ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছয়টি স্প্যান এখন জোড়া লাগানোর চূড়ান্ত পর্যায়ে

চীন থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে মাওয়ায় পৌঁছেছে পদ্মা সেতুর ৭ম স্প্যান

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২৯ এপ্রিল ২০১৭

চীন থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে মাওয়ায় পৌঁছেছে পদ্মা সেতুর ৭ম স্প্যান

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মাওয়া থেকে ফিরে ॥ পদ্মা সেতুর সপ্তম স্প্যান এখন মাওয়ায়। চীন থেকে সমুদ্রপথে সিঙ্গাপুর হয়ে এটি বুধবার মাওয়ায় এসে পৌঁছে। এর আগে আর ছয়টি স্প্যান মাওয়ার কুমারভোগের বিশেষ ওয়ার্কশপে পৌঁছায়। এগুলোর জোড়া লাগানোর কাজ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। কয়েক মাস আগেই প্রথম স্প্যানটি স্থাপনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সপ্তম এ স্প্যান ওয়ার্কশপে ফিটিংয়ের জন্য রাখা হয়েছে। বিশাল এ ওয়ার্কশপে প্রায় দুই হাজার ৯শ’ টন ওজনের প্রতিটি স্প্যান জোড়া লাগানো হচ্ছে ধাপে ধাপে। এদিকে চীনে আরও ১৩টি স্প্যান তৈরি করা হয়েছে। এগুলোও পর্যায়ক্রমে মাওয়ায় নিয়ে আসা হবে। পদ্মা সেতুর এ স্প্যান স্থাপনের জন্য একের পর এক পাইল বসানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত মূল সেতুর ৭১টি পাইল বসে গেছে। এরমধ্যে নদীতে ৫৮টি এবং ট্রানজিশন পিলারে বসেছে আরও ১৩টি পাইল। নদীতে ২৪০টি পাইলের মধ্যে ৫৮টি পাইল বসে যাওয়ায় মূল সেতুর কাজে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। বাকি পাইল স্থাপনে হরদম কাজ চলছে। জাজিরা প্রান্তের ৪২ নম্বর ট্রানজিশন পিলারের ১৬টি পাইলের মধ্যে ১৩টি পাইল স্থাপন হয়েছে। আরও দুটির কাজ চলছে এখন। তাই শীঘ্রই সর্বশেষ এ পিলারের কাজ শেষ হচ্ছে। এদিকে পাশের সংযোগ সেতুর (ভায়াডাক্ট) কাজও এগিয়ে চলেছে। ১৯৩টি পাইলের মধ্যে ইতোমধ্যেই ৮৫টি পাইল বসে গেছে। গ্রীষ্মের রোদ আর ঘন ঘন বৃষ্টি উপেক্ষা করে পদ্মার স্রোতের তালে তালে বিশ্বের অন্যতম এ সেতুর নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। এদিকে সেতুর বেয়ারিং পরীক্ষা চলছে চীনে। এ পরীক্ষা দেখতে ইতোমধ্যেই চীনে অবস্থান করছেন পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ও বিশেষজ্ঞ শামিমুজ্জামান বসুনিয়া। এদিকে শুক্রবার ইংল্যান্ড থেকে চীনে এসে পৌঁছেছেন এ বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য ব্রাউজ অস্টেন ফেন্ড। এর আগেই চীনে পৌঁছেছেন পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক সফিকুর রহমান ও উপ-প্রকল্প পরিচালক কামরুজ্জামান এবং সংশ্লিষ্ট পরাশর্মক কোরিয়ারন রবার্ড এভস। পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিজ চোখে দেখে তারা ২ মে দেশে ফিরবেন। মূল সেতুর কাজের এ গতি আরও বাড়িয়ে রেখে জুলাইয়ে তাক লাগিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এখন অনেকেই আসছেন সেতুর কাজ দেখতে। বাঙালীর গর্বের এ সেতুর অগ্রগতি আর হুলস্থুল কাজ দেখে বিস্মিত হয়েছেন নানা বয়সী মানুষ। এ সেতুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ছাড়াও গোটা দেশের অগ্রগতির যুগান্তকারী অধ্যায় রচিত হবে। আর সে সফলতার অগ্রগতি সরেজমিন দেখার জন্য দিন দিন ভিড় বাড়ছে। তবে নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করতে না পারলেও দূর থেকে দেখার সুযোগ মিলছে। বড় বড় ক্রেন আর ভারি যন্ত্র ব্যবহারের দৃশ্য এবং নির্মাণের নানা রকম শব্দ খুব কাছ থেকে দেখা ও শোনার সুযোগ পেয়ে মন ভরছে আগতদের।
×