ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ৬ মার্চ ২০১৮

ঢাকার দিনরাত

শনিবার লেখক-অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর সশস্ত্র হামলার সংবাদ পাওয়ার অল্প সময়ের ভেতর ঢাকা প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। শাহবাগ আরো একবার গর্জে ওঠে। ‘অধ্যাপক জাফর ইকবালের ওপর জঙ্গিবাদী হামলা/রুখো সারা বাংলা’ ব্যানার নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ করে। আর সাংগঠনিকভাবে সমাবেশ ও মশাল মিছিল বের করে গণজাগরণ মঞ্চ। বসন্ত চলমান বাগান বিলাস বা বগেনভেলি বসন্তের ফুল না হলেও ঢাকায় এই ফাল্গুনে ফুলটির দাপট লক্ষ্য না করে পারা যায় না। ঋতুরাজ বসন্তের ছটা এসে লাগছে অনেকের চোখমুখে, বিশেষ করে মনের নিভৃত কোণে। সময় করে কেউ যদি প্রায় বিরাণ বৃক্ষের এই মহানগরীর গাছপালায় চোখ রাখেন তাহলে বিপরীতমুখী সৌন্দর্য দৃষ্টিকে খানিকটা আচ্ছন্ন করে তুলবে। ঢাকার উত্তর প্রান্তে বিমানবন্দর সড়কের পাশে পাতাশূন্য দীর্ঘদেহী গাছগুলোর দিকে তাকালে মন উদাস হয়ে যাওয়ারই কথা। পাতা ঝরে পড়া শুরু হয়ে গেছে। আবার প্রকৃতিপ্রেমীদের অনুসন্ধান চলছে বসন্তের পুষ্পপল্লব শোভার। এই ঋতুতে শিরীষ গাছের পত্রবিরল শাখায় রাশি রাশি স্বর্ণাভ শুকনো ফল বিচিত্র এক দৃশ্যের অবতারণা করেছে। আর মেহগনি গাছভর্তি ফল পেকে ফেটে পড়তে শুরু করেছে। এর থেকে বেরিয়ে আসে প্রপেলারের মতো আকৃতির আবরণে ঢাকা বীজ। বলছিলাম বাগান বিলাসের কথা। বাগান বিলাস ফুলের রং রক্ত লাল বা আগুন লাল হওয়ায় এটি সবার কাছে অনেক পছন্দ। একটি ডাল কেটে লাগালেই বাগান বিলাস আস্তে আস্তে বড় গাছে পরিণত হয়। দূর থেকে বাগান বিলাস ফুলের লাল দেখা যায়। সারা বছরই বাগান বিলাস ফুল দেয়। তবে শরতের শেষ এবং শীতের শুরুতে গাছে গাছে বাগান বিলাসের সমাহার দেখা যায়। এই ফুলের কোন গন্ধ বা সুবাস নেই। চোখে দেখাতেই যত আনন্দ। বাগান বিলাস নিজেই রীতিমতো এক বাগান। এবারের সাতই মার্চ কাল ঐতিহাসিক সাতই মার্চ। স্বাধীনতার মাস মার্চের প্রতিটি দিনই স্মরণযোগ্য। তবে এর মধ্যে বিশেষ দিন হলো সাত, পঁচিশ ও ছাব্বিশে মার্চ। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) একাত্তরের সাতই মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষণ দেন সেটি কেবল ঐতিহাসিক বিচারেই তাৎপর্যপূর্ণ নয়, বিশ্বের সর্বকালের সেরা ২৫টি ভাষণের মধ্যে তা আপন গুণে জায়গা করে নিয়েছে। এবারের সাতই মার্চ নতুন মহিমা নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। সেটি হলোÑ এই ঐতিহাসিক ভাষণকে জাতিসংঘ ‘বিশ্ব ঐতিহ্য দলিল’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে গত অক্টোবরে। প্রতিবছরের মতো এ বছরও সাতই মার্চে ঢাকার প্রধান প্রধান রাজপথই কেবল নয়, বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় মাইকে এই ভাষণ শোনা যাবে। এতগুলো বছর পরেও যখন এই ভাষণ শুনি তখন শিহরিত না হয়ে পারি না। শুনতে শুনতে বরাবরের মতো আমার দুটি প্রতিক্রিয়া হয়। ধারণা করি এমন প্রতিক্রিয়া আমার মতো লক্ষজনেরই। প্রথমত, বাঙালী হিসেবে পরম গৌরব বোধ হয়। যে মহান নেতাকে আমি কখনও চোখে দেখিনি, মানসপটে তাঁর পূর্ণাঙ্গ অবয়ব ভেসে ওঠে। স্পষ্ট যেন দেখতে পাই ডান হাতের তর্জনী উঁচিয়ে তিনি বলছেন, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম।’ দ্বিতীয়ত, চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে। মনে পড়ে এই মানুষটিকেই এ দেশেরই কিছু লোক নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করেছিল। যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি কিংবা যাদের জন্ম পঁচাত্তরের অব্যবহিত আগে কিংবা পরে- তারা কি এই ভাষণটির জন্য আবেগ বোধ করে? আজকের তরুণ প্রজন্ম যেন দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নির্দেশনা সংবলিত কবিতার মতো আবেদনময় ও হৃদয়স্পর্শী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাষণটির প্রকৃত গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে সেজন্য পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মাত্র ২০-২৫ মিনিটের সুগ্রন্থিত ভিডিও উপস্থাপনার মাধ্যমেই এটি করা সম্ভব বলে আমি মনে করি। এ নিয়ে আমার নিজস্ব কিছু ভাবনা রয়েছে। এতে ইতিহাস বিকৃতির থাবা থেকেও ভবিষ্যত সুরক্ষা পাবে বলে আশা করতে পারি। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো প্যারিসে অনুষ্ঠিত এর দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ৩০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্য দলিল’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তা সংস্থাটির ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্ত করেছে। ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা-বিশেষজ্ঞ কমিটি কর্তৃক দু’বছর ধরে প্রামাণ্য দালিলিক যাচাই-বাছাই শেষে ইউনেস্কোর মহাপরিচালকের সম্মতিক্রমে এটি সংস্থার নির্বাহী কমিটি কর্তৃক চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়। দীর্ঘ ৪৬ বছর পর হলেও জাতিসংঘের মতো বিশ্ব সংস্থার এ সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এর ফলে বাঙালীর ইতিহাসের মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রণোদনা সৃষ্টিকারী ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ মানবজাতির মূল্যবান ও ঐতিহ্যপূর্ণ সম্পদ হিসেবে স্বীকৃত ও গৃহীত হলো। স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকৃত ৩০ লাখ শহীদ আর সম্ভ্রম হারানো কয়েক লাখ মা-বোনসহ আমাদের সবার জন্য এটি এক মহা-আনন্দ ও বিরল সম্মানের বিষয়। স্মর্তব্য, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা শহীদ দিবসকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ফলে এখন বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর নিজ ভাষার অধিকার সংরক্ষণের প্রতীক হিসেবে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওই ভাষা আন্দোলনে শুধু সংগঠকের ভূমিকাই পালন করেননি, তিনি ছিলেন এ আন্দোলনের প্রথম কারাবন্দীদের অন্যতম। ১৯৯২ সাল থেকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য সম্পদের স্বীকৃতি ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে আসছে। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস নারী দিবস কি শুধুই নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ? তা নয়, বরং নারীর সমান্তরালে নারীভুবন সম্বন্ধে পুরুষদের সচেতনতার একটি সুযোগ নিয়ে আসে এই নারী দিবস। নারীর প্রতি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি এবং আচরণ কেমন তার ওপরেও নির্ভর করে নারী দিবসের সার্থকতা ও বিফলতা। নারী-পুরুষের স্বাভাবিক সহাবস্থান, সমানাধিকার এবং সমমর্যাদার বিপক্ষে অবস্থান করতে পারে পুরুষের পাশাপাশি নারীও। একথা নারীবাদীরা হয়ত মানবেন না। তারা সব কিছুর পেছনেই দায়ী করেন পুরুষতন্ত্রকে। পরিবারে নানা অবস্থানে অবস্থানকারী নারীদের ভেতর (বউ-শাশুড়ি-কন্যা-ননদ) সম্পর্কের দ্বান্দ্বিকতার নেপথ্যে পুরুষতন্ত্র ও অর্থনীতি ক্রিয়াশীল থাকেÑ এটা অমান্যের কিছু নেই। কিন্তু কট্টর নারীবাদীরা কিছুতেই মানতে নারাজ যে নারীরও মানসিক উন্নতি ও সহৃদয়তা জরুরী পারিবারিক সম্পর্কগুলো সুশোভন রাখার প্রয়োজনে। যাহোক, নারী দিবসে ঢাকার নারী সমাজ নিয়ে দু’একটা কথা বলার জন্যই এই গৌরচন্দ্রিকা। সাধারণভাবে ঢাকার বহিরঙ্গের জীবনে বা সোজা কথায় রাস্তাঘাট অফিস-আদালতে যেসব নারী আমরা দেখি তারা তো সম্পর্ক সূত্রে আমাদের তথা পুরুষের অচেনা ও পরিচিত, স্বজন ও সহকর্মীও বটে। সবচেয়ে বড় কথা তারা সহনাগরিক। একথা আমরা স্বীকার করি আর নাই করি, ঢাকার নারী সমাজ সাধারণভাবে অগ্রসর ও সপ্রতিভ। এক অর্থে তারা পুরুষের পাশাপাশিই চলেছেন। কার্যালয়ে পুরুষের সঙ্গে সহযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই কর্মপরিবেশ বজায় রাখছেন, পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন। নারী-পুরষেভেদ টেনে যারা নারীর এই সমকক্ষতায় প্রতিবন্ধক হয়ে উঠছেন, সেই গুটিকতক পুরুষ যেমন নারীর প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছেন, তেমনি পুরুষ সহকর্মীদের অনেকেও প্রতিবাদ করছেন। অর্থাৎ বলতে চাইছি, নারী একদিকে সরব হচ্ছেন, অপরদিকে পুরুষদেরও মানসিকতার পরিবর্তন ঘটছে। গণপরিবহনের মহিলা আসনের উদাহরণ টানা যাক। বাসে ছ’টি বা নয়টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হলেও কোন নারী বাসের বাদবাকি যে কোন খালি আসনেই বসার অধিকার রাখেনÑ এই সহজ কথাটি বহু পুরুষই বুঝেন না। বাসে মহিলা সিট খালি থাকলে কোন মহিলা যদি সংরক্ষিত ওই আসনে না বসে সবার জন্য উন্মুক্ত অন্য যে কোন আসনে বসতে যান, তখন