অনলাইন ডেস্ক ॥ লো–কার্বোহাইড্রেট ও হাই প্রোটিন ডায়েট খাওয়া ও ভাজা–মিষ্টি–তৈলাক্ত খাবার যথাসম্ভব বর্জনের পরও যদি ওজন কমার হার মন মতো না হয়, তা হলে ধরে নিতে হবে গলদ রয়েছে অন্য কোথাও। সে ক্ষেত্রে লবণ বেশি খাওয়া হচ্ছে কি না, সে দিকে খেয়াল রাখুন। অনেকেই ধরে নেন, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ যখন নেই, কিডনির সমস্যাও নেই, তা হলে আর লবণ নিয়ে এত ভাবার কী আছে!
ভুলটা হয় এখানেই। চিকিৎসকদের মতে, ওজন নিয়ে যখন ভাবেন, লবণ নিয়েও ভাবতে হবে বইকি৷ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গবেষণা বা সমীক্ষায় প্রামণিত, অতিরিক্ত লবণ শরীরের জলের সঙ্গে মিশে জল জমিয়ে দেয় শরীরে। ফলে ওজন বাড়ে। তাই লবণ বেশি খেলে শরীরে এমন সব কাণ্ড শুরু হয় যে তার পর চেষ্টা সত্ত্বেও ওজন বশে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে৷
ডায়াটেশিয়ান সুমেধা সিংহের মতে, ‘‘নুন খুবই ভয়ানক খাবার। এক চিমটে কম দিলে যেমন স্বাদ খোলতাই হয় না, তেমনই এক চিমটে বেশি দিলেই শরীর নানা ভাবে জানান দিতে থাকে।’’ কেমন সে সব?
লবণের কাণ্ড:
পাতে লবণ না খেলে বা রান্নায় কম দিলেই যে সমাধান হবে, এমন নয়৷ কারণ প্রায় সব প্রসেসড ও ফাস্ট ফুডে লবণের মূল উপাদান সোডিয়াম থাকে প্রচুর৷ নিয়মিত এই সব খেলে, ওজন বাড়তে পারে৷
শরীরে জল একা জমতে পারে না। লবণের সঙ্গে মিশে জমে। যত লবণ খাবেন, তত জল জমবে৷ ওজনের উপর এর প্রভাব আছে৷ কম লবণ খেলে এই জল নিজেই বেড়িয়ে যেতে শুরু করে৷
নোনতা খাবার বেশি খেলে খিদে বাড়ে৷ ফলে ভুলভাল খাওয়াদাওয়া বাড়ে। ওবেসিটি ডেকে আনতে এই স্বভাব একাই একশো।
অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরে বেশি ইনসুলিন তৈরি হয়৷ বাড়ে চর্বি সঞ্চয়ের হার৷
কী করণীয়:
রেডি–টু–ইট ফুড, ইনস্ট্যান্ট নুডুলস ও সসে প্রচুর লবণ থাকে৷ নিয়মিত খাবেন না৷
চিজ যদি নিতান্ত খেতেই হয়, শেডার চিজের বদলে খান মোজারেলা৷ ক্যালোরি না কমলেও নুনটা অন্তত কমবে৷
আচার, কাসুন্দি, মেয়োনিজ ঠাসা থাকে লবণে৷ যথাসম্ভব বর্জন করুন৷ না পারলে লেভেলে ‘লো সোডিয়াম’ বা ‘নো অ্যাডেড সল্ট’ লেখা থাকলে তবে কিনুন৷
লবণ মেশানো বাদাম কিনবেন না৷ রাশ টানুন মুড়ি–চানাচুর, পাপড়, পকোরা, চিপসেও।
পিৎজা, পাস্তায় বেকন টপিংয়ের বদলে ভেজিটেবল টপিং দিন৷ সঙ্গে আরও খানিকটা চিজ বা হোয়াইট সস চেয়ে বসবেন না৷
সপ্তাহে বেশির ভাগ সময় কম লবণে বানানো ঘরের খাবার খান৷ লো ফ্যাট দুধ–দই–ছানা, ফল, শাক–সব্জি, মাছ, মাংস, ডিম রাখুন পাতে৷
লবণ কমাতে গিয়ে শরীরে যেন পটাশিয়ামের ঘাটতি না হয় সে দিকে খেয়াল রাখবেন৷ কাজেই কলা, আলু, মিষ্টি আলু, রাজমা, ওট, দুধ ইত্যাদি খান নিয়মিত৷
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা