স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, দেশে ব্যবসা বানিজ্য স্থবির। বিণিয়োগ শূণ্যের কোঠায় নেমেছে। ব্যাংকে টাকার পাহাড়। অথচ শিল্প খাতে বিনিয়োগ করার কেউ নেই। যুবসমাজ আজ বিপথে চলে যাচ্ছে কর্মের অভাবে। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে এসএ টাওয়ার উদ্ভোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বলেন, কর্মজীবনে সেনা প্রধান ছিলাম। এরপর রাজনীতিবিদ হওয়ার চেষ্টা করেছি, পারিনি। কারণ এ পথ খুব পিচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রেসিডেন্ট রিগ্যানের আমন্ত্রনে হোয়াট হাউজে তার সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলাম। বাংলাদেশের রাষ্টপ্রধান হিসেবে আমিই প্রথম আমিই শেষ। মার্কিণ প্রেসিডেন্ট রিগ্যান তার আত্মজীবনী বইয়ে লিখেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় এমন একজন রাষ্ট্রপ্রধান আছেন, যার মধ্যে আমি দেশপ্রেম ও উন্নয়নের স্পৃহা দেখতে পেয়েছি। সে হলো বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ’।
তিনি বলেন, আমি যখন সৌদি সফরে গিয়েছিলাম তখন বাদশাসহ সকল মন্ত্রীসভা বিমান বন্দরে আমাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। পৃথিবীর কেউ এতবড় সম্মান পাননি। এমনকি আমেরিকার কোন প্রেসিডেন্টও পাননি।
সাবেক এ রাষ্ট্রপতি আক্ষেপ করে বলেন, তারপরও আমি স্বৈরাচার! আমার হাতে কয়জনের রক্তের ছোয়া আছে! আমার হাতে রক্তের দাগ নেই। সে কারণে আমি বেঁচে আছি। আমি লাগাতার ছয় বছর জেলে ছিলাম। এদেশের কোন নেতা লাগাতার এত বছর জেল খাটেনি। বঙ্গবন্ধুও লাগাতার তিন বছর জেল খেটেছেন।
তিনি আরো বলেন, ১৯৮৮ সালে ১ ফেব্রুয়ারি আমি যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছিলাম। ক্ষমতায় থাকতে, ১০ হাজার কিলোমিটার পাকা রাস্তা করেছি, ৫০৮টি ব্রীজ করেছি। ৪৬০টি উপজেলা করে গ্রাম পর্যায়ে উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়েছি। কিন্তু কোথাও আমার নাম নেই। আমার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি গানের সুরে বলেন, “কাগজে লেখা নাম ছিড়ে যাবে, পাথরে লেখা নাম খয়ে যাবে কিন্তু হৃদয়ে লেখা নাম মুছে যাবে না। আমি জনগণের হৃদয়ে আছি”।
প্রাদেশিক ব্যবস্থা কায়েম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, ১৭ কোটি মানুষের শাসন একজনের পক্ষে সম্ভব নয়, প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। কিন্তু অনেকে এর গুরুত্ব বুঝেও তা বাস্তবায়ন করছে না। কারণ প্রস্তাবটি যেহেতু এরশাদ দিয়েছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এস এ টাওয়ারে সত্বাধিকারি সালাউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মেজর অব. মো. খালেদ আখতার, হাজী সাইফুদ্দিন মিলন প্রমুখ।