ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম ওয়াসাকে অতিরিক্ত ৩৮০ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

প্রকাশিত: ০০:১২, ২৪ জুন ২০১৭

চট্টগ্রাম ওয়াসাকে অতিরিক্ত ৩৮০ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চট্টগ্রামের পানি, স্যানিটেশন, এবং ড্রেনেজ অবকাঠামো উন্নয়নে অতিরিক্তি ৪ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসেবে)। বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) সহজ শর্তের ঋণ হিসেবে এই অর্থ পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে বন্দরনগরীরর ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য পানি ব্যবহারে সুবিধা পাবেন। শনিবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের বরাত দিয়ে জানানো হয়, চট্টগ্রাম ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রজেক্টের আওতায় এই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা হবে। এই অর্থ চট্টগ্রাম ওয়াসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ, ট্রান্সমিশন, বিতরণ নেটওয়ার্ক এবং পানি সরবরাহের অবকাঠামোগত উন্নতির পাশাপাশি স্যানিটেশন ও ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান তৈরিতে সাহায্য করবে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটান এলাকার মাত্র অর্ধেক মানুষ উন্নত পানি (পাইপের পানি) সুবিধার আওতায় আছেন। অপর্যাপ্ত স্যুয়ারেজ লাইন এবং অনুন্নত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নগরের জলাবদ্ধতা সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলে। এ অতিরিক্ত অর্থ এ সমস্যা সমাধানে সাহায্য করবে। এতে শহরের বস্তিবাসীসহ সবাই উপকৃত হবেন। জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় মদুনাঘাট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং পতেঙ্গা বুস্টার পাম্পিং স্টেশন নির্মাণের পাশাপাশি কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা বুস্টার পাম্পিং স্টেশন পর্যন্ত উৎপাদন এবং বিতরণ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি বড় পানি সঞ্চালন ব্যবস্থা নির্মাণ করবে। এটি হলে নতুন করে ১০ হাজার বাসা-বাড়ি পাইপের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সংযোগ সুবিধা পাবে। এছাড়া পুরনো ১৭ হাজার বাড়ির পানির বিদ্যমান সংযোগ ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে। প্রকল্পটির বিশ্বব্যাংক টিম লিডার সোমা ঘোষ মল্লিক বলেন, ১৯৯০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে নতুন করে আরও সাড়ে ছয় কোটি মানুষ নিরাপদ পানি ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে। তবুও বাংলাদেশের শহুরে জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও কম নিরাপদ পানি সুবিধার বাইরে রয়ে গেছে। চটগ্রামের মতো বিকাশমান শহর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার মুখোমুখি হচ্ছে। কিন্তু সে অনুপাতে নিরাপদ পানি সরবরাহ অবকাঠামো ও পরিসেবা পর্যাপ্ত নয়। এ প্রকল্প এক্ষেত্রে শহরটির পানি, স্যানিটেশন, নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং ওয়াসার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নত করতে সহায়তা করবে। উল্লেখ্য, প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্প সমাপ্তির তারিখ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে মার্চ ২০২০ করা হয়েছে। অতিরিক্ত অর্থায়নসহ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের মোট সহায়তার পরিমাণ ২১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার ( প্রায় ১ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা)। আইডিএ ঋণের বেশির ভাগ অনুদান কিংবা শূণ্য সুদ ঋণ। শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশের সার্ভিস চার্জসহ এ ঋণ পরিশোধে সময় পাওয়া যায় ৩৮ বছর। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তাকারী উন্নয়ন সহযোগিদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক অন্যতম। তারপর থেকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার অনুদান এবং সুদ-মুক্ত ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের সুদ-মুক্ত ঋণের সর্বোচ্চ অর্জনকারী দেশ।
×