ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়া দ্বন্দ্ব: ঝামেলা এড়াতে উভয়পক্ষের জন্য আইনি পরামর্শ

প্রকাশিত: ১৫:২১, ১৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৫:২২, ১৪ জুন ২০২৫

বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়া দ্বন্দ্ব: ঝামেলা এড়াতে উভয়পক্ষের জন্য আইনি পরামর্শ

ছবি: প্রতীকী

নগরজীবনে বাসা ভাড়া নিয়ে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন নয়। প্রতিনিয়তই ভাড়ার বাড়তি চাহিদা, বাসার ভেতরের সমস্যাগুলো মেরামতের গাফিলতি এবং মৌখিক চুক্তির ফাঁদে পড়ে ভোগান্তির শিকার হন হাজারো ভাড়াটিয়া।

এক ভিডিও আলোচনায় ব্যারিস্টার লিমা আঞ্জুমান এই চিরচেনা সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর বাড়িওয়ালা ভাড়া বাড়াতে চান। কিন্তু বাসার ভেতরে কিছু নষ্ট হলে তারা বারবার রিমাইন্ডার দেওয়ার পরেও ঠিক করেন না। এটা একটি কমন ভোগান্তি।’

ব্যারিস্টার লিমা বলেন, অনেক ভাড়াটিয়া কম টাকার বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় লিখিত চুক্তি না করেই শুধু মৌখিক সমঝোতার ভিত্তিতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। এতে পরবর্তীতে সমস্যা দেখা দিলেও ভাড়াটিয়ার কোনও লিখিত প্রমাণ থাকে না যা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করে।

চুক্তি না থাকলে উভয় পক্ষই বিপদে

তিনি পরামর্শ দেন, ‘আপনি যেই টাকার বাসাতেই উঠুন না কেন, অবশ্যই একটি লিখিত চুক্তি করুন। চুক্তিটি ৩০০, ৫০০ বা ৮০০ টাকার স্ট্যাম্পে হতে পারে। এতে বাসাভাড়া, বাড়ি মেরামতের দায়-দায়িত্ব, উচ্ছেদের প্রক্রিয়া সবকিছু স্পষ্ট করে লেখা থাকা উচিত।’

তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘বাংলাদেশের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা আছে, কোনও বাড়িওয়ালা দুই বছরের মধ্যে ভাড়া বাড়াতে পারবেন না এবং এক ধাপে ৫০০ টাকার বেশি বাড়াতে পারবেন না।’ কিন্তু বাস্তবে খুব কমই বাড়িওয়ালারা এই আইন মানেন।

সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে শুরুতেই

ব্যারিস্টার লিমা বলেন, ‘যাতে ভবিষ্যতে ঝামেলা না হয়, তাই শুরুতেই সাবধানতা নেওয়াই শ্রেয়। লিখিত চুক্তিতে বাসার কোন কিছু ভেঙে গেলে সেটা মেরামতের দায় কার, তা উল্লেখ থাকা উচিত। এমনকি যদি বাড়িওয়ালা ব্যস্ত থাকেন, তাহলে আপনি নিজেই ঠিক করে ভাড়ার সঙ্গে সেই খরচ সমন্বয় করবেন কিনা তাও চুক্তিতে থাকা দরকার।’

বাড়িওয়ালারও লাভ চুক্তিতে

শুধু ভাড়াটিয়ারই নয়, বাড়িওয়ালার পক্ষ থেকেও লিখিত চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ। এতে ভবিষ্যতে ভাড়াটিয়ার সঙ্গে কোনো সমস্যা হলে, যথাযথ নোটিশ দিয়ে তাকে উচ্ছেদ করা যায়। চুক্তি না থাকলে সেই প্রক্রিয়া জটিল হয়ে পড়ে, পুলিশ-কোর্ট পর্যন্ত যেতে হয়।

ব্যারিস্টার লিমা পরামর্শ দেন, ‘ভাড়াটিয়া বাসাভাড়া দেওয়ার সময় যেন রিসিট নেন এবং বাড়িওয়ালাও রিসিট দেন—এমন অভ্যাস গড়ে তুললে দুই পক্ষই অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা এড়াতে পারবেন।’

নগরজীবনের এই ঘনঘন সংঘাত এড়াতে ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালার উভয়েরই উচিত শুরুতেই লিখিত চুক্তি ও প্রমাণ সুরক্ষিত রাখা। সঠিক আইনজ্ঞান ও সচেতনতাই হতে পারে দীর্ঘমেয়াদে এই সমস্যার কার্যকর সমাধান।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=8rFJjM-1pO4

রাকিব

×