
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতে এবার বন্দরনগরী হাইফাকে মূল টার্গেট করেছে ইরান। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এই গুরুত্বপূর্ণ শহরে চালানো হয়েছে শতাধিক মিসাইল ও ড্রোন হামলা, যাতে শহরের বিভিন্ন অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং প্রাণ হারিয়েছেন একাধিক ইসরায়েলি নাগরিক।
তবে প্রশ্ন উঠছে, তেলআবিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও কেন ইরান হাইফাকে এত গুরুত্ব দিয়ে টার্গেট করেছে?
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও গণমাধ্যমগুলোর মতে, সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে ইসরায়েলকে দুর্বল করে তোলাই তেহরানের লক্ষ্য। কারণ, হাইফা শুধু একটি শহর নয়, বরং এটি ইসরায়েলের কৌশলগত লাইফলাইন হিসেবে বিবেচিত।
১. তেল শোধনাগার:
হাইফাতে অবস্থিত ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার। এখান থেকেই দেশের জ্বালানি চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ করা হয়। সামরিক যানবাহন থেকে শুরু করে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ, সবকিছুতেই এই জ্বালানি অপরিহার্য। ফলে যেকোনো যুদ্ধ বা সংঘাতে প্রথমেই এই স্থাপনাগুলো টার্গেটে থাকে।
2. নৌঘাঁটি ও বন্দর:
হাইফা হচ্ছে ইসরায়েলের প্রধান গভীর সমুদ্র বন্দর এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটি। ইসরায়েলের মোট সামুদ্রিক বাণিজ্যের প্রায় অর্ধেক এই বন্দর দিয়েই পরিচালিত হয়। এখানে হামলা চালিয়ে ইরান শুধু ইসরায়েলের অর্থনীতিতেই নয়, তার সামরিক সরবরাহ ব্যবস্থাতেও চরম ধাক্কা দিতে চায়।
3. গ্যাস ফিল্ড ও রাসায়নিক শিল্প:
শহরটিতে রয়েছে বড় বড় গ্যাস ফিল্ড ও রাসায়নিক কারখানা, যা ইসরায়েলের জ্বালানি ও শিল্প খাতের অন্যতম চালিকা শক্তি। এই খাতগুলোতে হামলা চালানো মানে অর্থনৈতিকভাবে দেশটিকে বিপর্যস্ত করে দেওয়া।
বিশ্লেষকদের ধারণা, হাইফার মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ শহরে হামলা চালিয়ে ইরান বিশ্ব সম্প্রদায়কেও বার্তা দিতে চায়, এই সংঘাত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। এর মাধ্যমে বিশ্বশক্তিগুলোকে চাপ প্রয়োগ করে যুদ্ধবিরতির পথ তৈরি করাও তেহরানের উদ্দেশ্য হতে পারে।
ছামিয়া