ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষমতাসীনদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করছে ইসি ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৫:০১, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

 ক্ষমতাসীনদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করছে ইসি ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচন কমিশন কেবল ক্ষমতাসীনদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে যাচ্ছে। আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু না হলেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা সভা-সমাবেশ করে নৌকার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। অপর দিকে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কোন কর্মকর্তাকে বদলি করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন। সভায় সিইসির নির্দেশনাসমূহ এবং উপস্থিত কিছু পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যে মনে হয়, উভয় পক্ষই সরকারের অনুকূলে একতরফা নির্বাচনের একটা গোপন ছক তৈরি করে রেখেছে। রিজভী বলেন, স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিতর্কিত ও দলবাজ পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করতে হবে। নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে প্রশাসন সাজাতে হবে। নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা নির্বাচনী আচরণ বিধি ‘লঙ্ঘন করে’ চললেও ইসি ‘নির্বিকার’। প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস তাদের সদস্য ব্যাংকগুলোর কাছে প্রায় একশ’ কোটি টাকার কম্বল দাবি করেছে আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে। এটা নির্বাচনী আচরণবিধির পুরোপুরি লঙ্ঘন। প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে চিঠি পাঠানোর ফলে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছে না। নির্বাচন প্রভাবিত করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে পারিবারিক সম্পত্তির মতো ব্যবহার করছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা এর নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান বিশাল প্রচার সভা করেছে, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নাজমুল হাসান পাপনের পক্ষে মাইকিং করে সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের এলাকায় যেতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। ঘরোয়া বৈঠক করতে চাইলে সেখানে চলছে সশস্ত্র হামলা। তিনি বলেন, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের একজন যশোরের আবু বকর আবুকে একেবারে জীবন্ত সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, এহছানুল হক মিলন- এ ধরনের অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই, নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিও করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে ভোট দেয়ার আহ্বান মওদুদের ॥ এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, এবারের নির্বাচন জনগণের ১২ বছরের হারানো গণতন্ত্র ফিরে আনার আন্দোলন। সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে, লড়াই করে হলেও জনগণকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মদিন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণকে বুঝতে হবে এবারই ভোট দেয়ার শেষ সুযোগ, আপনারা আর সুযোগ পাবেন না। তাই ভোট দেয়ার সময় কেউ যদি বাধা দেয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজনে তাকেও ভোট দিতে বাধা দিতে হবে। গণতন্ত্রের অধিকার হারানোটা দেশের মানুষের জন্য দুঃখজনক বিষয়। জনগণের প্রতি বর্তমান সরকারের আস্থা নেই। সরকারের বিভিন্ন কর্মকা-ের সমালোচনা করে মওদুদ আহমদ বলেন, সরকারের কাছে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে যে সাত দফা দাবি জানানো হয়েছে, তার একটি দাবিও মেনে নেননি তারা। এ সরকার পরাজয়ে ভয় পায়। গোয়েন্দা সংস্থায় তাদের নিজেদের লোক দিয়ে করানো রিপোর্টও তাদের বিপক্ষে। সেখানে একটি রিপোর্টও আসেনি, যেখানে দেখা গেছে তারা নির্বাচনে জয়লাভ করবে। তাই তারা এখন মরিয়া হয়ে আছে। এমন একটি দলীয় সরকারের অধীনে কখনই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ও সরকার পক্ষ তারা সবাই এক হিসেবে কাজ করছে। এ কারণে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার উর্ধতন কর্মকর্তাকে পরিবর্তন/বদলি করা হয়নি। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরও এখন পর্যন্ত গ্রেফতার ও হামলা-মামলা বন্ধ হয়নি। প্রতিদিনই কোন না বিএনপি নেতাকর্মী গ্রেফতার হচ্ছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন এমনটা হবে না।
×