ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

তেহরানে ১৮০ আরোহী নিয়ে ইউক্রেনের বিমান বিধ্বস্ত

বিমান বিধ্বস্ত ॥ যেদিকে সন্দেহের তীর

প্রকাশিত: ০৯:৩২, ৯ জানুয়ারি ২০২০

বিমান বিধ্বস্ত ॥ যেদিকে সন্দেহের তীর

ইরানের রাজধানী তেহরানে ১৮০ আরোহীসহ ইউক্রেনের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। বুধবার সকালে ইমাম খোমেনি বিমানবন্দর থেকে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আছড়ে পড়ে বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি। প্রাথমিক রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, বিমানটি তেহরান থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। বিমানটি যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। জরুরী সেবার প্রধান কর্মকর্তা বলেন, ‘বিমানটিতে আগুন ধরেছে। আমরা উদ্ধারকারীদের সেখানে পাঠিয়েছি। হয়ত কিছু যাত্রীর জীবন বাঁচাতে পারব।’ এএফপি। কয়েকদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় হত্যা করা হয় ইরানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সামরিক কমান্ডার কাশেম সোলাইমানিকে। এই হত্যাকাণ্ডের পর দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। কিন্তু গত অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে দুই দেশের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক। যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর গোটা ইরান জুড়ে চলছে শোকের মাতম। হামলার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া ইরান। সেই সূত্র ধরে আজ বুধবার ভোররাতে ইরাকে অবস্থিত দুইটি মার্কিন বিমান ঘাটিতে ১২টির বেশি ব্যালেস্টিক মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান। তবে এ হামলায় হতাহত হয় কি না তা এখনও নিশ্চিত করেনি কেউ। এই হামলা নিয়ে টুইটারে ট্রাম্প লেখেন, ‘অল ইজ ওয়েল’! ইরাকে অবস্থিত দুটি সামরিক ঘাঁটিতে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। এখন হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত যা হয়েছে খুব ভাল হয়েছে! বিশ্বের যে কোন জায়গায় আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী ও সুসজ্জিত সামরিক বাহিনী আছে! হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই আজ সকালে ইরানে ১৮০ জন যাত্রী নিয়ে ইউক্রেনগামী একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। এই উত্তেজনাকর মুহূর্তে হঠাৎ করে ইরানে বিমান বিধ্বস্ত হওয়া স্বাভাবিকভাবে দেখছে না বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকদের মতে, বিমান দুর্ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কোন সংশ্লিষ্টতা থাকতেও পারে। এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তারা বলছেন ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান সংঘাতের সঙ্গে এই বিমান দুর্ঘটনার কোনও সম্পর্ক আছে কি না সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। কারিগরি সমস্যার কারণে বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয় বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনের প্রতিবেদনে বলা হয়। খোমেনি বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে ইরানের জরুরী বিভাগের প্রধান পীর হোসেইন কৌলিভান্দ বলেছেন, ‘আগুন অত্যন্ত তীব্র হওয়ায় আমরা কোন উদ্ধার কাজ করতে পারিনি। আমাদের ২২টি এ্যাম্বুলেন্স, চারটি বাস এ্যাম্বুলেন্স ও একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনাস্থলে আছে।’ ইরানের বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার মুখপাত্র রেজা জাফরজাদেহি উড়োজাহাজটিতে ১৭০ জন যাত্রী ও ক্রু ছিল বলে জানিয়েছেন। এয়ার ট্র্যাকিং সার্ভিস ফ্লাইটরাডার টোয়েন্টিফোরের তথ্যানুযায়ী, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটি ফ্লাইট পিএস ৭৫২ এবং সেটি ইউক্রেইনের রাজধানী কিয়েভে যাচ্ছিল। তিন বছরের পুরনো এই উড়োজাহাজটি বোয়িং ৭৩৭-এনজি মডেলের ছিল বলে জানিয়েছে তারা। এ দুর্ঘটনার বিষয়ে তাদের কাছে এখনও কোন তথ্য নেই বলে এয়ারলাইন্সটির কিয়েভ কল সেন্টার থেকে রয়টার্সকে জানানো হয়েছে।
×