ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ নয়: ট্রাম্পকে মোদি

প্রকাশিত: ২০:৩৩, ১৮ জুন ২০২৫

কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ নয়: ট্রাম্পকে মোদি

ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীর নিয়ে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ভারত কখনোই মেনে নেবে না, এই বার্তা সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার দুই নেতার মধ্যে টেলিফোনে আলাপের সময় মোদী কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের দীর্ঘদিনের ‘অবিচল অবস্থান’ স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

 

 

মে মাসে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের চারদিনের সামরিক উত্তেজনার পর থেকে ট্রাম্প বারবার দুই দেশের মধ্যে কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। কিন্তু দিল্লির কাছে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন প্র Vor ছায়া ফেলেছে ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কে।

পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, মে মাসের সংঘাতের সময় কিংবা পরে—কোনো পর্যায়ে আমেরিকার সঙ্গে কাশ্মীর ইস্যু বা ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা নিয়ে কোনো কথাবার্তা হয়নি, তা মোদী স্পষ্টভাবেই ট্রাম্পকে জানিয়েছেন।

এদিকে হোয়াইট হাউজ এখনো মিশ্রির বক্তব্যের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

 

 

 

গত কয়েক সপ্তাহে ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছেছে এবং তিনি দুই দেশকে বাণিজ্যের প্রলোভন দেখিয়ে রাজি করিয়েছেন। অন্যদিকে পাকিস্তান বিদেশি মধ্যস্থতা মেনে নিলেও ভারত তা কঠোরভাবে অস্বীকার করে আসছে।

মিশ্রি জানান, অস্ত্রবিরতি সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে শুধুমাত্র ভারত ও পাকিস্তানের বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সামরিক যোগাযোগ চ্যানেলের মাধ্যমেই—যা দুই দেশ আগে থেকেই চালু রেখেছিল।

 

গত এপ্রিলেই যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে। আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে এই শুল্ক থেকে ছাড় শেষ হবে। তার আগেই একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে নয়াদিল্লি। ফলে ট্রাম্পের কাশ্মীর ইস্যুতে হঠাৎ মধ্যস্থতা প্রস্তাবের পেছনে কূটনৈতিক চাপ তৈরির কৌশল দেখছেন অনেক বিশ্লেষক।

ট্রাম্প এক টুইটে বলেছিলেন, “আমি বলেছি, তোমরা থেমে যাও, তাহলে বাণিজ্য হবে। না থামলে, হবে না।”
এ ধরনের বক্তব্য ভারতীয় কূটনৈতিক অঙ্গনে অস্বস্তির জন্ম দিলেও এখনই বলা যাচ্ছে না, এটি চলমান ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় প্রভাব ফেলবে কি না।

ভারতের পক্ষ থেকে কাশ্মীরকে ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, আর তাই পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ বা মধ্যস্থতার ধারণা বরাবরই দিল্লির জন্য অগ্রহণযোগ্য।

নয়াদিল্লি পশ্চিমা অংশীদারদের প্রতি দীর্ঘদিন ধরেই আহ্বান জানিয়ে আসছে, ভারত ও পাকিস্তানকে এক পাল্লায় না মাপতে। এমনকি অনেক সময় পশ্চিমা নেতাদের অনুরোধ জানানো হয়, উভয় দেশ সফর করতে হলেও যেন তা একই সফরের অংশ হিসেবে না করা হয়।

তবে ট্রাম্পের মন্তব্য এবং টুইট বার্তাগুলোতে ভারত ও পাকিস্তানকে প্রায়ই একই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়, যা দিল্লিতে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

ছামিয়া

×