কাজ পাওয়ার জন্য অনেক সময় বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি, পরামর্শক সংস্থা, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উৎকোচ প্রদান করতে হয়। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ॥ গণপূর্ত অধিদফতরের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প বা নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট, রড, সিমেন্ট ও বালু ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে যে অনুপাতে সিমেন্ট-বালি মেশানোর কথা, তা না করে বালির পরিমাণ বেশি মেশানো হয়। এছাড়া যে ধরনের রড নেয়ার কথা, তা না করে কম মেজারের রড এবং রডের ঘনত্ব কমিয়ে দেয়া হয়। প্রকল্প তদারকিতে ধীরগতি ॥ প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত গণপূর্ত অধিদফতরের প্রয়োজনের তুলনায় জনবল আনুপাতিক হারে কম থাকায় প্রকল্প প্রণয়ন, তদারকি, বাস্তবায়ন এ পরিবীক্ষণ কাজে ধীরগতির অভিযোগ রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় কম বরাদ্দ ॥ ভবনের মেরামত, সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য যে পরিমাণ বরাদ্দ প্রয়োজন, এর এক-তৃতীয়াংশ পাওয়া যায় না। যথাসময়ে বরাদ্দ ছাড়ের অভাবে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বিঘিœত হয়। এতে রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চাহিদা মাফিক করা সম্ভব হয় না। অনাবশ্যক ব্যয় বৃদ্ধি ॥ প্রকল্প ছক সংশোধন করে অনাবশ্যক প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়। মূলত আর্থিক মুনাফার প্রত্যাশায় প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও ঠিকাদার ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ব্যয় বৃদ্ধি করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। নক্সা চূড়ান্তে দেরি : পর্যাপ্ত লোককবলের অভাবে স্থাপত্য অধিদফতর প্রায়ই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাহিত নক্সা সরবরাহ করতে সক্ষম হয় না। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব ঘটে। জরুরীভিত্তিতে কাজ না করা ॥ কর্মকর্তাদের অবহেলা, সাদিচ্ছা ও তদারকির অভাবে প্রাক্কলন তৈরি থেকে শুরু“করে দরপত্র আহ্বান কার্যাদেশ প্রদান এবং কাজ শেষ প্রত্যাশী সংস্থার চাহিদামতো জরুরীভিত্তিতে করা হয় না বলে জনশ্রুতি রয়েছে। অসহযোগিতা ॥ পূর্ত অধিদফতরের আওতাধীন বিভিন্ন সরকারী দফতর, অধিদফতর বা সরকারী কোয়ার্টারের মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণসহ সেবা দিতে বিভিন্ন স্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসহযোগিতার অভিযোগ বাড়ছে। বিল পরিশোধ সময়মতো না করা ॥ অনেক সময় প্রকল্পের কাজ শেষে ঠিকাদার বিল দাখিল করলেও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা নির্বাহী প্রকৌশলী নানা অজুহাত দেখিয়ে বিল আটকে রাখেন। এক্ষেত্রে যে সব ঠিকাদারের সাথে আর্থিক সমঝোতা হয় সে সব ঠিকাদারের বিল আগে পরিশোধ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে বরাদ্দ খাকা সত্ত্বেও ঠিকাদারদের আংশিক বিল পরিশোধ করা হয়। এক্ষেত্রেও যে সব ঠিকাদারের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতা হয় তাদের বিল আংশিক পরিশোধ না করে পুরো বিল পরিশোধ করা হয়। ২০ দফা সুপারিশ ॥ এসব দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে দুদক ২০ দফা সুপারিশ করে। এগুলো হচ্ছে, দুর্নীতি প্রতিরোধে গণপূর্ত অধিদপ্তরে ই-জিপি দরপত্র প্রক্রিয়া সার্বিকভাবে বাস্তবায়ন, ই-জিপি প্রক্রিয়ায় যাতে কোনো দুর্নীতি বা জালিয়াতি না হয় সেজন্য ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের দপতরে প্রকিউরমেন্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ও উচ্চ ডিগ্রীসম্পন্ন প্রকৌশলীদের নিয়ে কাউন্টার টেকনিক্যাল ইউনিট গঠন করা। প্রকল্প নির্বাচন করার সময় ওই প্রকল্পের যথার্থতা বা উপযোগিতা আছে কিনা তা গণপূর্ত অধিদফতর ও চাহিদা প্রদানকারী সংস্থাকে নিশ্চিত করা। প্রকল্প বাস্তবায়নে যাতে অহেতুক অযৌক্তিক সময় বাড়ানো না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখা। কোন ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে