ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

চেলসির জালে আর্সেনালের ৫ গোল

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চেলসির জালে আর্সেনালের ৫ গোল

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চেলসিকে উড়িয়ে জয় উদ্যাপন করছেন আর্সেনালের ফুটবলাররা

দুই ইংলিশ জায়ান্ট চেলসি ও আর্সেনালের মধ্যে লড়াই সব সময় উত্তাপ ছড়িয়ে থাকে। তবে ইদানীং চেলসির পতন চোখে পড়ার মতো। দলটি এখন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সেরা চারেও থাকতে পারছে না। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গেও দিতে পারছে না টেক্কা। যার নমুনা আরেকবার দেখা গেছে প্রিমিয়ার লিগে। 
মঙ্গলবার রাতে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। লন্ডনের বিখ্যাত এমিরেটস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে চেলসিকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে আর্সেনাল। বিশাল এই জয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ওঠার পাশাপাশি দীর্ঘদিন পর শিরোপা জয়ের স্বপ্নও ভালোমতো টিকিয়ে রেখেছে গানার্সরা। বর্তমানে ৩৪ ম্যাচে আর্সেনালের ভান্ডারে জমা সর্বোচ্চ ৭৭ পয়েন্ট। ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে নয় নম্বরে আছে চেলসি।

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আর্সেনালের হয়ে দুটি করে গোল করেন জার্মান ফরোয়ার্ড কেই হার্ভাটজ ও ইংলিশ ডিফেন্ডার বেন হোয়াইট। বিজয়ী দলের হয়ে অপর গোলটি করেন লিনড্রো ট্রোসার্ড। এটা চেলসির বিরুদ্ধে প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বড় জয় আর্সেনালের। 
ম্যাচ শুরুর আগেই চেলসি বড় ধাক্কা খায় ডেঞ্জারম্যান কোল পালমার খেলতে না পারায়। অসুস্থতার কারণে তিনি দল থেকে ছিটকে পড়লে ব্লুজরা অনেকটাই মুষড়ে পড়ে। এবারের মৌসুমে চেলসির প্রায় ৫০ শতাংশ গোল হয় পালমার নিজে করেছেন অথবা অ্যাসিস্ট করেছেন। তার অনুপস্থিতি সফরকারীরা ভীষণভাবে অনুভব করে। কোচ মরিসিও পোচেত্তিনোর দল প্রথম মৌসুমে মোটেই সফল হতে পারেনি।

এফএ কাপের সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে হারের আগ পর্যন্ত চেলসি টানা আট ম্যাচে অপরাজিত ছিল। আর্সেনাল সবশেষ ঘরের মাঠের ম্যাচে অ্যান্টন ভিলার কাছে পরাজিত হয়ে কিছুটা আত্মবিশ^াসের ঘাটতিতে ভুগছিল। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি চেলসি। 
এমিরেটস স্টেডিয়ামে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যায় আর্সেনাল। ২০২৩ সালের জনুয়ারিতে মিখাইলো মাড্রিককে দলে ভেড়ানোর লড়াইয়ে চেলসির কাছে হার মানে আর্সেনাল। কিন্তু বেলজিয়ান ট্রোসার্ডও যে আর্সেনালের জন্য সাফল্য এনে দিতে পারেন তা এবার বেশ কিছু ম্যাচে তিনি প্রমাণ দিয়েছেন। পোস্টের খুব কাছে থেকে চেলসি গোলরক্ষক ডোরিয়ে পেট্রোভিচকে পরাস্ত করে ট্রোসার্ড আর্সেনালকে এগিয়ে দেন। মৌসুমে এটি তার ১৫ নম্বর গোল। প্রথম গোলের ভুলের মাশুল দুটি দারুণ সেভ করে ভালোভাবেই দিয়েছেন পেট্রোভিচ। হাভার্টজের লো শট ও ট্রোসার্ডের ডিফ্লেকটেড শট বিরতির আগে পেট্রোভিচ রক্ষা করেন। 
বিরতির পরপর ডিক্লান রাইস ও হাভার্টজের শট রুখে দেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক। তা না হলে চেলসির লজ্জার বহর আরও বড় হতে পারতো! কিন্তু ৫২ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি। হোয়াইটের কার্লিং শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্সেনাল। দুই বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে হাভার্টজের একমাত্র গোলে শিরোপা জিতেছিল চেলসি।

পশ্চিম লন্ডনে তিন বছরের মেয়াদে যে ধরনের পারফরম্যান্স হাভার্টজ করেছিলেন তা আর্সেনাল কোচ আর্তেতার অধীনে প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে এ ম্যাচে হাভার্টজ দুর্দান্ত খেলেছেন। মার্টিন ওডেগার্ডের থ্রু বলে দারুণ ফিনিশিংয়ে জার্মান ফরোয়ার্ড বল জালে জড়ান। ৬৫ মিনিটে বুকায়ো সাকার পাসে নিজের দ্বিতীয় গোল পূর্ণ করেন হাভার্টজ। 
এ নিয়ে শেষ ১৪ ম্যাচে তিনি সপ্তম গোল করেছেন। পাঁচ মিনিট পর ওডেগার্ডের আরও একটি দারুণ পাস থেকে হোয়াইট বল জালে জড়ালে বড় জয় নিশ্চিত হয় আর্সেনালের। রবিবার পরবর্তী ম্যাচে লন্ডন ডার্বিতে আর্সেনালের প্রতিপক্ষ টটেনহ্যাম হটস্পার। ম্যাচ শেষে আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতা বলেন, আমরা সমর্থকদের গর্বিত করেছি। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় ডার্বি ছিল। আমি জানি এর অর্থ কতটা বড়। ম্যাচের শুরুটা দারুণ হয়েছিল। কিন্তু আমরা সব সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। বেশকিছু স্থানে আমরা কিছুটা ধীরে খেলেছি। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা আরও বেশি সংঘবদ্ধ হয়ে খেলেছি। 
এ কারণেই সুযোগও বেশি এসেছে। অন্যদিকে বড় হারে বিধ্বস্ত চেলসি কোচ পোচেত্তিনো বলেন, এমন ফলাফল মেনে নেওয়া সত্যিই কঠিন। কারণ ম্যাচের শুরুর মতো শেষটা ভালো হয়নি। আমরা লড়াই করতে পারিনি। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত ছিল।

×