ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেটে হোটেল কক্ষে প্রেমিক প্রেমিকার আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮

সিলেটে হোটেল কক্ষে প্রেমিক প্রেমিকার আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোটার সিলেট, অফিস ॥ নগরীর সোবহানীঘাটের হোটেল মেহেরপুরে আত্মহননকারী তরুণ মিন্টু দেব প্রেমিকাকে হত্যা করার আগে সে শনিবার দিবাগত রাতে জগন্নাথপুর পৌর এলাকার বাপন নামের একজনকে কুপিয়ে আহত করে। বর্তমানে বাপন চিকিৎসাধীন আছে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বাপনকে আহত করার পর মিন্টু চলে আসে সিলেটে। খবর দিয়ে তার কথিত প্রেমিকা রুমি পালকেও নিয়ে আসে সিলেটে। হোটেল কক্ষে শ্বাসরোধ করে সে রুমিকে হত্যা করে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, মিন্টু রুপচাঁদা কোম্পানির এসআরও হিসেবে কর্মরত ছিল। দরিদ্র পরিবারের সন্তান মিন্টুর বাড়ি জগন্নাথপুর পৌর এলাকার ‘জগন্নাথ বাড়িতে। তারা দুই ভাই ও দুই বোন। এর মধ্যে এক বোন ৬-৭ বছর আগে মারা গেছে। জৈন্তাপুরের নিজপাট গ্রামের বাসিন্দা রুমি পাল মিন্টুর সম্পর্কে মাসতুতো বোন। সে কারণে রুমির সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। রুমি জৈন্তাপুরের ব্র্যাক স্কুলে চাকরি করত। জানা যায়, সম্প্রতি রুমি পালের বিয়ে ঠিক হয়। প্রেমিক হিসেবে মিন্টু এটি মেনে নিতে পারেনি। রবিবার দুপুরে রুমিকে সিলেটে এনে রাতে হোটেল কক্ষে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর নিজে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে। রবিবার দুপুরে মুসলিম দম্পতি পরিচয়ে দু’জন হোটেলের ২০৬নং কক্ষে উঠে। রাত ১০টার দিকে দরজা ভেঙ্গে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ ধারণা করছে- মিন্টু দেব প্রথমে রুমী পালকে হত্যা করে। পরে রুমীর ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে সে আত্মহত্যা করে। হোটেলের একটি সূত্র রুমী পালের দুলাভাইয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, হোটেলে ওঠার পর সন্ধ্যার দিকে রুমী পাল তার দুলাভাইয়ের মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠায়। মেসেজটি ছিল এমন ‘হোটেল মেহেরপুরের ২০৬ নাম্বার কক্ষে আমরা আছি। আমরা আত্মহত্যা করছি...।’ মেসেজটি পেয়ে তিনি দ্রুত হোটেল মেহেরপুরে হাজির হন। রুমীর দুলাভাই হোটেলে এসে হোটেল কর্তৃপক্ষকে রুমটি খোলার কথা বলেন। তখন তারা বলেন, রুমে তো মুসলিম দম্পতি রয়েছেন। এভাবে রুমে ডাকা নিয়মের মধ্যে পড়ে না। পরে তিনি মোবাইল ফোনের মেসেজ দেখালে হোটেলের ম্যানেজার পুলিশকে বিষয়টি জানান। এরপর রুমে গিয়ে ডাকাডাকি করেও কোন সাড়া মেলেনি। একপর্যায়ে পুলিশ দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে দেখতে পায় দুটি মরদেহ। তখন রুমের ভেতরে মিন্টু দেবের মরদেহ রুমী পালের ওড়না দিয়ে ঝুলানো ছিল। আর রুমী পালের মরদেহ একটি বিছানাতে ডানদিকে মুখ করে শোয়ানো ছিল। কক্ষে আরেকটি বিছানা ছিল ফাঁকা। সেটি পরিপাটিও ছিল। ধারণা করা হচ্ছে দু’জনই একই বিছানাতে ছিলেন। ঘটনাস্থলে থাকা ওই দুলাভাইয়ের বরাত দিয়ে হোটেল সূত্রটি আরও জানায়- ‘মেয়েটির বিয়ে অন্যত্র ঠিক করেছিলেন তার পরিবারের লোকজন। বিষয়টি মানতে না পেরেই তিনি এই পথ বেছে নিয়েছেন। হোটেলে রেজিস্টার খাতা জব্দ করেছে পুলিশ। পাশাপাশি হোটেলে থাকা দু’জন লোককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
×