
ছবি: সংগৃহীত
এয়ার ইন্ডিয়া ১৭১ বিমানের দুর্ঘটনার তদন্তে প্রায় এক বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB)। আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার তদন্তে সহায়তা করছে বোয়িং সংস্থা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (NTSB)।
ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে এবং এর বিশ্লেষণের জন্য বোয়িং ও NTSB-এর একটি বিশেষজ্ঞ দল ভারতে পৌঁছেছে। প্রয়োজন হলে ব্ল্যাক বক্স বিদেশে পাঠানো হতে পারে অথবা একটি অন্তর্বর্তী রিপোর্ট প্রকাশ করা হতে পারে। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে AAIB।
তদন্তে প্রযুক্তিগত, অপারেশনাল ও নিয়ন্ত্রক দিক খতিয়ে দেখতে পৃথকভাবে একটি সরকারি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির রিপোর্ট তিন মাসের মধ্যে আসার কথা।
প্রকৃত সত্য লুকিয়ে আছে ব্ল্যাক বক্সে। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার এই দুটি যন্ত্রই বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিমানের শেষ মুহূর্তের আসল তথ্য এই যন্ত্রদ্বয়েই সুরক্ষিত থাকে। বোয়িং ও NTSB-এর বিশেষজ্ঞরা সেগুলোর বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
উল্লেখযোগ্য যে, এটি ছিল বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম কোনো বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানের ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ফলে এই তদন্ত আন্তর্জাতিক গুরুত্বও বহন করছে।
২০১১ সালে গঠিত AAIB এখন পর্যন্ত ১২১টি গুরুতর দুর্ঘটনা এবং ১০২টি অন্যান্য বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত করেছে। তবে AI 171 হল তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও জটিল তদন্ত।
এর আগে ২০২০ সালের ৭ আগস্ট কেরালার কোঝিকোড়ে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস ফ্লাইট দুর্ঘটনার রিপোর্ট প্রকাশ করতেও AAIB-এর এক বছর লেগেছিল। ওই ঘটনায় ১৮ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছিলেন।
AI 171 বিমানের তদন্তে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল বিমানের ধ্বংসাবশেষ এবং ব্ল্যাক বক্স। তদন্তকারীরা বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ, এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল, সিআইএসএফ, দমকল কর্মী, পাইলটদের পরিবার ও ওই বিমানের একমাত্র জীবিত যাত্রীর সঙ্গেও কথা বলবেন।
ব্ল্যাক বক্স দুটি ভাগে বিভক্ত ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার। এগুলি কমলা রঙের হয় যাতে ধ্বংসাবশেষের মধ্যেও সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। এগুলোর কাঠামো এতটাই মজবুত যে বিস্ফোরণ, আগুন, জলের চাপ বা ধাক্কাও সহ্য করতে পারে।
ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে পাইলটদের কথোপকথন, অ্যালার্ম, ইঞ্জিনের শব্দ, এমনকি সুইচ টিপার আওয়াজও রেকর্ড থাকে। অন্যদিকে, ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার গতি, উচ্চতা, ইঞ্জিনের শক্তি, ফ্ল্যাপের অবস্থান, অটোপাইলট কমান্ড, গতি পরিবর্তন, ল্যান্ডিং গিয়ারসহ একাধিক তথ্য সংরক্ষণ করে।
এই দুই রেকর্ডারের তথ্য মিলিয়ে বিচার করা হয় বিমানের তখন কী করা উচিত ছিল এবং বাস্তবে কী ঘটেছে। জানা গেছে, এটি ইতিহাসে সবচেয়ে কম উচ্চতা (৬৫০ ফুট) থেকে ডাবল ইঞ্জিন ফেলিওরের ঘটনা। তবে সম্পূর্ণ সত্য জানতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে।
শহীদ