ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষের পাশে-

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ২৮ জুলাই ২০১৭

মানুষের পাশে-

মানবের কল্যাণে মানুষের পাশে মঙ্গল ও শান্তির বার্তা নিয়ে সহায়তা ও আশীর্বাদের হাত বাড়ানোর মধ্যেই সম্পন্ন মানব ও মহৎ মানুষের মহানুভবতা অনুভূত হয়। উপলব্ধি হয় মানবতার জয়গান। মানুষ মানুষের জন্য চিরকাল সহায়ক শক্তি। মানুষই পারে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে, তার স্বপ্ন সাধ ও সুখ-শান্তির মধ্যে আলোক রশ্মি ছড়িয়ে দিতে। জাগতিক দুঃখ-কষ্টের বিপরীতে প্রশান্তির হাত বাড়াতে পারে মানুষ। আবার এই মানুষই মানুষকে হত্যা করে ধর্মের নামে, বর্ণের নামে, সম্পদের নামে। অসুস্থ, অসহায় মানুষের জীবনে আশার আলোকবর্তিকা হয়ে সুস্থ আর সহায়ের পথে এগিয়ে দিতে পারেন যারা, তারা মহানুভবতার স্বাক্ষর রেখে যান। মানবতাবোধের প্রদর্শক হিসেবে অনুপ্রাণিত করেন আরও মানুষকে। মানবতা যাতে লুণ্ঠিত না হয় ধুলায়, মঙ্গল ও কল্যাণের দিগন্ত না হয় অপসৃয়মাণ, সেজন্য যারা এগিয়ে আসেন সর্বাগ্রে তাদের পথ ধরে মানুষ অগ্রগতির সোপান খুঁজে পায়। মানব কল্যাণে নিবেদিত যারা, তারা পুণ্যবান, মহতীপ্রাণ। আর তাই নির্দ্বিধায় মানুষের দুঃখ-কষ্ট, বেদনা, যন্ত্রণা লাঘবে তাদের প্রতি বাড়িয়ে দেন আশীর্বাদের হাত, যে হাতের স্পর্শ মানুষকে জাগরণের দিকে নিয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কর্মনিষ্ঠা, মানবপ্রীতি, জনগণের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্যবোধ এবং তাদের কল্যাণ ও মঙ্গলে সব সময়ই একনিষ্ঠভাবে এগিয়ে এসেছেন। রাষ্ট্র ও জনকল্যাণই যার ব্রত। রাষ্ট্র ও জনকল্যাণে দৃঢ় নীতি ও প্রতিষ্ঠা তাকে সফল রাজনীতিক এবং রাষ্ট্রনায়কে পরিণত করেছে। রাজনীতি ও রাষ্ট্রনায়ক বা সরকার পরিচালক হিসেবেই নন, ব্যক্তিগত মহানুভবতা ও জনদরদী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণেও শেখ হাসিনা ত্রাতার আসনটুকু অর্জন করতে পেরেছেন। তার মানবিকতা ও মহানুভবতার অসংখ্য নজির রয়েছে। দরিদ্রজনের আর্থিক দুরবস্থা নিরসন, অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা, বিপদগ্রস্ত মানুষের সাহায্য, অসহায় মানুষে আশ্রয় প্রদান তার স্বভাব ও চরিত্রেরই অংশ। নারী, বৃদ্ধ ও শিশুর প্রতি তার বিশেষ পক্ষপাতিত্ব ও দায়বদ্ধতার কোন তুলনা হয় না। পুরনো ঢাকার নিমতলি দুর্ঘটনায় সর্বস্ব হারানো, অসহায় কয়েকজন মেয়েকে কন্যা হিসেবে গ্রহণ, তাদের বিবাহ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেয়া শেখ হাসিনার অগণিত সুকর্মের অন্যতম। এ পর্যন্ত তিনি সমাজের বিভিন্ন স্তরের কতশত মানুষের যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। তার ভেতরে দরদীমন, শিশুমন, মাতৃমন, সেবা ও কল্যাণদায়ী মন এতটাই সক্রিয় যে, তিনি মানুষের অভাব, দরিদ্র, কষ্ট, অসহায় ও বিপন্নতায় বিচলিত হয়ে পড়েন। যে কোন বয়সের মানুষই হোক না কেন, তাকে গুরুত্ব দেয়া, তার কথা শোনা এবং তার জন্য কিছু করা শেখ হাসিনার একটি বড় গুণ। তাই দেখা যায়, বিরল রোগে আক্রান্ত বারো বছরের মুক্তামণিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তার আগে শিশুটির চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছেন। তারই নির্দেশনায় সাতক্ষীরা থেকে মুক্তামণিকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় এবং মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। মুক্তামণির ডান হাতে পচন ধরেছে। যন্ত্রণায় সে ছটফট করছে। তার রোগটি এখনও শনাক্ত করা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শুরু থেকে তার চিকিৎসার খোঁজখবর নিচ্ছেন। চাঁদপুরের শাহরাস্তির মাথায় গাছ ভেঙ্গে পড়া দশ বছর বয়সী শিশু রাব্বীর চিকিৎসারও ব্যবস্থা করেন। দরিদ্র কৃষক সন্তানটির চিকিৎসার ফলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে স্মৃতিশক্তি বিলোপ হওয়ার সম্ভাবনাটি তিরোহিত হয়। এমনকি খালেদার পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসকালে ফেনীতে বোমায় আহত এসএসসি পরীক্ষার্থী অনিককেও চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়। দেশের অসুস্থ ও বর্ষীয়ান শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সংস্কৃতি কর্মীদের চিকিৎসার ভারও শেখ হাসিনা নিজে গ্রহণ করে তাদের শুশ্রƒষার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। শুধু সরকারে থাকা অবস্থায় নয়, বিরোধীদলের নেত্রী হিসেবেও তিনি সহায়তা ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে কখনও পিছপা হননি। মানবিক গুণাবলী, সহৃদয়তা, দেশ-জাতি অন্তঃপ্রাণা চারিত্রিক ঐশ্বর্য শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিশাল হৃদয় তিনিও ধারণ করেন। অসহায়, অসুস্থ, দুঃখী মানুষের জন্য এভাবে এগিয়ে আসা বিরল রাজনীতিক শেখ হাসিনা। কল্যাণে-মঙ্গলে প্রতিটি দেশবাসীর অন্তঃপ্রাণ তিনি চির জাগরূক হয়ে থাকেনÑ এই কামনা।
×