জরিমানা আরোপ। প্রাক্কলন প্রস্তত এবং দরপত্রের আর্থিক ও কারিগরি প্রস্তাব মূল্যায়নের সময় স্থানীয় দরপত্রের ক্ষেত্রে প্রত্যাশী সংস্থা বা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও আন্তর্জাতিক দরপত্রের ক্ষেত্রে দাতা সংস্থার প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা। সুপারিশে বলা হয়, নথি নিষ্পন্নের ক্ষেত্রে ই-ফাইলিংয়ের সর্বাত্মক ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন একইসাথে ঠিকাদারের বিল চেকের পরিবর্তে সরাসরি ঠিকাদারের অ্যাকাউন্টে অনলাইন ট্রান্সফারের ব্যবস্থা করা। নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন পরবর্তী একটি যৌক্তিক সময় পর্যন্ত ওই কাজের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিজ খরচে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উপর অর্পণ করা। গণপূর্ত অধিদফতরের ট্রেনিং একাডেমি ও টেস্টিং ল্যাবরেটরিকে আধুনিক করে গড়ে তোলা দরকার। তাছাড়া প্রতিটি জেলা নির্মাণ মালামালের গুণাগুণ পরীক্ষার জন্য ছোট আকারে টেস্টিং ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। নগর উন্নয়ন সংক্রান্ত অনুমোদিত মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন। প্রকৌশলীদের নিয়মিত সুপারভিশনের মাধ্যমে কাজের মান নিশ্চিত করা। গণপূর্ত অধিদপ্তরের যেসব কর্মকর্তা নামে-বেনামে ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে জড়িত, তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া। প্রকল্পের প্রাক্কলন প্রণয়ন ও প্রাক্কলিত কাজের বাস্তবায়ন পৃথক দুটি ইউনিটের ওপর ন্যস্ত করা। পরামর্শক সংস্থার প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণ ও পূর্ব-যোগ্যতা মূল্যায়ন করে ঠিকাদারদের নিবন্ধন ও সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রণয়ন এবং তা ওয়েবসাইটসহ সর্বমহলে প্রচারের ব্যবস্থা করা বাঞ্ছনীয় বলে দুদক। অপরদিকে প্রকল্পের ক্রয়, নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে স্টেক হোল্ডারদের সমন্বয়ে গণশুনানি ও সামাজিক নিরীক্ষার আয়োজন করা যেতে পারে। নির্মাণকাজে গাফিলতি কিংবা এজেন্ট/ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটালে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও দায়িত্বগ্রাপ্ত প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। যে সকল প্রকৌশলী কাজের পরিমাণগত ও গুণগতমান নিশ্চিত করে বুঝে নিতে পারেন না বা ব্যর্থ হচ্ছেন তাদের নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত কাজে পদায়ন না করে যোগ্য এবং সাহসী কর্মকর্তাদের পদায়ন করা। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা এবং যৌক্তিক কারণ ছাড়া প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি না করার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার কথা বলে দুদক। সাংবাদিকদের দুদক কমিশনার বলেন, দুদক ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে টিম গঠন করেছে। এক একটি মন্ত্রণালয় সম্পর্কে এক একটি টিম। ২৫টির মধ্যে আজকের প্রতিবেদনটি পঞ্চদশ। এই প্রতিবেদনের মূল বিষয় হচ্ছে গণপূর্ত অধিদফতর। তিনি বলেন, এই প্রতিবেদনটি এক ধরনের পর্যবেক্ষণ বা সংক্ষিপ্ত জরিপ। এই কাজটি করতে এই মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা, স্টেক হোল্ডার, ঠিকাদার ও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন, এই মন্ত্রণালয়ের অডিট রিপোর্ট, বার্ষিক প্রতিবেদন সবকিছু পর্যালোচনা করা হয়েছে। প্রতিবেদন গ্রহণকালে গৃহায়নও ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, দুদকের এই প্রতিবেদনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হবে। এই প্রতিবেদন আমাদের কাজের গতি বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা আনতে এবং জবাবদিহির ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই গাইডলাইনকে আমরা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করব। এর ভিত্তিতে যদি তদন্ত করতে হয়, তাও করবো। তিনি বলেন, দায়সারা গোছের রিপোর্ট পেলাম আর দেখলাম, এটার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না।
×