ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সুপ্রীমকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ ॥ নীতিমালা প্রণয়নে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

প্রকাশিত: ০৭:৩১, ২৩ মে ২০১৭

সুপ্রীমকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ ॥ নীতিমালা প্রণয়নে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার॥ সুপ্রীমকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ করার জন্য দিকনির্দেশনা বা নীতিমালা প্রণয়নের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করে। পরে সেটি ৪৬ পৃষ্ঠায় সুপ্রীমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। গত ১৩ এপ্রিল সুপ্রীমকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ করার জন্য দিকনির্দেশনা বা নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে হাইকোর্ট। হাইকোর্ট পূর্ণাঙ্গ রায়ে উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ দেয়ার জন্য সাতটি শর্তসহ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ৪৬ পৃষ্ঠার এ রায়ে সাতটি যোগ্যতা নির্ধারণসহ কিছু মতামত দিয়েছে আদালত। তাতে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী কাউকে বিচারপতি নিয়োগ দেয়া যাবে না। বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে সাতটি সুপারিশ দেয়া হয়েছে। (১) রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, যেমন জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে। (২) মেধাবী, প্রাতিষ্ঠানিক ও উচ্চতর পেশাগত যোগ্যতাসম্পন্ন, সৎ এবং আইনী জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে। (৩) বিচারক হতে আগ্রহী প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত সুপ্রীকোর্টের ওয়েবসাইটে দিতে হবে। যাতে প্রধান বিচারপতি প্রার্থীর সাক্ষাতকার গ্রহণের মাধ্যমে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারেন। (৪) পেশাগত জীবনে একজন ব্যক্তির অর্জিত দক্ষতা ও পারদর্শিতাকে প্রথমত বিবেচনায় নেয়া উচিত। ভারতের আইন কমিশনের ৮০ তম প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী একজন বিচারকের পরিপক্কতা পেশাগত অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে একটি বয়সসীমা ধরা হয়েছে। সেই হিসেবে সুপ্রীমকোর্টের বিচারক মনোনয়নের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৪৫ বছর হওয়া উচিত। (৫) প্রধান বিচারপতি আপীল বিভাগের নিবন্ধিত আইনজীবীদের অগ্রাধিকার ও সুপারিশ ভিত্তিতে উচ্চ আদালতে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। তবে উচ্চ আদালতের বৃহৎ পরিসরে সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে এমন নিবন্ধিত আইনজীবীর ক্ষেত্রে বিবেচনা করা যেতে পারে। (৬) জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তিন বছরের কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিচারককে উচ্চ আদালতের বিচারক হিসেবে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা উচিত হবে না। (৭) অধস্তন আদালত থেকে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান যোগ্যতা হওয়া উচিত সততা। তবে মনে রাখা উচিত যে, একজন ব্যক্তি উচ্চ মেধাসম্পন্ন কিন্তু সে সৎ নয়। সেক্ষেত্রে তাকে যে কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া হলে তা হবে এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা। সুপারিশকৃত ব্যক্তির মধ্যে দ্বিতীয়ত থাকতে হবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সর্বোচ্চ প্রোফাইল, পেশাদারিত্ব, সততা এবং দক্ষতা।
×