
ছবি: জনকণ্ঠ
সামরিক ঘাঁটি এমন একটি স্থাপনা যা মার্কিন সামরিক বাহিনী বা তার কোনো শাখা সরাসরি পরিচালনা করে। এতে সৈন্যদের বসবাস, সামরিক সরঞ্জাম সংরক্ষণ, প্রশিক্ষণ ও অপারেশন পরিচালনার ব্যবস্থা থাকে। এটি কমান্ড সেন্টার, ট্রেনিং গ্রাউন্ড বা পরীক্ষণ স্থল হিসেবেও কাজ করতে পারে।
কিছু ঘাঁটি নিজস্ব খাদ্য, পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সম্পদ সঞ্চয় করতে সক্ষম হওয়ায়, দীর্ঘসময় অবরুদ্ধ অবস্থায় টিকে থাকতে পারে।
বিমানঘাঁটি (Air base) মূলত সামরিক বিমানের জন্য, আর নৌঘাঁটি (Naval base) যুদ্ধজাহাজের জন্য ব্যবহৃত হয়।
২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্র তার সীমান্তের বাইরে অন্তত ১২৮টি সামরিক ঘাঁটি বজায় রেখেছে।
সাউথ কোরিয়ায় অবস্থিত ক্যাম্প হামফ্রিজ অঞ্চলভিত্তিক সবচেয়ে বড় মার্কিন বিদেশি ঘাঁটি।
২০০১ সাল থেকে, প্রায় ১.৯ থেকে ৩ মিলিয়ন মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ও ইরাকে মোতায়েন হয়েছে, যাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি একাধিকবার মোতায়েন হয়েছিল।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশভিত্তিক মার্কিন সামরিক ঘাঁটি
বাহরাইন
-
মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহরের সদর দপ্তর এখানে অবস্থিত।
-
এটি উপসাগর, লাল সাগর, আরব সাগর এবং ভারত মহাসাগরের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
কাতার
-
আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি (Al Udeid Air Base) দোহা শহরের বাইরে অবস্থিত।
-
এটি মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের (CENTCOM) অগ্রবর্তী সদর দপ্তর।
-
প্রায় ১০,০০০ সৈন্য এখানে মোতায়েন রয়েছে এবং এটি হলো মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় মার্কিন ঘাঁটি।
কুয়েত
-
ক্যাম্প আরিফজান – ইউএস আর্মি সেন্ট্রালের অগ্রবর্তী সদর দপ্তর।
-
আলি আল সালেম এয়ার বেস – পাহাড়ঘেরা দূরবর্তী এলাকায়, একে “The Rock” বলা হয়।
-
ক্যাম্প বুহরিং – ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের সময় নির্মিত, সিরিয়া ও ইরাকে সেনা মোতায়েনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE)
-
আল ধাফরা বিমান ঘাঁটি – আবুধাবির দক্ষিণে, আমিরাতের বিমান বাহিনীর সঙ্গে শেয়ার করা হয়।
-
এটি ইসলামিক স্টেট বিরোধী মিশনে ও গোয়েন্দা নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
জেবেল আলি পোর্ট – দুবাইয়ে অবস্থিত, যদিও এটি আনুষ্ঠানিক ঘাঁটি নয়, তবে সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
জর্ডান
-
মুওয়াফাক আল সালতি বিমান ঘাঁটি, আজরাক শহরের কাছে (আম্মান থেকে ১০০ কিমি দূরে) অবস্থিত।
-
এখানে মার্কিন বিমানবাহিনীর ৩৩২তম এয়ার এক্সপেডিশনারি উইং মোতায়েন রয়েছে।
ইরাক
-
আইন আল আসাদ বিমান ঘাঁটি, আনবার প্রদেশে অবস্থিত। এখানে এখনো মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী সহযোগিতা করছে।
-
২০২০ সালে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার লক্ষ্য হয়েছিল এই ঘাঁটি।
-
এরবিল বিমান ঘাঁটি – উত্তর ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে প্রশিক্ষণ, লজিস্টিক ও গোয়েন্দা সহায়তা প্রদান করা হয়।
সৌদি আরব
-
প্রিন্স সুলতান এয়ার বেস, রাজধানী রিয়াদ থেকে প্রায় ৬০ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত।
✦ মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন সামরিক ঘাঁটির তালিকা
ঘাঁটির নাম | অবস্থান | দেশ |
---|---|---|
ইউএস নেভি ফিফথ ফ্লিট HQ | মানামা | বাহরাইন |
আল উদেইদ এয়ার বেস | দোহা শহরের বাইরে মরুভূমি | কাতার |
ক্যাম্প আরিফজান | কুয়েত সিটির কাছে | কুয়েত |
আলি আল সালেম এয়ার বেস | ইরাক সীমান্তের প্রায় ৪০ কিমি দূরে | কুয়েত |
ক্যাম্প বুহরিং | ইরাক-কুয়েত সীমান্তের কাছে | কুয়েত |
আল ধাফরা এয়ার বেস | আবুধাবির দক্ষিণে | সংযুক্ত আরব আমিরাত |
জেবেল আলি পোর্ট | দুবাই | সংযুক্ত আরব আমিরাত |
আইন আল আসাদ এয়ার বেস | আনবার প্রদেশ, পশ্চিম ইরাক | ইরাক |
এরবিল এয়ার বেস | কুর্দিস্তান অঞ্চল, উত্তর ইরাক | ইরাক |
প্রিন্স সুলতান এয়ার বেস | রিয়াদ থেকে ৬০ কিমি দক্ষিণে | সৌদি আরব |
মুওয়াফাক আল সালতি এয়ার বেস | আজরাক, আম্মান থেকে ১০০ কিমি উত্তর-পূর্ব | জর্ডান |
✦ মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি
আল উদেইদ এয়ার বেস হলো মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় মার্কিন ঘাঁটি।
-
অবস্থান: কাতারের দোহা শহরের পশ্চিমে মরুভূমিতে
-
প্রতিষ্ঠা: ১৯৯৬ সালে
-
পরিসর: ২৪ হেক্টর (৬০ একর)
-
সৈন্য সংখ্যা: ১১,০০০-এর বেশি
-
সুবিধা: প্রায় ১০০টি বিমান ও ড্রোন রাখার ব্যবস্থা রয়েছে।
-
এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সামরিক কমপ্লেক্স।
ছামিয়া