ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় নকল সার ও কীটনাশক তৈরির কারখানার সন্ধান

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নওগাঁয় নকল সার ও কীটনাশক তৈরির কারখানার সন্ধান

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ১৫ সেপ্টেম্বর ॥ শনিবার মান্দা উপজেলার বৈদ্যপুর বাজারে একবছর ধরে চলমান বিভিন্ন নামী দামী কোস্পানির মোড়কে বাজারজাতকৃত নকল সার ও কীটনাশক তৈরির একটি কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ওই কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম জব্দসহ মূলহোতা আরিফ হোসেনকে (৪৮) গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আরিফ হোসেন খুলনার খানজাহানআলী উপজেলার শিরোমনি উত্তরপাড়া এলাকার মৃত শওকত হোসেনের পুত্র। সংবাদ পেয়ে কৃষি অধিদফতর ও পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহবুব আলম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানার এএসআই রবিউল ইসলাম শুক্রবার সন্ধ্যায় বৈদ্যপুর বাজারের অদূরে গোড়রা এলাকায় কারখানাটির সন্ধান পান। এরপর অনুসন্ধান চালিয়ে নকল সার ও কীটনাশক তৈরির সত্যতা পাওয়া যায়। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে শনিবার সকালে কারখানাটিতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিপুল পরিমাণ উপকরণ ও সরঞ্জামসহ কারখানাটির মূলহোতা আরিফ হোসেনকে পাশের একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে বলে তিনি জানান। স্থানীয়রা জানান, বৈদ্যপুর বাজারের গোড়রা এলাকার আনিছুর রহমান আন্টু ও আজিজুল ইসলামের বাসা ভাড়া নিয়ে গ্রেফতারকৃত খুলনার আরিফ হোসেন, যশোরের মুকুল হোসেন, মধু চন্দ্র ও এমদাদুল হক এবং নিলফামারী জেলার রফিকুল ইসলাম একবছর ধরে কারখানাটির কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। কারখানাটি বাজার থেকে একটু দূরে নির্জন এলাকায় হওয়ায় সেখানে কি তৈরি হচ্ছে এ বিষয়ে তারা অবহিত ছিলেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, কারখানাটির সামনে প্রতিনিয়ত ট্রাক ভর্তি করে বালু ও মাটি নিয়ে আসা হতো। এগুলো দিয়ে কারখানার ভেতরে কি কাজ করা হতো, সেটি তারা জানতেন না। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসলাম, গোলাম মোস্তফাসহ আরও অনেকে জানান, কারখানার মালিকরা আন্টু ও আজিজুলের ৩টি বাসা মাসিক ২ লাখ ২৫ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চালু করেন। মাসিক বেতনে ৩৫ জন কর্মচারী সেখানে নিয়মিত কাজে নিযুক্ত ছিল। এলাকার কতিপয় ব্যক্তির ছত্রছায়ায় কারখানাটিতে নকল সার ও কীটনাশক উৎপাদনসহ বাজারজাত করে আসছিলেন অভিযুক্তরা। শনিবার সকালে কারখানাটিতে গিয়ে দেখা গেছে, তিনটি ভবনের একটিতে জিংক সার তৈরির উপকরণ, মিক্সার মেশিন, স্তূপকৃত মাটিসহ অসংখ্য মাটি ভর্তি বস্তা ও মোটা দানার বালুর (ডোমার বালু) স্তূপ পাওয়া যায়। এ ভবনের অন্য একটি কক্ষে বালুতে রং মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে দানাদার কীটনাশক। অপর ভবনে মিক্সার মেশিন, বালু ভর্তি বস্তা, ডায়াজিনন, বাসুডিন, ফুরাডান, ব্রিফার ৫জি, জেডফুরান থিয়োভিট পাউডার, গ্রীন জিংকসহ বিভিন্ন নামী দামী কোম্পানির মোড়কে নকল কীটনাশক পাওয়া গেছে। অন্য ভবনটিতে মোড়ক সেলাই করার মেশিনসহ পাওয়া গেছে অন্যান্য সরঞ্জাম।
×