ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখনো সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত করা যায়নি ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৩:০৬, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮

ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখনো সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত করা যায়নি ॥ অর্থমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে ত্রুটিমুক্ত হয়নি তা স্বীকার করে বলেছেন, এসব প্রতিষ্ঠানকে ত্রুটিমুক্ত করতে সরকারের চেষ্টার কোন ত্রুটি নেই। শুধু চাইলেই একটা জিনিস পাওয়া যায় না, এটাকে কার্যকর করতে সময় লাগে। এখানে দেশতে হয় যে অনুশাসন ও বিধান আমরা করেছি, সেটা যেন প্রয়োগবাদী হয়। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ভবিষ্যতে ব্যাংকিংখাত ত্রুটিমুক্ত হবে বলে আমি আশাবাদী। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের আনীত বেসরকারি সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি সমর্থন করে সরকার ও বিরোধী দলের মোট ১০ সংসদ সদস্য পৃথক সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর মধ্যে ৭ জন সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর দু’মিনিট করে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ত্রুটিমুক্ত করতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের ব্যাংক সমূহের অনিয়ম ও ত্রুটি বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই শুরু হয়। এক সময় তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। ওই সময় ব্যাংকে ঋণ খেলাপীর সংখ্যা ৪০ ভাগেরও বেশি উঠে গিয়েছিল। বর্তমানে তা কমে দুই ডিজিটে অর্থাৎ ১০-১২ তে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার অনেক বড় বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। অনেক উচ্চপদস্থ ব্যাংক কর্মকর্তারা (ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর পর্যন্ত) তাদের বিভিন্ন রকমের শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে পরিচালনা পর্যদের পাশাপাশি তিন জন করে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি স্বীকার করে বলেন, এখনো সমস্ত ব্যবস্থাটি সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত নয়। কিন্তু আমাদের চেষ্টার কোন কমতি আছে বলে আমি মনে করি না। সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি উত্থাপন করে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, পৃথিবীর কোন দেশই বাংলাদেশের মতো এতো উন্নয়ন-অগ্রগতি করতে পারেনি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গোটা জাতি আজ গর্ববোধ করে। কিন্তু আর্থীক ও ব্যাংকিং সেক্টরটি নিয়ে কোন না কোন বিতর্ক, সমস্যা, সমালোচনা প্রায়ই আমাদের বিব্রত করে, বাকরুদ্ধ ও হতাশ করে। প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে যারা নিযুক্ত তাদের ব্যর্থতার কারণে ব্যাংকিং ও আর্থীক সেক্টর সঙ্কট ও বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এখাতে শুদ্ধাচার না হলে দেশকেই সঙ্কটে পড়তে হবে। অথচ এই ব্যর্থতার দায় সরকারকেও বহন করতে হচ্ছে। তাই ব্যর্থ ব্যাংকগুলোর লাইলেন্স বাতিল করা উচিত। আর করা ঋণ খেলাপী, অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের নাম জাতির সামনে প্রকাশ করা হোক। তিনি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনিয়ম ও ত্রুটিমুক্তভাবে পরিচালিত করার জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীত নিশ্চিত করারও দাবি জানান।
×