দু’একজন পুরুষ অবশ্য আপত্তি তোলেন। সে সময় দেখেছি বাসের অন্য পুরুষ যাত্রীদের কেউ তার প্রতিবাদ করছেন। এটা অবশ্যই ইতিবাচক দিক। ঢাকার পথেঘাটে আগের তুলনায় বেশি সংখ্যক নারী দেখা যায় যারা ব্যক্তিগত গাড়ি চালাচ্ছেন। মোটরসাইকেল চালক নারীর সংখ্যা অবশ্য তেমন বাড়েনি। নারীর জন্য রাজধানীতে আর আলাদা পেশা বলে কিছু নেই। সব পেশাতেই নারী তাদের কর্মদক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ সুন্দরভাবে কাজে লাগাচ্ছেন। অনেক পরিবারে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরা একটু রাত করে ঘরে ফিরলে সেটা স্বাভাবিকভাবেই দেখা হচ্ছে। ঢাকায় ইভটিজিং বহুলাংশে কমেছে। পথেঘাটে নারীর চলাচল শতভাগ নিরাপদ হয়েছে এমন দাবি করব না, তবে অবস্থার উন্নতি ঘটেছে। নতুন কাব্যসম্ভার থেকে এবার বইমেলায় ১৪০০-এরও বেশি নতুন ‘কাব্যগ্রন্থ’ প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকে মানসম্পন্ন বই বেছে নেয়া সহজ নয়। একুশ পরবর্তী প্রথম আবৃত্তি অনুষ্ঠানের জন্য ‘যুক্ত’ বেছে নেয় ১৬টি কবিতার বই। শাহবাগের দীপনপুরে প্রতিজন কবির দুটি করে কবিতার আবৃত্তি পরিবেশিত হয়। সংগঠনের প্রধান নিশাত জাহান রানা সূচনাবক্তব্যে এই নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, ‘এ বছর প্রকাশিত কবিতার বই থেকে আবৃত্তির উদ্দেশ্যে মানসম্পন্ন কাব্য নির্বাচনের জন্য আমরা কবি মারুফ রায়হানকে অনুরোধ করেছিলাম। তিনি প্রতি বছর বইমেলার নির্বাচিত ৫০ বই নিয়ে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে থাকেন। তাঁর দেয়া তালিকার সঙ্গে আরও দু-তিনটি কাব্য যুক্ত করে আজকের এই আবৃত্তি আয়োজনÑ ‘কবিতা সংকলন: অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮’।’ আবৃত্তিতে অংশ নেন মোহাম্মদ কামাল, জয়ন্ত রায়, রুমানা চৌধুরী, মুশফিকা নাজনীন, টুকু মজনিউল, মেরিনা ইয়াসমীন প্রমুখ। কাব্যপ্রেমীদের সুবিধার্থে প্রকাশনা সংস্থার নামসহ কবি ও কবিতাগ্রন্থের পরিচয় তুলে ধরা হলো। ১. উৎকট তন্দ্রার নিচে/ সৈয়দ শামসুল হক/ অন্যপ্রকাশ ২. এই স্বপ্ন এই ভোর প্রভাতের আলো/ মোহাম্মদ রফিক/ বাতিঘর ৩. এক সন্তানসম্ভবা পাখিনীর গল্প/ নির্মলেন্দু গুণ/ অবসর ৪. প্রসন্ন দ্বীপদেশ/ মাসুদ খান/ পাঞ্জেরী ৫. উদ্বাস্তু নক্ষত্র/ এনায়েত কবির/ যুক্ত ৬. আমিন খেলতে গেছে/ সরকার আমিন/ মূর্ধণ্য ৭. আমি রোহিঙ্গা/ কামরুজ্জামান কামু/ বাতিঘর ৮. তিমিরে তারানা/ সোহেল হাসান গালিব/ অগ্রদূত ৯. শত পদ্য মলাটের ভাঁজে/ শাহানা আখতার মহুয়া/ পুথিনিলয় ১০. ভেঙে পড়া কাচের শহর/ জামিল রায়হান/ যুক্ত ১১. ধানমন্ডি হ্রদ/ শেখ ফিরোজ আহমেদ/ যুক্ত ১২. হৃৎ/ সেঁজুতি বড়–য়া/চৈতন্য ১৩. ধূলি সারগাম/ তুষার কবির/ অনিন্দ্য প্রকাশ ১৪. এয়া/ জুননু রাইন/ ঐতিহ্য ১৫. ওড়ার কৌশল/ তিথি আফরোজ/ পরিবার প্রকাশনী ১৬. শীতের পুরনো চাদর/ ¯িœগ্ধা বাউল/ চৈতন্য ৪ মার্চ ২০১৮ [email protected]
×