ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

‘আশ্রয়কেন্দ্র ছিল ভরা’: নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আতঙ্কিত ইসরায়েলিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ১৯ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৯:০৪, ১৯ জুন ২০২৫

‘আশ্রয়কেন্দ্র ছিল ভরা’: নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আতঙ্কিত ইসরায়েলিরা

ছবিঃ আল জাজিরা

টানা চতুর্থ রাতেও ইসরায়েলি শহরগুলোতে আঘাত হেনেছে ক্ষেপণাস্ত্র। ইসরায়েলের আগ্রাসনের জবাবে ইরানের পাল্টা হামলায় মানুষ সিঁড়িঘরে ও বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন। ইরানের রকেট বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভেদ করে লক্ষ্যভেদ করায় অনেকেই দিশেহারা।

শুক্রবার, ইসরায়েল ইরানের ওপর হামলা শুরু করে, লক্ষ্যবস্তু ছিল দেশটির সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা। এতে নিরাপত্তা, গোয়েন্দা ও সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ বিজ্ঞানীরা নিহত হন। ইসরায়েলি হামলা আবাসিক এলাকাও আঘাত করেছে। ইরানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এতে ২২৪ জনের বেশি নিহত ও অন্তত ১,৪৮১ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

শুক্রবার থেকে শত শত ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। ইসরায়েলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও সব ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি। যদিও রাতের পর রাত ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যায় কিছুটা কমতি দেখা যাচ্ছে, তবু হামলার ব্যাপকতা ইসরায়েলিদের জন্য নজিরবিহীন।

তেলআবিবের কেন্দ্র, হাইফা, বৈজ্ঞানিক কেন্দ্র রেহোভট এবং আবাসিক এলাকা হামলার শিকার হয়েছে। এ পর্যন্ত অন্তত ২৪ জন ইসরায়েলি নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলের গর্বের প্রতীক এবং সামরিক গবেষণার অন্যতম ভিত্তি রেহোভটে অবস্থিত উইজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গবেষণাগারগুলো ছিন্নভিন্ন, কাচ ভাঙা, ঝুলছে তার ও লোহা।

“এটা শুধু ভবনের ক্ষতি নয়,” বলেন ৩৪ বছর বয়সী জীববিজ্ঞানে পিএইচডি শিক্ষার্থী জেনিয়া কেরিমভ, যিনি ইনস্টিটিউটের কাছেই থাকেন। “এটা বহু বছরের গবেষণা, যন্ত্রপাতি যা সহজে প্রতিস্থাপন করা যাবে না, এমন সব তথ্য যা হয়তো চিরতরে হারিয়ে গেছে।”

তিনি বলছিলেন, আঘাতের সময় তিনি আশপাশের একটি বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। “আমরা দেশের সুরক্ষায় কাজ করছি। অথচ এখন আমাদের গবেষণাগার, এমনকি আমাদের বাসাও যেন অনিরাপদ।”

দেশজুড়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো উপচে পড়ছে। পুরোনো এলাকায় যেখানে বাংকার নেই, সেখানকার বাসিন্দারা মিলিত নিরাপদ কক্ষে গাদাগাদি করে থাকছেন। তেলআবিব ও পশ্চিম জেরুজালেমে অনেকেই সিঁড়িঘরকে শোবার ঘরে পরিণত করেছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হোম ফ্রন্ট কমান্ড ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো বসবাসের অনুপযোগী বিবেচনায় শত শত মানুষকে হোটেলে সরিয়ে নিচ্ছে।
 

সূত্র: আল জাজিরা

মুমু

×