ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিখোঁজ ১১, উদ্ধারকাজে নৌবাহিনীর ডুবুরি দল ॥ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি

পানগুছি নদীতে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ট্রলারডুবি, ৪ নারীর লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৯ মার্চ ২০১৭

পানগুছি নদীতে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ট্রলারডুবি, ৪ নারীর লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ জেলার মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদীতে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে খেয়া পারাপারের ইঞ্জিনচালিত যাত্রীবোঝাই একটি ট্রলার ডুবে গেছে। দুর্ঘটনার পর সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪ নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৫ জনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আরও কমপক্ষে ১১ যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। নিহতরা হলো মোরেলগঞ্জ উপজেলার কালিকাবাড়ি গ্রামের মহসিন হোসেনের স্ত্রী বিউটি বেগম (৩৮), গুয়াবাড়িয়া গ্রামের হাসেম হাওলাদারের স্ত্রী পিয়ারা বানু (৫০), চিংড়াখালী গ্রামের ইউনুস আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৭৫) এবং উত্তরফুলহাতা গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের স্ত্রী নাদিরা বেগম (২০)। জানা গেছে, মোরেলগঞ্জের ছোলমবাড়ীয়া খেয়াঘাট থেকে দুটি যাত্রীবাহী বাসের কমপক্ষে ৮০ যাত্রী নিয়ে উপজেলা সদরের পুরাতন থানা ঘাটে যাবার পথে পানগুছি নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। একটি দ্রুতগতির জাহাজের ঢেউয়ে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই ট্রলারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। পুলিশ, নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল আলম জানিয়েছেন। স্থানীয়দের সহায়তায় মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশ, নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ট্রলার ডুবির পর মোংলাগামী নৌবাহিনীর জাহাজ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রেবেকা খাতুন (৪৭), খাদিজা বেগম (৪০), সাবেক পুলিশ সদস্য শাজাহান তালুকদার (৬৫), আবুল খায়ের খোকাকে (৫৫) খুলনা মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়েছে। মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ফুলহাতা গ্রামের নাসিমা বেগম (৩০) ও তার দুই বছরের সন্তান। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল আলম, ফায়ার সাভিসের মোরেলগঞ্জ স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ হায়দার আলী ও উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের কাছ থেকে জানা গেছে, নাজমুল (৭), রাহাত (১০), আনছার হাওলাদার (৩৮), মোশারেফ হাওলাদার (৫০), সুলতান হাওলাদার (৪২), হাসিব (৬), নাদিরা আক্তার (১৭), সালমা বেগম (৩০), সাজ্জাদ (২), লাবনী আক্তার (৭) এখনও নিখোঁজ। এদিকে দুর্ঘটনাকবলিত স্থলে নদীর দু’পাড়ে নিহত ও নিখোঁজ স্বজনদের ভিড় আর আহাজারি বাড়ছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ঘটনা তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মোমিনুর রশিদকে প্রধান করে জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। জেলা প্রশাসক বলেন, কমিটিকে কার গাফলতিতে কিভাবে ট্রলারটি ডুবল তা তদন্ত করে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটিতে জেলা প্রশাসনের তিন কর্মকর্তাসহ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একজন করে রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের মোরেলগঞ্জ স্টেশন কর্মকর্তা হায়দার আলী আকন্দ বলেন, খুলনা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল গিয়ে উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দিয়েছে। তারা ডুবে যাওয়া ট্রলারটিকে শনাক্ত করেছেন। এসপি পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, ট্রলার ডুবির নির্দিষ্ট কারণ এখনই বলা যাচ্ছে না। উদ্ধারকাজ চালানোর পাশাপাশি আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।
×