ছবি: সংগৃহীত
ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলের ঘটনা বর্তমানে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা এই ধরনের সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন বেশি। তবে ভয় না পেয়ে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব।
কী ধরনের ঘটনা ঘটে সাধারণত?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গড়ে ওঠা সম্পর্কের সূত্র ধরে ব্যক্তিগত কিছু ছবি বা ভিডিও আদান-প্রদান হয়। পরে সম্পর্ক ভেঙে গেলে কিংবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সেই তথ্য ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। আবার অনেক সময় মোবাইল হ্যাক কিংবা ক্লাউড থেকে ডেটা চুরি করে এই ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়।
করণীয় কী?
১. ভয় না পেয়ে প্রমাণ সংরক্ষণ করুন: প্রথমেই ব্ল্যাকমেইল সংক্রান্ত সমস্ত স্ক্রিনশট, বার্তা, ইমেইল বা কল রেকর্ড প্রমাণ হিসেবে সংরক্ষণ করুন।
২. সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ করুন: কাছের থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন। যদি এটি গুরুতর হয়, তাহলে মামলা করতে পারেন।
৩. সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ: বাংলাদেশ পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন (ডিবি, সিটিটিসি) বা সিআইডি’র সাইবার পুলিশ সেন্টার-এ সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারেন।
৪. অনলাইনে অভিযোগ জানানোর মাধ্যম:
* পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন: www.police.gov.bd
* হটলাইন: ৯৯৯ অথবা সাইবার হেল্পলাইন: ০১৩২০০০০৮৮৮
আইনের দৃষ্টিতে এটি কী ধরনের অপরাধ?
বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ অনুযায়ী, এই ধরনের ব্ল্যাকমেইল একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অপরাধীর শাস্তি হতে পারে জরিমানা, কারাদণ্ড অথবা উভয়ই।
বিশেষ পরামর্শ:
* কারো সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি বা ভিডিও শেয়ার করার আগে সতর্ক থাকুন।
* ডিভাইসে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবহার করুন।
* সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অজানা কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ার ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন।
মনে রাখবেন:
আপনি যদি এমন পরিস্থিতির শিকার হন, তাহলে লজ্জা বা ভয় নয়, সাহসের সঙ্গে আইনি সহায়তা নিন। নীরব থাকলে অপরাধীরা আরও সাহস পাবে। সময়মতো পদক্ষেপ নিলে আপনি নিজেকে যেমন রক্ষা করতে পারবেন, তেমনি অন্যদের জন্যও হতে পারেন অনুপ্রেরণা।
আসিফ
