ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা শুরু ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ১ জুলাই ২০১৬

নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা শুরু ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রমজান শেষের দিকে। আজ ছিলো রমজান মাসের শেষ শুক্রবার তথা পবিত্র জুমাতুল বিদা। সবার সব কাজ গুছিয়ে এবার বাড়ি ফেরার পালা। নাড়ির টানে বাড়ির পানে ছুটছে মানুষ। স্ব স্ব গন্তব্যে স্ব স্ব মাধ্যমে বাড়ি ফেরা শুরু হয়ে গেছে। আর এর ফলে চিরচেনা নগরীর রুপ পাল্টে যাচ্ছে। যানজটের নগরি ঢাকা ক্রমেই ফাঁকা হচ্ছে। যদিও বাড়ি ফেরার এই দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করেই। তবে তাড়াহুড়ো করে শেষ কর্মদিবস শেষে যারা যাননি আজ সকাল থেকেই ধরেছেন বাড়ির পথ। এই যাত্রা অব্যহত থাকবে চাঁদ রাত পর্যন্ত। যদিও অন্যান্য বারের মতো এবার পথের ভোগান্তি অনেক কম। সেই সাথে ঈদযাত্রায় ঘরে ফেরা মানুষদের তেমন ভোগান্তিতে পড়তে হবেনা বলেও মনে করা হচ্ছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরাও মনে করছেন এবার ভোগান্তি কম হবে। কেননা, সরকারের নির্বাহী আদেশে টানা ৯ দিনের ঈদের ছুটি পেয়েছেন সরকারি কর্মচারিরা। আজ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে সেই র্দীঘ ছুটির আমেজ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আগেভাগে লম্বা ছুটির কারণে ধাপে ধাপে মানুষ কমবে নগরিতে। আর সেই সাথে কমবে চাপও। আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মহাখালী, গাবতলী, সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট লঞ্চঘাট ও কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়ে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের যে চাপ ছিল তার তুলনায় আজকের ভিড় ছিল কিছুটা কম। বিভিন্ন বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, বাস আসছে আবার নির্দিষ্ট যাত্রী নিয়ে ছুটে যাচ্ছে গন্তব্যে। একাধিক পরিবহনের কর্মকর্তা ও কাউন্টারের কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যাত্রীদের বাসের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। কেউ কেউ অপেক্ষা করলেও সেই অপেক্ষার প্রহরটা দীর্ঘ হয়নি। তবে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, জামালপুর, নরসিংদীগামী গাড়িগুলোতে উঠতে লাইন দেখো গেছে। জানা গেছে এসব এলাকায় অগ্রীম কোন টিকেট দেওয়া হয়না। আর সে কারণেই আগে আসলে আগে ভিত্তিতে গাড়ির টিকেট দেয় এবং লাইনে দাঁড়াতে হয়। অবশ্য ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে যাওয়ার জন্য মহাখালী ও গুলিস্তানে ভিড় বেশি দেখা গেছে। তবে সার্বিক ভাবে এবার ঈদ যাত্রায় এখন পর্যন্ত তেমন ভোগান্তি ছাড়াই মানুষ ঢাকা ছাড়ছে। বাস, ট্রেন ও লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন আগামী ৩ ও ৪ জুলাই রবিবার ও সোমবার ভিড় বাড়বে। এর কারন হিসেবে তারা জানান, এ সময় বেসরকারি চাকরিজীবীদের ছুটি শুরু হবে। তবে তাঁদের ধারণা এবার ঈদের লম্বা ছুটি হওয়ায় অন্যান্য বারের মতো যাত্রীদের ভোগান্তি হবে না। এবারে ট্রেনের সময়সূচিতে বিপর্যয় নেই। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন আসছে। প্ল্যাটফর্ম ছেড়েও যাচ্ছে নির্ধারিত সময়ে। তাই যাত্রীদেরও নেই হুড়োহুড়ি। আজ শুক্রবার সকাল থেকে এ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মতে, পোশাকশিল্প কারখানাসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ছুটি ৩ ও ৪ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার পর ভিড় বাড়বে। কমলাপুর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত ট্রেনের সময়সূচিতে কোনো বিপর্যয় দেখা দিলে প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ কারণে প্রচণ্ড ভিড় হয়। আজ নির্ধারিত সময়ে ট্রেন আসায় এবং ছেড়ে যাওয়ায় যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। তাই কোনো ভিড় নেই। এছাড়াও, সদরঘাটে সকালের দিকে উপচে পড়া ভিড় ছিল না। তবে বিকেলের দিকে বরিশালগামী লঞ্চগুলো ছাড়বে। ওই সময়ে এখানে ভিড় বাড়বে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। এদিকে, নগরির মানুষগুলো বাড়িমুখী হওয়ার কারণে রাজধানীতে ফাঁকা ফাঁকা ভাব বিরাজ করছে। যদিও আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি, রাস্তাঘাট এমনিতেই ফাঁকা। তবে নগরির মানুষগুলোর ধারণা আগামী কয়েক দিন আর যানজট হবে না রাজধানীতে। রাস্তায় গাড়ির চাপ কম থাকলেও রাজধানীর মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে ভিড় বাড়ছে। সকাল থেকেই মার্কেটকেন্দ্রীক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। যারা এখনো বাড়ি যাননি বা ছুটি পাননি তারা পরিবার ও নিজের জন্য করে নিচ্ছেন শেষ মুহুর্তের কেনাকাটা। এছাড়াও নগরির বসবাসরত মানুষতো আছেই। সব মিলিয়ে, কিছু মানুষ প্রিয়জনদের সাথে আনন্দে মেতে উঠতে জমায়েত হচ্ছে স্টেশন ও টার্মিনাললে আর কিছু মানুষ পরিবারের সুখ খুঁজে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন মার্কেটে মাকের্টে।
×