ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খনি দুর্নীতি: বিএনপি নেতা আলতাফের বিরুদ্ধে বিচারের বাধা কাটল

প্রকাশিত: ২১:২৩, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭

খনি দুর্নীতি: বিএনপি নেতা আলতাফের বিরুদ্ধে বিচারের বাধা কাটল

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচার কার্যক্রম চালানোর বাধা কেটেছে। বিএনপি নেতা আলতাফের বিরুদ্ধে মামলা বাতিল প্রশ্নে ২০০৮ সালে দেওয়া এক রুল খারিজ করে বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নেয়। ফলে এই আসামির বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচার কার্যক্রম চালাতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন মামলার বাদীপক্ষ দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। খুরশিদ আলম খান বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছে আদালত। এসময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ করলে তার জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করতেও বলেছে হাইকোর্ট। বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই যে অভিযোগপত্র দেয় দুদক, তাতে আসামিদের বিরুদ্ধে চীনা প্রতিষ্ঠান কনশোর্সিয়াম অফ চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়। খালেদাসহ আসামিরা মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেওয়া হয়। হাই কোর্টের ওই আদেশ আপীল বিভাগেও বহাল থাকায় আটকে যায় বিচার। দীর্ঘ সাত বছর পর সেই রুলের শুনানি করে বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাই কোর্ট বেঞ্চ ২০১৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তা খারিজ করে দেয়। একইসঙ্গে মামলার ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নিলে অন্য আসামিদের বিচারের বাধা কাটলেও এতদিন পর্যন্ত স্থগিত ছিল আলতাফ হোসেন চৌধুরীর বিচার কার্যক্রম। এবার সেই বাধাও কেটে যাওয়ায় নিম্ন আদালতে অভিযোগ গঠন পর্যায়ে থাকা এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফের বিচার কার্যক্রম চালাতেও বাধা কাটল। তবে ইতোমধ্যে মামলার ১৬ আসামির মধ্যে চারজনের মৃত্যু ও যুদ্ধাপরাধে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় বর্তমানে আসামির সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। আসামিদের মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ও বিএনপির মহাসচিব আব্দুল মান্নান, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এ আর ওসমানী এবং বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ যায়। এছাড়া যুদ্ধাপরাধে জামায়াতে ইসলামী নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম, মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, তৎকালীন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার প্রাক্তন পরিচালক মঈনুল আহসান, তৎকালীন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশারফ হোসেন এবং তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মো. আমিনুল হক।
×