ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৪ দফা দাবিতে এ. আই টেকনিশিয়ানদের ধর্মঘট, প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি

প্রকাশিত: ০১:৫০, ২১ মে ২০১৭

৪ দফা দাবিতে এ. আই টেকনিশিয়ানদের ধর্মঘট, প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চাকরী স্থায়ীকরণসহ চার দফা দাবিতে সারা দেশের এ. আই টেকনিশিয়ানরা প্রানি সম্পদ অধিদফতরে দুই ঘন্টা অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত এসব টেকনিশিয়ানরা রাজধানীতে জড়ো হয়ে সকাল ৯ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত কার্যত অবরুদ্ধ রাখে প্রানি সম্পদ অধিদফতর। পরে পুলিশি পাহাড়ায় তাদের একটি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে। ওই দলটিকে পুনরায় পুলিশি পাহাড়ায় প্রাণি সম্পদ অধিদফতরে পৌঁছে দেয়া হয়। বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ এ. আই টেকনিশিয়ান কল্যাণ সমিতির দাবির প্রেক্ষিতে দুপুর সাড়ে ১২ টায় তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন প্রাণি সম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আইনুল হক। তাদের আশ্বস্ত করলে ধর্মঘট সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়। এ. আই টেকনিশিয়ান, প্রাণি সম্পদ অধিদফতর ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ এ. আই টেকনিশিয়ান কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোঃ আজাদ হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, চাকরী স্থায়ীকরণের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছি। প্রাণি সম্পদ অধিদফতর আমাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করেনি। তাই আমরা প্রাণি সম্পদ অধিদফতর দুই ঘন্টা ঘেরাও করে রাখি। সকাল ৯ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত এই ঘেরাও কর্মসূচিতে ২ হাজার কর্মী অংশ নেয়। তিনি বলেন, আমরা এখানে অস্থায়ীভাবে সর্বোচ্চ ২০ বছর ধরে কাজ করছি। সরকারীভাবে বলা হয়েছিলো ৭ বছর পর আমাদের চাকরী স্থায়ী হবে। কিন্তু হয়নি। এর আগে ১ মে সারা দেশের এ. আই টেকনিশিয়ানরা কর্মবিরতি পালন করেছে। পরে ২ তারিখ আমাদেরকে আলোচনায় ডাকে অধিদফতর। তারা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে বললে, আমরা সাময়িকভাবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করি। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় আজকের এই কর্মসূচি। এ প্রসঙ্গে প্রাণি সম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আইনুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, বিভিন্ন দাবিতে এ আই টেকনিশিয়ানরা অধিদফতরের ভেতর র্যা লি ও সমাবেশ করেছে। তবে আমরা অবরুদ্ধ হইনি। বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, বৈঠক হয়েছে। তবে তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি কিছু বলবো না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান ও প্রাণী সম্পদ অধিদফতরে অবস্থান ধর্মঘট প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তেজগাঁও অঞ্চলের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সাত্যকি কবিরাজ জনকণ্ঠকে বলেন, এ. আই টেকনিশিয়ানরা প্রাণি সম্পদ অধিদফতরের ভেতরে র্যাণলি ও সমাবেশ করে তাদের দাবি দাওয়া উত্থাপন করেছে। তারা নিজেরাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। আমরা তাদের সহায়তা করেছি। ৪ দফা দাবির মধ্যে চাকরী স্থায়ীকরণ ছাড়াও মাঠ পর্যায়ে অবৈধ কৃত্রিম প্রজনন প্রদানকারীদের নিয়ন্ত্রণ, কৃত্রিম প্রজণন সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণী কমিটিতে সমিতির প্রতিনিধি অন্তভূর্ক্তকরণ ও একই ইউনিয়নে একাধিক এ. আই টেকনিশিয়ান নিয়োগ বন্ধ করার দাবি রয়েছে। উল্লেখ্য প্রাণি সম্পদ অধিদফতরের রাজস্ব সংগ্রহের প্রধান খাত কৃত্রিম প্রজনন। এ. আই টেকনিশিয়ানরাই কৃত্রিম প্রজননের কাজটি করে থাকে। প্রতিটি গাভীতে বীজ প্রয়োগে ৭০ টাকর ভেক্সিনে সরকারকে ৩০ টাকা রাজস্ব দিতে হয়। বাকি ৪০ টাকা দিয়ে এ. আই টেকনিশিয়ানদের জীবিকা চলে। এতে কোন কোন টেকনিশিয়ানদের মাসে মাত্র ২ হাজার টাকাও আয় হয়ে থাকে। আবার কারো ৫-৬ হাজার টাকাও আয় হয়। নির্মম এই পরিস্থিতিতে তারা মানবেতর জীবনযাপ করছে। দাবি দাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
×