ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ‘ডু অর ডাই’

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১১ জুন ২০১৭

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ‘ডু অর ডাই’

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ আজ। সমান একটি করে জয় ও একটি করে পরাজয়ে বি গ্রুপের অপর দু’দল শ্রীলঙ্কা আর পাকিস্তানের পয়েন্ট এখন সমান ২। সোমবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা। চার দলের জন্যই সমীকরণটা সহজ, যারা জিতবে তারাই পাবে সেমিফাইনালের টিকেট, হারলে বিদায়। ভারত-দাক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ সে অর্থে অঘোষিত কোয়ার্টার ফাইনাল। ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন ভারত আসরের অন্যতম ফেবারিট। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে সেভাবেই শুরু করেছিল বিরাট কোহলির দল। কিন্তু ৩২১ রানের বড় স্কোর গড়েও শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর বদলে গেছে সমীকরণ। চ্যাম্পিয়নদের সেমিতে ওঠা এখন অনেকটাই অনিশ্চিত। ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচটা যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, যাঁরা ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল, প্রোটিয়ারাও হট-ফেবারিট। যেহেতু ‘বি’ গ্রুপের চার দলের পয়েন্ট সমান তাই বৃষ্টিতে কোন একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে নেট রানরেট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। সেক্ষেত্রে অবশ্য ভারত (১.২৭) অনেকটাই এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা (১.০০), শ্রীলঙ্কা (-০.৮৭) ও পাকিস্তানের (-১.৫৪) চেয়ে। ৩২১ রানের বড় স্কোর গড়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে কাগজে-কলমে দুর্বল লঙ্কানদের কাছে ৭ উইকেটের বড় হারের পর অনেকের মনে প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে ভারত আদৌ সেমিতে উঠতে পারবে তো? নাকি আজই বিদায় নেবে? অধিনায়ক কোহলি বলেন, ‘এখন প্রত্যেকটা ম্যাচই কোয়ার্টার ফাইনাল। আমাদের গ্রুপের প্রত্যেকটা দলের কাছে দু’পয়েন্ট রয়েছে। তাই সেমিতে উঠতে হলে জিততেই হবে। আমার মনে হয় এটাই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আভিজাত্য। সেরা আটটি দলের টুর্নামেন্টে এমন রোমাঞ্চকর লড়াই সবাই দেখতে চায়। দর্শকরা নিশ্চয়ই খুশি। ক্রিকেটপ্রেমীরা কার্যত দুইটা কোয়ার্টার ফাইনাল দেখতে পাবেন। একটা ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা, আর একটা পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ। পয়েন্ট তালিকা সম্পর্কে আমরা যথেষ্ট সতর্ক। ম্যাচটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা নতুন করে বলে দেয়ার প্রয়োজন নেই।’ এত বড় স্কোর গড়ে হারের দায় অবশ্যই বোলারদের। কোহলি যতই তার বোলারদের আড়াল করার চেষ্টা করুন, তথ্য কিন্তু অন্য কথা বলছে। হারদিক পান্ডিয়া প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। সাত ওভার হাত ঘুরিয়ে একটি মেডেনসহ ৫১ রান দেন তিনি। একই অবস্থা রবীন্দ্র জাদেজারও। ৬ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৫২ রান। একটা সময় বিরাট কোহলিকে বল হাতে তুলে নিতে হয়েছিল। মূলত স্পেশালিস্ট বোলারদের ব্যর্থতা ভারতকে চাপে ফেলে দিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কোহলি হয়তো দুই স্পেশালিস্ট স্পিনার খেলাতে চাইবেন। সেক্ষেত্রে ঘূর্ণিবলের বড় নাম রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ফেরাটা প্রায় নিশ্চিত। কারণ প্রোটিয়া বাহিনী স্পিনের বিরুদ্ধে স্বাচ্ছন্দ্য নয়। পেস হারদিক বাদ পড়তে পারেন, মোহাম্মদ শামিকে ফেরানো হলে কোপ পড়বে যশপ্রীত বুমরাহর ওপর। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কাকে ৯৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকা বৃষ্টিবিঘিœত দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারে ১৯ রানে (ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে)। প্রোটিয়া তারকা পেসার মরনে মরকেল বলেন, ‘ম্যাচটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতকে হারাতে একটা দল হিসেবে খেলতে হবে, সেরাটা দিতে হবে। পাকিস্তান ম্যাচে যা হয়েছে সেটা মাথায় রাখতে চাই না। সেটা ভুলে গিয়ে প্রথম ম্যাচের মতো নিজেদের সামর্থ্যরে সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়তে হবে।’ প্রতিপক্ষ অধিনায়ক সম্পর্কেও সচেতন তিনি, ‘বিরাট কোহলি ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যান। ওকে দ্রুত ফিরিয়ে দিতে হবে। গোটা ভারতীয় ব্যাটিংই সমৃদ্ধ। কাগিসো রাবাদা আর ইমরান তাহিরকে নিয়ে আমাদের বোলিংও ভাল। আমরা আশাবাদী।’ পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২১৯ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলে বড় তারকা ও অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের ফর্ম ভাল নয়। প্রথম ম্যাচে ৪ রানে আউট হওয়া এবি এদিন রানের খাতাই খুলতে পারেননি। অধিনায়ককে নিয়ে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো অবশ্য আশাবাদী, ‘যে কেউই প্রথম বলে আউট হতে পারে। এবিকে নিয়ে আমি মোটেই চিন্তিত নই। ভারত ম্যাচে তার কাছ থেকে ভাল একটা ইনিংস আশা করছি। সে এমন একজন ব্যাটসম্যান যে দলের প্রয়োজনে ঠিকই জ্বলে উঠতে জানে।’ ১৯৯১ থেকে মুখোমুখি ৭৬ ওয়ানডের ৪৫টিতে জয় দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারতের জয় ২৮। পরিত্যক্ত ৩। মুম্বাইয়ে ২০১৫’র অক্টোবরে শেষ দেখায় ২১৪ রানের বড় জয়ে ৩-২এ সিরিজ জিতেছিল ডি ভিলিয়ার্সের দক্ষিণ আফ্রিকা। সেদিন সেঞ্চুর হাঁকিয়েছিলেন তিন তারকা ডি ভিলিয়ার্স, কুইন্টন ডি কক ও ফ্যাফ ডুপ্লেসিস।
×